কূটনৈতিক সংবাদদাতা : সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। ট্র্যাভেল অ্যালার্ট থেকে এই সতর্কতার মাত্রা এখন উন্নীত হয়েছে ট্র্যাভেল ওয়ার্নিংয়ে। এদিকে বাংলাদেশে ভ্রমণে ফের সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাজ্য। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে সর্বশেষ এ সতর্কবার্তা আপডেট করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বরের পর থেকে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর একাধিকবার বাংলাদেশে ভ্রমণের বিষয়ে সতর্কতা জারি করে।
গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে একজন মুখপাত্র যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বাংলাদেশের ‘চলমান পরিস্থিতি’ এবং ‘উগ্রপন্থি সহিংসতার আশঙ্কার’ বিষয়ে সতর্ক করেন এবং এই সময়ে ঢাকায় আসার ‘ঝুঁকির’ কথা বলেন। ‘চলমান পরিস্থিতি’ শব্দটির ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে যে ট্র্যাভেল অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল, তা বাড়িয়ে এখন ট্র্যাভেল ওয়ার্নিং জারি করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কোনো দেশের ক্ষেত্রে ‘ট্র্যাভেল ওয়ার্নিং’ জারি করার অর্থ হল, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা যাবেন কি না- সে সিদ্ধান্ত ‘খুব সাবধানে’ নিতে হবে। কোনো দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বা গৃহযুদ্ধ চললে, উচ্চ অপরাধ প্রবণতা থাকলে কিংবা ঘন ঘন সন্ত্রাসী হামলার মত ঘটনা ঘটলে যুক্তরাষ্ট্র সে দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ‘ওয়ার্নিং’ জারি করে। অন্যদিকে ‘অ্যালার্ট’ একটি স্বল্পমেয়াদী সতর্কতা এবং যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, সংশ্লিষ্ট দেশ ভ্রমণের পরিকল্পনার ক্ষেত্রে তাদের নাগরিকরা বিষয়টি বিবেচনায় রাখবে। কোনো দেশে নির্বাচন সামনে রেখে নিয়মিত মিছিল, সমাবেশ, হরতালের মতো কর্মূসচি বা অস্থিরতা চললে; কোনো দেশের সোয়াইন ফ্লুর মত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে কিংবা সন্ত্রাসী হামলার বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হলেও যুক্তরাষ্ট্র ওই ‘অ্যালার্ট’ দিতে পারে।
আইএস এর জঙ্গিরা বাংলাদেশে গুলশানের ঘটনার মত আরও হামলা চালানোর যে হুমকি দিয়েছে- সে প্রসঙ্গে টেনে যুক্তরষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, আমাদের সরকার মনে করে, হুমকির ওই খবর সঠিক ও বিশ্বাসযোগ্য এবং বাংলাদেশে বিদেশিদের ওপর আরও হামলার ঘটনা ঘটতে পারে।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস তার নাগরিকদের কিশোরগঞ্জ জেলা বা এর আশপাশে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে।
বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মচারী বা তাদের পরিবারকে হেঁটে, বাইসাইকেল, রিকশা বা অন্য যেকোনো ধরনের উন্মুক্ত যানবাহনে চলাচল ও জনসমক্ষে বের হওয়া এবং বড় কোনো জনসমাগমে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশে ভ্রমণে ফের সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাজ্য। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে সর্বশেষ এ সতর্কবার্তা আপডেট করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে জারি করা সতর্কবার্তায় গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশে কর্মরত ব্রিটেনের নাগরিকদের সতর্ক থাকার এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজর রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া হোটেল, সম্মেলন কেন্দ্র, সুপার মার্কেট, রেস্তোরাঁ, ক্লাবসহ যেসব স্থানগুলো বিদেশিদের জমায়েতের জন্য পরিচিত, সেগুলো পরিহার করে চলতে বলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন