শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম : উজানের পাহাড়ী ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে তিস্তা ও ধরলা নদীসহ শাখা নদীরগুলোর। ফলে চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর ও সদর উপজেলার শতাধিক চর ও দ্বীপচর প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী, চর ও দ্বীপচর এলাকার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। হাতে কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছে এসব এলাকার শ্রমজীবী মানুষজন। ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর হাট সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র তীরের বাসিন্দা আবেদ আলী জানান, চারদিকে পানি ঘর হতে বের হবার কোন উপায় নেই। কাজও করতে পারছি না। ছেলেমেয়ে নিয়ে খুব বিপদে আছি।
চিলমারী উপজেলার পত্রখাতা ইউনিয়নের ঝরণা বেগম জানান, ঘরের ভিতর পানি ঢুকে পড়েছে। কোন রকমে চেয়ারের উপর চুলা নিয়ে রান্নাবান্না করে খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসে নি। কোন রিলিফও পাই নি।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আইয়ুব আলী জানান, আমার ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা ব্রহ্মপুত্রের চর। চরাঞ্চলের সবগুলো ঘরবাড়ীতে পানি ঢুকে পড়েছে। বন্যাকবলিত মানুষ আমার কাছে সাহায্য চাইতে আসে। কিন্তু সরকারীভাবে এখনও কোন ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় তাদের দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমি আশা করি জরুরি ভিত্তিতে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হোক।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগে বন্যাকবলিত এলাকাসহ সকল ইউনিয়নে রিলিফের চাল দেয়া হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য এখনো কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে নুনখাওয়া পয়েন্টে দুধকুমারের পানি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন