স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর আদাবর থানার উপপরিদর্শক রতন কুমারসহ অপর দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেছেন আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
গতকাল সোমবার ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সালেহ উদ্দিন আহম্মদ আদালতে আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী এ অভিযোগ করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় অভিযোগ বলা হয়, বাদিনী গত ৩১ জানুয়ারি বেলা আড়াইটায় আশা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শেষে শ্যামলী রিং রোড থেকে রিকশাযোগে মিরপুর থানাধীন শিয়া মসজিদের দিকে যাওয়ার সময় জাপান গার্ডেন সিটির পাশে রিকশার গতিরোধ করে।
ওই সময় আদাবর থানার এসআই রতন কুমারসহ ৩ পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রতন কুমার বাদিনীর ভ্যানিটিব্যাগে ২০০ পিস ইয়াবা আছে বলে রিকশা থেকে নামায়। একপর্যায়ে আসামিরা পাশের জাপান গার্ডেন সিটির সুইটের ইলেকট্রনিকস দোকানে বাদিনীকে জোর করে ঢোকায়। এরপর আসামি রতন কুমার বাদিনীর গায়ের জ্যাকেট এবং ব্যাগ তল্লাশি করে। ব্যাগে কোনো ইয়াবা না পাওয়ার পর দোকান মালিককে বের করে দিয়ে বাদিনীর শরীরে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়।
উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনি শংকরসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন এক নারী। ওই মামলাটিও বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ হয়ে তদন্তাধীন আছে। বাদিনীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আবু আলা মো: হাসানুজ্জামান হেলালী মামলা পরিচালনা করেন।
পরে ছাত্রী রতনকে বলেন, স্থানীয় লোকদের সামনে তার ব্যাগ তল্লাশি করতে হবে এবং প্রয়োজনে থানায় যাওয়ার কথা বলেন তিনি। কিন্তু তার এ প্রস্তাবে রাজি হননি রতন। এসময় রতন গর্ব করে তাকে বলেন, ‘আমার কাছে ওসি, ডিসি কিছুই না, কারো কাছে নালিশ করেও কোনো লাভ নেই।’
ওই ছাত্রী ছাড়া পেলেও এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর ওই ইলেকট্রিকের দোকানদারকে দিয়ে ফোন করান রতন। তাকে বলা হয়, ‘পরে ফোন করলে যেখানে আসতে বলব সেখানে চলে আসবেন।’ আপনি কি আবাসিক হোটেলে যান ইত্যাদিসহ আপত্তিকর কথা জিজ্ঞাসা করেন। ছাত্রী আরো বলেন, রতন বলে মিডিয়া গিয়ে কি করবেন। ব্যাংক কর্মকর্তা রাব্বির কথা আপনার মনে নেই। সে কি করতে পারছে। আপনিও আমার কিছুই করতে পারবেন না।
সজিব নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে রিকশা থেকে নামিয়ে অপমান-অপদস্ত করে একটি দোকানের ভেতরে নিয়ে যায়। এরপর দোকানের গেট বন্ধ করে তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। তিনি বলেন, তার স্বামী যদি অপরাধী হয়েও থাকেন, তার জন্য তো তাকে রাস্তায় রিকশা থেকে নামিয়ে অপদস্ত করার কোনো বিধান নেই।
এ ব্যাপারে এসআই রতন বলেন, ছাত্রীকে রিক্শা থেকে নামিয়ে তল্লাশি করা হয়নি। তাকে আমি চিনি। তিনি আমার পূর্বপরিচিত। আদাবরের যুবদল নেতা রানার স্ত্রী। তাকে রিকশায় দেখে বলি আপনার স্বামী ভুল ঠিকানা দিয়েছেন। তিনি এখন কোথায় থাকেন। তার সঠিক ঠিকানাটা চেয়েছি মাত্র। আর অন্য কোথাও তাকে ডাকার বিষয়টিও অস্বীকার করেন এসআই রতন।
অপরদিকে ফারহানার স্বামী বলেন, ঘটনার পর তিনি স্ত্রীসহ মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছেন, এসআই রতন তাদের থানার কর্মকর্তা নয়। পরে বাধ্য হয়ে গতকাল আদালতে মামলা করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন