ইনকিলাব ডেস্ক : দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩১ ও আহত শতাধিক। এর মধ্যে ময়মনসিংহের ফুলপুরে একই পরিবারের ৬, সোনারগাঁয়ে মা-মেয়েসহ ৪, না’গঞ্জে ৪, সাতক্ষীরায় ২, শরীয়তপুরে ১, মাদারীপুরে ২, নাটোরে ৩, দৌলতপুরে ১, শ্রীপুরে ১, গোপালগঞ্জে ১, উড়িখায় ১, শ্রীপুরে, মানিকগঞ্জে ১ ও চৌদ্দগ্রামে ১ জন নিহত হয়েছে।
ফুলপুর উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর ইউনিয়নের মোকামিয়া গ্রামের একই পরিবারের ৬ জন নিহতের ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা যায়, ঢাকায় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর চাকুরি থেকে ঈদের ছুটিতে মঙ্গলবার মোকামিয়া গ্রামের আত্মীয়সহ একই পরিবারের ৯ জন একটি পিকআপ ভাড়া করে বাড়ি ফিরছিল। ময়মনসিংহের সদর উপজেলার বেলতলি পৌঁছলে পিছন থেকে অপর একটি গাড়ীর ধাক্কার পিকআপটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে উল্টে পড়ে। এতে মোকামিয়া গ্রামের খোকন মিয়া (৫০), স্ত্রী শামছুন্নাহার (৩০), ভাগিনা মোবারক হোসেন (২৮), স্ত্রী মিনারা খাতুন (২৫), আজিজুল হক (১৫), ভাগ্নে জামাই সাগর মিয়া (৩৫) মারা যান। এছাড়াও তাদের আরও ৩ জন গুরুতর আহত হন। রাতে নিহতদের লাশ বাড়ি পৌঁছলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এলকার রইস উদ্দিন জানান, নিহতরা সকলেই এলাকার অসহায় দরিদ্র পরিবারের সদস্য।
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় সিএনজি ও যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে মা-মেয়েসহ চারজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরো ১০ জন যাত্রী আহত হয়। খবর পেয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের (ওসি) শরিফুল আলম জানান, ঈদের দিন বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলা কাঁচপুর এলাকায় বন্দর এলাকা থেকে একটি সিএনজি কাঁচপুর যাওযার পথে কচুয়া থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহি বাস পিছন দিক থেকে সিএনজিকে ধাক্কা দেয়। এতে সিএনজিটিসহ বাসটি রাস্তার পাশে একটি খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে সিএনজির যাত্রী বন্দর উপজেলার সবিন্দ্র বর্মনের স্ত্রী বগবাত (৪৫) ও মেয়ে সামী (১৭) ও বাসের যাত্রী ঢাকা খিলখাঁও এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া (২৮) ও একই এলাকার ওমর আলীর ছেলে রুবেল(৩২) নিহত হয়। এসময় বাস ও সিএনজিতে থাকা আরো ১০ জন আহত হয়।
গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, গোপালগঞ্জে প্রইভেটকার ও ইজিবাইকের সংঘর্ষে ই¯্রাফিল সিকদার (৪৮) নামে এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৫ জন।
ঈদের ২ দিন আগে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার পোনা বাসস্ট্যান্ডে এ সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত ই¯্রাফিল সিকদার দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার আশুলিয়া প্রতিনিধি। তার বাড়ি খুলনা জেলার দীঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট মহেশদিয়া গ্রামে। তার পিতার নাম আবু সিকদার।
গোপালগঞ্জ জেলা জাসদের সভাপতি শেখ মাসুদুর রহমান মাসুদ জানান, ই¯্রাফিল সিকদার জাসদ যুব জোটের ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি।
কাশিয়ানী থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, ই¯্রাফিল গ্রামে ঈদ উৎসব পালন করতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রাউভেট কারে করে গ্রামের বাড়ি খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার মহিষদিয়া গ্রামে যাচ্ছিলেন। সকালে পোনা এলাকায় একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে পাশে থাকা ইজিবাইককে ধাক্কা দিয়ে প্রাইভেট কারটি রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। এতে ওই সাংবাদিক এবং তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ড্রাইভার আহত হন। এ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিলে চিকিৎসক ইসরাফিলকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা সংবাদদাতা ও সাতক্ষীরা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, সাতক্ষীরায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টার দিকে জেলার শ্যামনগর উপজেলার শ্যামনগর-সাতক্ষীরা সড়কের চন্ডিপুরের পরিবহনের ধাক্কায় হাফিজুর রহমান (২২) নামে এক নছিমন চালক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ওয়াজেদ আলী নামে আরও এক মুরগি ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। নিহত হাফিজুর একই উপজেলার খাগড়াদানা গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে।
শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শুধাংশ কুমার জানান, সকালে ব্যবসায়ী ওয়াজেদ আলী নলতা থেকে মুরগি নিয়ে নছিমনযোগে শ্যামনগর আসছিলেন। পথিমধ্যে চন্ডিপুর পৌছালে শ্যামনগরগামী মামুন পরিবহনের একটি কোচ তাদের পিছন দিক থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নছিমন চালক হাফিজুর নিহত হন। এছাড়া ব্যবসায়ী ওয়াজেদ আলীর দুইপা ভেঙে যায়। তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দেবহাটা উপজেলার হাদীপুরে বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন।
শরীয়তপুর সংবাদদাতা জানান, শরীয়তপুরের বুড়িরহাটে নসিমন উল্টে নিহত ১ ও ৫ জন আহত হয়েছে।
পালং মডেল থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টার দিকে শরীয়তপুরের বুড়িরহাট বেলী ব্রিজের ঢালে নসিমন উল্টে পথচারীসহ ৬ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত সাদিয়া (৫) হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ঘাতক নসিমনটিকে আটক করলেও চালক পালিয়ে গেছে। নিহত শিশু সাদিয়া ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের দাড়াইসকাঠি গ্রামের মানিক বেপারীর মেয়ে।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুরের কালকিনি ও শিবচরে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহতসহ ৪০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, মাদারীপুর থেকে কালকিনির ভুরঘাটাগামী লোকাল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কালকিনি উপজেলার ম্যালকাই নামক স্থানে পৌঁছলে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লাগে। এ সময় আহত হয় অন্তত ৪০ জন যাত্রী। তাদের উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ৫ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও ১ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক অবস্থা বলে জানিয়েছে চিকিৎসক। এদিকে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শিবচরের ঠাকুরবাজার এলাকায় মোটরসাইকেল চাপায় অজ্ঞাত এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বাস চাপায় আমিনুল ইসলাম সাকিল (২২) নামে এক যুবক যুবক নিহত হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার কল্যানপুরে যাত্রীবাহী ঢাকা কোচ ফাতেমা পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুষ্টিয়া হাসপাতালে সে মারা যায়। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ফিলিপনগর মন্ডলপাড়া গ্রামের আইনাল হকের ছেলে সাকিল কল্যানপুর এলাকায় একটি দোয়া মাহফিলে যাওয়ার সময় কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়কের কল্যানপুরে ফাতেমা পরিবহনের বাসটি তাকে চাপা দেয়। এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার ভোরে সে মারা যায়। তবে ঘাতক বাসটিকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় অভিযোগ হয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, শরীয়তপুরের বুড়িরহাটে নসিমন উল্টে নিহত হয়েছে ১ জন ও আহত হয়েছে ৫ জন।
পালং মডেল থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০ টার দিকে শরীয়তপুরের বুড়িরহাট বেলী ব্রিজের ঢালে নসিমন উল্টে পথচারীসহ ৬ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত সাদিয়া (৫) হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ঘাতক নসিমনটিকে আটক করলেও চালক পালিয়ে গেছে। নিহত শিশু সাদিয়া ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের দাড়াইসকাঠি গ্রামের মানিক বেপারীর মেয়ে।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।
শ্রীপুর উপজেলা সংবাদদাতা জানান,গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় হাসান মোল্লা (৩৫) নামে এক লেগুনা চালকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের এমসি বাজার এলাকার এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শ্রীপুরের নয়নপুর গ্রামের শহীদ মোল্লার ছেলে। মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকাগামী বনশ্রী পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে বিপরীতমুখী একটি লেগুনার সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই হাসানের মৃত্যু হয়। তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে একটি যাত্রীবাহী বাস ও অটোরিকসা উল্টে খাদে পড়ে ২ জন নারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ১০ জন। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার কাঁচপুর আলনূর ষ্টিল মিলের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) তৈয়বুর রহমান জানান। তবে নিহতদের তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় জানা যায়নি। নিহতদের লাশ কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় রাখা হয়েছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান টিআই তৈয়বুর।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার নোয়াখালী থেকে মায়ের দোয়া পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা আসছিল। বাসটি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সোনারগাঁওয়ে কাঁচপুর আলনূর ষ্টিল মিলের পাশে পৌঁছলে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় এবং অটোরিকশাটিসহ বাসটি পাশের খাদে পড়ে ৫/৬ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা এসে চারটি লাশ উদ্ধার করে এবং ক্রেন দিয়ে বাস ও অটোরিকশাটি উদ্ধার করে। বাস ও অটোরিকশা দুমড়েমুচড়ে গেছে। নিহত ৪ জনের মধ্যে ২ জন নারী ও ২ জন পুরুষ। তবে নিহতরা কোন যানবাহনের যাত্রী তা নিশ্চিত করতে পারেননি হাইওয়ে পুলিশ। এছাড়া তাদের পরিচয়ও জানা যায়নি।
মানিকগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, মানিকগঞ্জে ট্রাক ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই চালক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত২০ জন। শনিবার রাত একটার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
গোলড়া হাইওয়ে পুলিশ জানায়, গাবতলি থেকে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে থেকে আগত সবজী বোঝাই একটি ট্টাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুটি পরিবহনেরই সামনের অংশ দুমরে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন ট্রাক ও বাসের দুই চালক। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। এদের মধ্যে ১৯ জনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় এক নারী এবং এক শিশুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেপার্ড করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর প্রায় এক ঘন্টা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
উখিয়া উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজারের উখিয়ার উপকূলীয় ইউনিয়ন জালিয়াপালং এর ইনানী সি-বীচে মা-বাবার সাথে বেড়াতে এসে বেপরোয়া বীচ বাইকের ধাক্কায় প্রাণ হারাল শিশু পর্যটক মিজান (১০)। সে রামু পেঁচারদ্বীপ এলাকার সালেহ আহমদের ছেলে।
গণমাধ্যমকর্মী জাহাঙ্গীর আলম জানান, অদক্ষ ও অযোগ্য চালকদের বীচের বাইক গুলো ভাড়া দিয়ে থাকে কতিপয় স্বার্থনেষী কোম্পানী নামধারীরা। যার ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় বেড়াতে আসা পর্যটকদের। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যু হয় শিশু মিজানের। তিনি আরো বলেন, মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার আল ফুয়াদ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে মনোয়ারা বেগম নামের এক যাত্রী নিহত ও অপর ১৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরশান্নী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মনোয়ারা ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী।
মিয়াবাজার হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ সার্জেন্ট শফিকুল আজম জানান, ‘নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী বাস মহাসড়কের মিরশান্নী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে ১৬ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার শেষে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মনোয়ারা বেগমকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাটোর জেলা সংবাদদাতা : নাটোরের বড়াইগ্রামে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় বিগত ইউপি নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাত্রলীগ নেতাসহ তিনজন নিহত ও আরো ১৮ জন আহত হয়েছেন। বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের রেজুর মোড় ও পাশর্^বর্তী মানিকপুরে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। বড়াইগ্রাম থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াবাজার থেকে নাটোরগামী দ্রুতগতির একটি প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো গ ২২-৩৫৪৭) রেজুর মোড় এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ ঘটনায় প্রাইভেট কারের যাত্রী জেলার গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিগত ইউপি নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলার খাকড়াদহ গ্রামের মৃত আব্দুল আহাদ মন্ডল ওরফে হাদার ছেলে মন্ডল মেহেদী হাসান (২৮) এবং চালক একই গ্রামের মৃত আনসার আলীর ছেলে শাহাবউদ্দিন (৩০) ঘটনাস্থলেই নিহত ও তার তিন বন্ধু গুরুতর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে, শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে একই মহাসড়কের মানিকপুরে নাটোর থেকে সিরাজগঞ্জগামী যাত্রীবাহী বাস পদ্মা পরিবহণ (রাজ মেট্রো জ ১১-০১০২) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের উপর উল্টে যায়। এ ঘটনায় বাসের যাত্রী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার আলিয়াপুর গ্রামের ইদ্রিস মন্ডলের ছেলে জালাল উদ্দিন মন্ডল (৫০) ঘটনাস্থলেই নিহত ও আরো ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের রেজুর মোড়ে মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত ও কমপক্ষে ৪২ জন আহত হয়েছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন