রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

নতুন করোনা প্রতিষেধক দিয়ে ১৫ মার্কিন রোগীর জীবন রক্ষা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২০, ৫:০৯ পিএম

ডেভিস মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জর্জ থম্পসন (বাঁয়ে) ও জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটসের সহকারী সার্জন জেনারেল রিচার্ড চাইল্ডস (ডানে)।


যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষ চিকিৎসক জানিয়েছেন যে, একটি পরীক্ষামূলক ওষুধের মাধ্যমে করোনভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। মোট ১৫ গুরুতর রোগীর উপরে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে এবং প্রত্যেকেই সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানা গেছে।

করোনায় আক্রান্ত এক মার্কিন মহিলার উপরে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রতিষেধক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। ওই মহিলার শরীরে গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৬ তারিখে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। তার অবস্থা ছিল গুরুতর। এই প্রতিষেধকের গবেষণা দলে ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিস মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জর্জ থম্পসন। গত শুক্রবার এক বিজ্ঞান ম্যাগাজিনে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি জানান, ‘আমরা ভেবেছিলাম তিনি মারা যাবেন, তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি।’

ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করার ৩৬ ঘন্টা পরে, ডাক্তাররা তাকে রেমডেসিভির দিয়ে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই ওষুধ ‘আইভি’ বা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সরাসরি রক্তে প্রবেশ করানো হয়। এটি শরীরে থাকা ‘আরএনএ পলিমেরাজ’ নামের একটি এনজাইম বিকল করে দেয়। অনেক ভাইরাস নিজেদের অনুলিপি তৈরি করতে এই এনজাইম ব্যবহার করে।

রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার কারণে চিকিৎসকরা কোন ক্লিনিকাল ট্রায়াল ছাড়াই এই প্রতিষেধক ব্যবহারের জন্য এফডিএর কাছ থেকে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ ব্যবহারের অনুমতি পেতে সক্ষম হন। এটি প্রয়োগের পরে একদিনের মধ্যেই মহিলাটির শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ কমতে থাকে ও তার অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। গোপনীয়তার কারণে রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ানো হয়েছে কিনা তা প্রকাশ করেননি ডাক্তার থম্পসন, তবে তিনি জানিয়েছেন যে, রোগী ভাল আছেন।

একইভাবে, ডায়মন্ড প্রিন্সেস ক্রুজ জাহাজে থাকা ১৪ যাত্রী, যাদের শরীরে করোনভাইরাস ধরা পড়েছিল, তাদরে উপরেও এই ‘রেমডেসিভির’ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এ বিষয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটসের সহকারী সার্জন জেনারেল এবং ফুসফুসের বিশেষজ্ঞ রিচার্ড চাইল্ডস শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছেন যে, জাপানের একটি হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে এই ওষুধ দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা করা হয়েছিল। তিনি জানান, রোগীদের সবাই খুব গুরুতর অসুস্থ ছিলেন এবং তাদের গড় বয়স ছিল ৭৫ বছর। তাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই অল্প সময়ের মধ্যেই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু, এই ওষুধ প্রয়োগের দু’সপ্তাহ পরে দেখা গেল কেউ মারা যায় নি এবং তাদের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এটা একেবারে আশ্চর্যজনক ঘটনা বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তবে, উভয় ডাক্তারই স্বীকার করেছেন যে, ‘রেমডেসিভির’র ক্ষেত্রে আরও পরীক্ষা করা দরকার। এ বিষয়ে থম্পসন বলেন, ‘ওষুধটির কারণে নির্দিষ্ট কিছু রোগীর লিভারে বিষক্রিয়া হতে পারে এবং অন্যান্য সংস্থাগুলোও আরও কিছু পরীক্ষামূলক ওষুধ নিয়ে এগিয়ে আসছে যা বেশি কার্যকর হতে পারে।’ অন্যদিকে, ডাক্তার চাইল্ডস ‘রেমডেসিভির’ সম্পর্কে বলেন, ‘ড্রাগের কোন ক্ষতিকর প্রভাব আছে কী না, তা নির্ধারণ করতে আমাদের কিছুটা সময় লাগবে।’

যাই হোক, মার্কিন জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটস-এর তথ্য অনুসারে, ‘রেমডেসিভির’ সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নির্ধারিত কিছু হাসপাতালে ভর্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রাপ্ত বয়স্ক রোগীদের উপরে ‘নিয়ন্ত্রিত ক্লিনিকাল ট্রায়াল’ শুরু করেছে ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা। সূত্র: ডেইলি মেইল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Sabuj ১৬ মার্চ, ২০২০, ৮:৪৬ এএম says : 0
Alhamdulillah
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন