স্টাফ রিপোর্টার : গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত ২০ জিম্মির মধ্যে অবিন্তা কবিরসহ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে ভারী অস্ত্রের আঘাতে। রাত ১২টার আগেই জিম্মিদের এবং পরদিন সকাল ৭টার পর জঙ্গিদের মৃত্যু হয়েছে। ৬ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে গুলিতে। এদের মধ্যে তিনজনের শরীরে বোমার স্পিøন্টারও মিলেছে। গতকাল বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
গুলশান থানা পুলিশের তত্ত্বাবধানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিহতদের লাশের ময়না তদন্তকারি ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গিরা ২০ জন জিম্মিকে হত্যা করে। এদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক অবিন্তা কবীরকে ভারি অস্ত্রের আঘাতে এবং সাতজনকে হত্যার আগে গুলি করা হয়। নিহত অবিন্তা কবীরসহ দু’জন ব্যতীত আর সকলের গলা কাটা ছিল।
তিনি বলেন, গুলশানের ওই ঘটনায় নিহত ৬ জঙ্গি ও ২০ জিম্মির ময়না তদন্ত করা হয়েছে। ২০ জিম্মির মধ্যে ৭ জনের দেহে আটটি গুলি পাওয়া গেছে। তবে নিহত অবিন্তা কবীরসহ অপর এক জিম্মির মৃত্যু হয়েছে ভারি অস্ত্রের আঘাতে। তাদের গলা কাটা হয়নি। আর বাকিদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে জিম্মিদের মৃত্যু রাত ১২টার আগে হয়েছে। আর জঙ্গিদের মৃত্যু হয় সকাল ৭টার পর। নিহত সব জঙ্গির শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। আর তিনজনের শরীরে বোমার স্পিøন্টারের আঘাত পাওয়া গেছে। বোমার কারণে কয়েক জঙ্গির হাত ও পা উড়ে গেছে। নিহত ২৬ জনের মাসল টিস্যু ও চুল থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে ময়না তদন্ত রিপোর্ট দেয়া যাবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেছেন।
ডা. সোহেল মাহমুদ আরো বলেন, মাত্র ৬ জন জঙ্গি কীভাবে ২০ জন জিম্মিকে হত্যা করলো? হত্যার পূর্বে তারা শক্তিবর্ধক কোনো ড্রাগস নিয়েছে কি না জানতে আদালতের নির্দেশে তাদের ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই দিবাগত রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে। এরপর রাতের মধ্যেই তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জিম্মিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে তারা। পরের দিন সকালে বিশেষ অভিযানে ৬ জঙ্গি নিহত হয়। এ রেস্টুরেন্টে জিম্মিদের উদ্ধারে অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান নিহত হন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন