শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

করোনা মহামারী হ্রাসে আত্মবিশ্বাসী চীন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান গত ৭ সপ্তাহ যাবত অবরুদ্ধ রাখার পর নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহসাই নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করতে অধীরভাবে অপেক্ষা করছে চীন। গত সপ্তাহে প্রকাশিত সাময়িকীতে এই তথ্য দেয় দ্য ইকোনমিস্ট। হুবেই থেকেই সমগ্র চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। লকডাউনের পর প্রথমবারের মতো গত ১০ মার্চ দেশটির নেতা শি জিনপিং হুবেইয়ের রাজধানী উহান সফর করেন।

তিনি সেখানকার একটি সেনা পরিচালিত হাসপাতালে রোগীদের সাথে ভিডিওলিংকের মাধ্যমে কথা বলেন। উহানের নাগরিকরা, যাদের বেশিরভাগের ওপর বাড়িতে অবস্থান করার আদেশ রয়েছে, তারা কীভাবে কোয়ারেন্টাইন মোকাবেলা করছে, তা দেখতে শি জিনপিং সেখানকার একটি আবাসিক অঞ্চলও পরিদর্শন করেন। তিনি জানান যে, ভাইরাসটির বিস্তার প্রাথমিকভাবে রোধ করা হয়েছে। করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে চীনের সরকারি পরিসংখ্যান আক্ষরিক অর্থেই উৎসাহব্যঞ্জক। প্রেসিডেন্ট শি’র ভ্রমণের দিনটিতে চীনে মাত্র ১৯টি নতুন সংক্রমণ নথিবদ্ধ করা হয়, যা গেল ফেব্রুয়ারির সর্বোচ্চ মাত্রার হাজার হাজার সংক্রমণের তুলনায় বহু নিচে। চীনে সংক্রমিত ৮০ হাজারের মধ্যে ৩ চতুর্থাংশ সুস্থ হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। উহানের কর্মকর্তারা সরকারি ভবনে স্পোর্টস সেন্টার এবং প্রদর্শনী হলগুলির অস্থায়ী ওয়ার্ড বন্ধ করে দিয়েছেন। হুবেইয়ের কম ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের স্থানীয় সরকার বলেছে, জনগণ কাজে ফিরে যেতে পারে এই আশায় তারা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে শুরু করেছে। এখন যে দেশগুলিতে সংক্রমণ বাড়ছে সেখান থেকে আসা যাত্রীদের সংক্রমণের জীবাণু বয়ে না আনার বিষয়টি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে চীন। গত ১১ মার্চ বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা ঘোষণা দেয় যে, বিমানবন্দরগুলিতে বিদেশ থেকে রাজধানীতে আসা যাত্রীদের অত্যাবশ্যকীয়ভাবে ১৪ দিনের সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে কাটাতে হবে।

মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চীনের ক্রমবর্ধমান আত্মবিশ্বাস তার প্রচারে স্পষ্ট। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দেশের সঙ্কট মোকাবেলায় সরকারের দক্ষতা সম্পর্কে ইতিবাচক প্রচার বাড়িয়ে চলেছে। তাদের সম্পাদকীয়গুলি প্রসিডেন্ট শি’র উহান সফর উপলক্ষে চীনের ভাইরাস নিরোধ ব্যবস্থাপনায় সাফল্যের কথা ঘোষণা করতে শুরু করেছে, যার আওতায় কয়েক লাখ মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল এবং তারা সেই কৃতিত্ব চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে দিচ্ছে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, যারা এই সঙ্কটকে দেশের রাজনীনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে ব্যবহার করে তারা নীতিহীন এবং ঘৃণ্য।

যেসময় চীন করোনা মাহামারীকে পরাজিত করার ব্যাপারে অবিচল, সেসময় কিছু দেশ কেবলমাত্র করোনার সংক্রমণ হ্রাস করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। যদিও করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ সাফল্য ঘোষণা দেয়ার সঠিক সময়টি বেছে নেয়া প্রেসিডেন্ট শি’র জন্য কঠিন হয়ে যেতে পারে। মানুষ ধীরে ধীরে কাজে ফিরে আসার সাথে সাথে আবারও ভাইরাসটি আরও ব্যাপকভাবে চীনে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এতে দেশটিকে পুনরায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। উহান সফরকালে প্রেসিডেন্ট শি সতর্ক ছিলেন যেন তার কথায় বিজয়ীভাব প্রকাশ না পায়। তিনি বলেন, ‘কঠোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে হুবেই ও উহানের মহামারী দমনে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্র্বতীকালীন সাফল্য অর্জিত হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা কার্যক্রমে ঢিল দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

তবে, এই খবর চীনের উহান এবং অন্যান্য অনেক অঞ্চলের বাসিন্দাদের কানে মধু বর্ষণ করবে না। কারণ সেখানে নির্মম কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে মহামারীটি নিয়ন্ত্রণে আসলেও এর জন্য তাদের চরম মূল্য দিতে হয়েছে; বিশেষ করে সেসব ফার্ম এবং অধিবাসীদের যাদের মহামারীর প্রকোপ ছাড়াও চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন রয়েছে। সূত্র : দ্য ইকোনমিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
অমিত কুমার ১৮ মার্চ, ২০২০, ৩:০৭ এএম says : 0
ওরা পারবে এটা আমার বিশ্বাস
Total Reply(0)
লোকমান ১৮ মার্চ, ২০২০, ৩:০৭ এএম says : 0
সারা বিশ্ব যেন এটা হ্রাস করতে পারে সেই কামনাই করছি
Total Reply(0)
জহির ১৮ মার্চ, ২০২০, ৩:০৯ এএম says : 0
তাদের জন্য শুভ কামনা রইলো
Total Reply(0)
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন শাহিন ১৮ মার্চ, ২০২০, ১০:৩৬ এএম says : 0
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছেচীনারা সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করে এবং হাসপাতালগুলোতে ডাক্তাররা তাদের জীবন দিয়ে সাধারণ মানুষকে সেবা দেবার চেষ্টা করে এটা শুধুমাত্র চায়নাদের বেলায় সম্ভব হয়েছে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন