বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মীরসরাইয়ে ওয়ার্ডবয়কে হাসপাতাল চেয়ারম্যানের অমানবিক নির্যাতন

প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মীরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ মীরসরাই উপজেলার বারইয়াহাট পৌর এলাকার কমফোর্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান তেল চুরির অভিযোগে এক ওয়ার্ডবয়কে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ এই কর্মচারীকে তিনি লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে চাকরি থেকেও বিতাড়িত করে। শুধু তাই নয়, কোথাও বিচার চাইলে প্রাণনাশের হুমকীও দেয় বলে জানায় ওই কর্মচারী। কিন্তু ওয়ার্ডবয় জানায়, সে চুরি করেনি। মিথ্যে অভিযোগে এই অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয় সে। তবে হাসপাতালের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, বিষয়টি আমরা জেনেছি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
জানা গেছে, গত ২ বছর ধরে বারইয়াহাটের কমফোর্ট হাসপাতালে চাকরি করতো কালাম (২৬) নামের এক যুবক। সে ফুলগাজী থানার কৃষক মাহবুবুল হকের পুত্র। দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে বাঁচতে কাজের সন্ধানে ওয়ার্ড বয়ের চাকরি নিয়েছিল। জেনারেটরের তেল চুরির অভিযোগে হাসপাতালের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বেদম নির্যাতন করার পর গুরুতর আহত এই শ্রমিক বাড়ী গিয়ে কিছুটা সুস্থ হবার পর গতকাল (১৬ জুলাই) মীরসরাইতে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে উক্ত অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছে।
আহত কালাম জানায়, দুই সপ্তাহ আগে গত ২ জুলাই পেটের দায়ে জীবনে প্রথম চাকরি করতে গেলাম বারইয়াহাটের কমফোর্ট হাসপাতালে। বেতন অতি সামান্য হলেও সবার সাথে ভালভাবে কাটছিল। অনেক পরিশ্রম করতে হতো প্রতিদিন। বাজারে যেতাম প্রায় ১০০ বার। যে যা বলতো তাই শুনতাম। হঠাৎ একদিন দুপুর বেলায় চেয়ারম্যান নিজাম তার অফিসে ডেকে নিয়ে জানতে চান রাতে বিদ্যুৎ কতবার গিয়েছিল। আমি বললাম সারা রাত। তারপর তেল কত লিটার এনেছি প্রশ্ন করলে বলি ৬০ লিটার। বিষয়টি যাচাই করার জন্য তিনি নিজে তেলের দোকানে গেলো, ওরা বলেন আমাদের মেমোতে ভুল হয়েছে, তেল ৬০ লিটারই দেয়া হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করলেন না। হাসপাতালে এসে আমাকে প্রচ- মারলেন। লোহার রড আর একের পর এক লাঠি ভাংলেন তিনি। এরপর আমি জ্ঞান হারালাম। জ্ঞান ফেরার পর বললাম আর চাকরি করবো না। চলে গেলাম বাড়ি। যাবার সময় এই বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী দেন তিনি। নির্যাতিত কালামের আর্তি এই অমানবিকতার কি কোন বিচার আমি পাবো না ? তাও মিথ্যা অপবাদে এমন নির্যাতন ?
এই বিষয়ে অভিযুক্ত নিজাম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছেলেটি কিছুদিন ধরেই তেল চুরি করছিল। তাকে এভাবে অমানবিকভাবে মারা কি ঠিক হয়েছেÑ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি মারার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন মারলেও তাকে ঔষধের জন্য ২ হাজার টাকা দিয়েছি।
এই বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদুল কবির জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি, তবে নির্যাতিত শ্রমিক থানায় কোন প্রকার অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন