ইনকিলাব ডেস্ক
ইরাক হামলায় যুক্তরাজ্যের যোগ দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়েছে। জোরেশোরে আলোচনা শুরু হয়েছে, তবে কি ফেঁসে যাচ্ছেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। তাঁকে কি বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে? জানা যাচ্ছে, টনি ব্লেয়ারের বিচার দাবিতে পার্লামেন্টেও প্রস্তাব আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
‘চিলকট রিপোর্ট’ নামের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে এবং বিস্তারিত পরিস্থিতি অনুধাবন ছাড়াই ইরাকে হামলা চালানোর ঘটনা ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করেছে। সেই সঙ্গে ইরাকসহ ওই অঞ্চলের দেশগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি সঙ্কট তৈরি করেছে। যুক্তরাজ্য ভবিষ্যতে কোনো দেশে হামলা কিংবা বড় ধরনের যুদ্ধে লিপ্ত হতে গেলে এই প্রতিবেদনের প্রাপ্তিগুলো বড় শিক্ষা হয়ে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইরাকে হামলায় যুক্তরাজ্যের যৌক্তিকতা অনুসন্ধান ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার সরকারের ভূমিকা তদন্তে স্যার জন চিলকটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ২০০৯ সালে গঠিত ওই কমিটি দীর্ঘ সাত বছর পর তাদের ঐতিহাসিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। স্যার জন চিলকটের নাম অনুসারেই এ প্রতিবেদনকে ‘চিলকট রিপোর্ট’ বলা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন ইরাকের তৎকালীন শাসক সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে, সাদ্দাম ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত গড়ে তুলেছেন এবং সাদ্দাম হোসেন বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ইরাকে হামলার উদ্যোগ নেয় বুশ সরকার। যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও একই দোহাই দিয়ে ইরাকে হামলা চালাতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অনুমোদন নেন। শুরু থেকেই এই হামলার বিরোধিতায় ফুঁসে ওঠে যুক্তরাজ্যের মানুষ। যার পরিণতিতে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বিদায় নিতে হয় ব্লেয়ারকে। ইরাক যুদ্ধে ১৭৯ জন ব্রিটিশ সৈন্য নিহত হয়। সরকারের ব্যয় হয় প্রায় ১০ বিলিয়ন পাউন্ড। এই যুদ্ধে প্রায় দেড় লাখ ইরাকি নিহত হয় এবং ১০ লাখের বেশি ইরাকি বাস্তুহারা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন