শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সন্ত্রাস দমনে আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

গুলশান হত্যাকান্ডে নিরাপত্তা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চরম উদ্বেগ জানিয়েছেন কূটনীতিকরা

প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বাংলাদেশ কাজ করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী। গত মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কূটনীতিকদের ব্রিফিং করার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা জানান। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় দেশী- বিদেশী নাগরিকদের জিম্মি করে হত্যার পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের জন্য এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় বিদেশী কূটনীতিকরা কূটনীতিকপাড়া এবং তাদের নিজস্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করে বলেন, সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের শিকড় খুঁজে বের করবে। নিরাপত্তা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫০ জন কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ঢাকাস্থ অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্রদূত এ  বৈঠকে অংশ নেন। এসময় তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে এই হামলার ঘটনায় সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং স্বীকার করেন  যে, পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশই আজ সন্ত্রাসের শিকার।
ডিন অব ডিপ্লোম্যাটিক কর্পস এবং মিসরের রাষ্ট্রদূত মাহমুদ ইয়াহিয়া মোহামেদ ইজ্জাত মোস্তফা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কয়েকজন রাষ্ট্রদূত তাদের নিজস্ব দূতাবাস স্টাফ এবং তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, কূটনীতিকপাড়া এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বান করেছি।
মিসরের রাষ্ট্রদূত বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত অহন সেওং-দু তার যেসব নাগরিক বাংলাদেশে ব্যবসা ও চাকরির সুবাদে অবস্থান করছেন তাদের নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাদের নিরাপত্তা চান।
ডি কে হং নামে যে কোরিয়ান নাগরিক হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর পাশে থাকতেন এবং গোটা ঘটনাটি ভিডিও করেছেন, তার নিরাপত্তার বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
গুলশান হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আর্মি  স্টেডিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও রাষ্ট্রদূতরা প্রশ্ন তোলেন।
ইজ্জাত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলে যাবার পর বিভিন্ন  দেশের রাষ্ট্রদূতরা তাদের শ্রদ্ধা জানানোর পর হঠাৎ করে গ্যালারির দর্শকরা লাফ দিয়ে মাঠে ঢুকে পড়ে এবং কয়েকজন রাষ্ট্রদূত এতে ভয় পেয়ে যান। তিনি বলেন, দর্শকরা মারমুখী ছিল না কিন্তু তারা  যেভাবে দৌড়ে আসছিল তাতে করে রাষ্ট্রদূতরা ভয় পেয়ে যান।
ইজ্জাত বলেন, বৈঠকে জার্মানির রাষ্ট্রদূত ঢাকা শহরে কয়েকটি জায়গা যেমন কয়েকটি রেস্টুরেন্ট বা সুপার মার্কেট যেখানে তার  দেশের নাগরিকরা যাতায়াত করেন সেগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে বলেন।
জার্মানির রাষ্ট্রদূত বিমানবন্দরের নিরাপত্তা এবং সেখানে তাদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ঝুঁকি সৃষ্টি হয় বলে জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, এখন সময় এসেছে সন্ত্রাসবাদ দমনে একসঙ্গে সবাইকে কাজ করার এবং এজন্য তারা সরকারকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে। ইজ্জাত বলেন, দুই থেকে তিন মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল এবং মার্শা সে বিষয়টি পুনরায় ব্যক্ত করেন। জাপানের রাষ্ট্রদূত এ ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে দুই দিনের  শোক দিবস ঘোষণার জন্য ধন্যবাদ জানান। বেঠকে ফ্রেঞ্চ, ইন্দোনেশিয়ান, কানাডিয়ান ও মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূত বক্তব্য রাখেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন