শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতীয় অর্থনীতিতে করোনার প্রভাবে অশনি সঙ্কেত

জিডিপির পূর্বাভাস প্রকাশ মুডিজ-এর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাসের প্রকোপে এমনিতেই ধসের মুখে অর্থনীতি। প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে শেয়ারবাজারে ধস নামছে বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কার জেরে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার যে কমবে তা একপ্রকার জানাই ছিল। আর সেই বিষয়ের ওপরই রিপোর্ট পেশ করল মার্কিন ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিজ।

বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে আগের পূর্বাভাস থেকে ফের ভারতের জিডিপিতে কাটছাঁট করল মুডিজ। এর আগে এক রিপোর্ট পেশ করে মুডিজ জানিয়েছিল, ২০২০ সালে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.৪ শতাংশ থাকবে। তবে সেই হারকে কমিয়ে ৫.৩ শতাংশ করা হয়েছে মুডিজের নতুন রিপোর্টে।

করোনার ধাক্কায় বিধ্বস্ত গোটা বিশ্ব। তার প্রভাব ভারতেও পড়েছে। এখনও পর্যন্ত ভারতে মোট ১৩৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শেয়ারহবাজারে প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড হারে পতন হচ্ছে সেনসেক্স ও নিফটির। ব্যবসা বাণিজ্য একপ্রকার শিথিল হয়ে গেছে। পর্যটন খাত পুরোপুরি বন্ধ, বিমান শিল্পও প্রায় বন্ধের মুখে। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে প্রয়োজনীয় বুস্ট নেই।

অবশ্য শুধু ভারত নয়, করোনা দাপটে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। আমেরিকাসহ একাধিক দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার কেিময়ছে মুডিজ। চীনের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪.৮ শতাংশ করেছে। অন্যদিকে আমেরিকার আর্থিক বৃদ্ধির হার ১.৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১.৫ শতাংশ করা হয়েছে।

অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলের অর্থনীতি রীতিমতো ঝুঁকির মুখে পড়েছে করোনাভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়ায়। পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি এই ভাইরাসের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন দেশের আমদানি রফতানিও। এর জেরে এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিস্তর। যদি আগামী কয়েক সপ্তাহে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া মহামারী তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধস নামবে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের। সূত্র : ওয়ান ইন্ডিয়া।

ছয় মাসের মধ্যে আর্থিক বিপর্যয় আসছে : রাহুল
আগামী ছয় মাসের মধ্যে দেশে আর্থিক বিপর্যয় আসতে চলেছে। গতকাল এভাবেই দেশবাসীকে সতর্ক করলেন কংগ্রেস সংসদ সদস্য রাহুল গান্ধী।

তিনি বলেছেন, এখন থেকেই মানুষ সতর্ক না হলে সেই বিপর্যয়ের বেদনা অসহনীয় হবে। করোনাভাইরাসকে সুনামি বিপর্যয় আখ্যা দিয়ে তিনি একটা গল্প বলেন।
তিনি বলেন, ‘সুনামি আসার আগে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপে পানির স্তর বেড়ে গিয়েছিল। হাতের সামনেই মাছ ও অন্য সামুদ্রিক প্রাণী পাওয়া যাবে ভেবে অনেক মানুষ দলে দলে তটে ভিড় করেছিলেন। তারপরেই সুনামির জলোচ্ছ¡াসে সব ভেসে গিয়েছিল। করোনাভাইরাস সেই সুনামির মতোই’। ‘আমি সরকারকে সতর্ক করছি। ওরা বোকা বানাচ্ছে। বিপর্যয় প্রতিরোধে কী দাওয়াই দিতে হবে, ওরা জানে না,’ এদিন এভাবেও মোদি সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন রাহুল গান্ধী।

তার পরামর্শ, ‘শুধু কোভিড-১৯ বিপর্যয় সামাল দেয়া না, আর্থিক বিপর্যয় রোধেও ভারতকে প্রস্তুত হতে হবে। আগামী দিনে ভয়াবহ দিন আসছে। সেই ভয়াবহতার বেদনা অসহনীয় হবে। আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি।’ করোনা সংক্রমণ রোধে ভারত সরকার ব্যর্থ, এমন অভিযোগ তুলে গত সপ্তাহে টুইট করেছিলেন এই কংগ্রেস সংসদ সদস্য।

তিনি লিখেছিলেন, আমি আবার বলছি, করোনাভাইরাস সংক্রমণ এখন দেশের কাছে বড় সমস্যা। সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া কোনও সমাধান না। এখনই পদক্ষেপ না নিলে প্রভাবিত হবে ভারতীয় অর্থনীতি। দিশাহীন পথে হাঁটছে কেন্দ্র সরকার। তিনি করোনা সংক্রমণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে লিখেছিলেন, দেশ দুর্ঘটনার দিকে এগোচ্ছে, আর প্রধানমন্ত্রী সেই চাকার ওপর শুয়ে আছেন।

এদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১১০ ছাড়িয়েছে। মৃত ৩। দিল্লি, কর্নাটকের পর গতকাল মুম্বাইতে এক প্রবীণের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তিনি সেই শহরের কস্তুরবা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এই সংক্রমণের জেরে প্রভাবিত বিশ্ব বাজার। দু’দশকের বিচারে তলানিতে অপরিশোধিত তেলের দাম। সূত্র : এনডিটিভি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন