শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানীমুখী লঞ্চ ও বাসে পা রাখারও জায়গা নেই হাত গুটিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি

প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : স্মরণকালের দীর্ঘতম সরকারী ছুটি শেষে কর্মস্থলমুখী মানুষের ঢল নেমেছে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবক’টি নদী বন্দরসহ বাস টার্মিনালগুলোতে। বরিশাল নদী বন্দরের টার্মিনালে পা ফেলার উপায় নেই।
প্রতিটি বেসরকারী নৌযানই লোয়ার ডেক থেকে ছাদ পর্যন্তই যাত্রী বোঝাই। পটুয়াখালী, ভোলা ও পিরোজপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীবন্দর এবং লঞ্চঘাটগুলোর চিত্রও প্রায় একই। তবে এরই মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত নৌ-বাণিজ্য সংস্থা বিআইডব্লিউটিসি ঈদের দিন ও পরের দিন অপ্রয়োজনীয়ভাবে যাত্রী বিহীন কথিত ঈদ স্পেশাল সার্ভিস পরিচালনা করে গতকাল থেকেই তা হাত গুটিয়েছে। অথচ আগামী শনিবার পর্যন্ত বরিশাল-ঢাকা নৌপথে রুট পারমিটধারী সবক’টি বেসরকারী নৌযানই ডবল ট্রিপে যাত্রী পরিবহন করবে বলে জানা গেছে। বেসরকারী এসব নৌযান প্রতিদিন ডবল ট্রিপে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে বরিশাল নদীবন্দর ত্যাগ করলেও সরকারী নৌ-বাণিজ্য সংস্থাটি অতীতের ধারাবাহিকতায় কর্মস্থলমুখী যাত্রী পরিবহন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিল।
বরিশাল বিমান বন্দরও যাত্রীতে ঠাঁসা। সরকারী-বেসরকারী প্রতিটি উড়ান চলছে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে। ক্রু সীট থেকে জ্যাম সিটেও যাত্রী বহন করছে বরিশাল সেক্টরের এয়ারলাইন্সগুলো। এমনকি বেসরকারী এয়ারলাইন্সগুলো ঈদের আগে-পরে বরিশাল সেক্টরে বিশেষ ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন করলেও নির্বিকার রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা। বৃহস্পতিবার ঈদ-উল-ফিতর উদযাপিত হলেও বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলমুখী কর্মজীবী জনস্রোত শুরু হয়েছে গত শনিবার থেকে। যা আগামী শনিবার পর্যন্তই অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছে বেসরকারী নৌযান মালিকগণ। ফলে পুরো সপ্তাহ জুড়েই বরিশাল-ঢাকা নৌপথে রুট পারমিটধারী ১৪টি বেসরকারী নৌযানের ১৩টিই প্রতিদিন ডবল ট্রিপে যাত্রী পরিবহন করবে। এমনকি যাত্রী ভিড়ের কারণে এসব নৌযান নির্ধারিত সময়ের এক থেকে ২ঘন্টা আগেই বরিশাল বন্দর ত্যাগ করছে। বরিশাল থেকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রওয়ানা হয়ে ভোর ৪টার মধ্যেই বেসরকারী নৌযানগুলো ঢাকায় পৌঁছে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে সকাল ৫টার মধ্যেই যাত্রীবিহীন অবস্থায় বরিশালের উদ্দেশে রওয়ানা দিচ্ছে। দুপুর ১২টা থেকে ২টার মধ্যে এসব নৌযান বরিশাল বন্দরে নোঙর ফেলছে। আবার যাত্রী বোঝাই করে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। এভাবেই দিন-রাত বেসরকারী নৌযানগুলো বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের পৌঁছে দিচ্ছে ঢাকায়।
কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত বিআইডব্লিউটিসি ঈদের আগের চেয়ে পরের দিনগুলোতেই চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে যাত্রী পরিবহনে। সংস্থাটি ঈদের দিন ও পরের দিনও নিয়মিত রকেট স্টিমারের সাথে আরো একটি বিশেষ স্টিমার যাত্রী বিহীন অবস্থায় বরিশাল থেকে চাঁদপুর হয়ে ঢাকায় পাঠায়। কিন্তু গত শনিবার থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত কর্মস্থলমুখী মানুষের ভিড়ের সময়টিতেই হাত গুটাচ্ছে সংস্থাটি। এবারো সংস্থাটির যাত্রী সেবা (?) ইউনিট ঈদ ফেরত কর্মস্থলমুখী মানুষের নিরাপদ যাত্রায় কোন ভূমিকাই রাখতে পারছে না বলে মনে করছেন সাধারণ যাত্রীগণ।
তবে সংস্থাটি ফেরি সেক্টরগুলোতে রেকর্ড সংখ্যক যানবাহন পারাপার অব্যাহত রেখেছে। গতকাল দেশের প্রধান দুটি ফেরি সেক্টরসহ সব সেক্টরে বিআইডব্লিউটিসি প্রায় ১১ হাজার যানবাহন পারাপার করেছে। যা সর্বকালের রেকর্ড।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন