শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে সন্তু লারমার সহযোগিতা চান : ইনু

প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রায় দুই দশক আগে করা পার্বত্য শান্তিচুক্তির অবাস্তবায়িত অংশ বাস্তবায়নে জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার (সন্তু লারমা) সহযোগিতা চাইলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। গতকাল শনিবার দুপুরে সেগুনাবিগচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক আলোচনা সভায় এ সহযোগিতা চান তিনি।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তিচুক্তির শর্ত অনুযায়ী ১৯৯৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেই মন্ত্রণালয়ের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের আয়োজনেই অনুষ্ঠিত হয় এই বিশেষ আলোচনা সভা।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসানুল হক ইনু বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আমাদের সমতল ভূমির মানুষের ধারণা অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রতুল। তাই এই অঞ্চলের মানুষের পক্ষে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। আমি সন্তু লারমার প্রতি আহ্বান জানাব চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়নে আপনি আমাদের আরেকটু সহযোগিতা করেন। এ ছাড়া ওই এলাকার সংসদ সদস্য ও অন্য জনপ্রতিনিধিরাও এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রও চিহ্নিত করেন হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, বনাঞ্চলের ব্যবস্থাপনা করা, প্রাণিসম্পদ সংরক্ষণ, পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন করতে হবে। এ ছাড়া পরিবেশের ক্ষতি না হয় সেদিকে যেন লক্ষ্য রাখতে হবে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সেখানে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প সম্প্রসারণ, সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ, শিক্ষা ও নারীর উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে কাজ করতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বির বিক্রম কিশোর ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামাল উদ্দিন তালুকদার।
এদিকে গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম- মুক্তিযুদ্ধ ৭১ আয়োজিত জঙ্গিবাদবিরোধী জাতীয় সংলাপে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্ক না রাখলে অনেক আগেই জঙ্গি নির্মূল করা যেত।
হাসানুল হক ইনু বলেন, জঙ্গিদের সম্পর্ক পরিহার না করে বেগম খালেদা জিয়া বারবার পরীক্ষায় ফেল করছেন। জঙ্গিদের পক্ষ নিয়ে এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে বেগম জিয়া এই ফেলের ধারা বজায় রেখেছেন। বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্ক না রাখলে অনেক আগেই জঙ্গি নির্মূল করতাম।
তিনি বলেন, সরকার জঙ্গি উৎপাত প্রসঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা ও লেনদেনের মধ্যে নেই। আমরা এদের ধ্বংস করে দেব। শেখ হাসিনার সরকার সমূলে জঙ্গি নির্মূল ও ধ্বংস করার নীতিতে বিশ্বাসী। এর সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা ও লেনদেনের সম্পর্ক নেই।
জঙ্গি প্রসঙ্গে বেগম খালেদা জিয়া ও ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে নির্বাচিত সরকার এবং আইনের শাসন ও গণতন্ত্র নেই, এ কারণে জঙ্গি উৎপাত হচ্ছে এমন সরল বক্তব্য দেওয়া যাবে না। বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলেও সন্ত্রাস এবং জঙ্গি তৎপরতা ছিল। তিনি বলেন, আমাদের সরকার শক্ত আছে। সরকারের মেরুদন্ড সোজা আছে। কোনো হুমকি-ধমকিতে কাজ হবে না। আমরা জঙ্গি দমনের নামে রাজনৈতিক দল দমন করছি না। তাই এখনো অনেকে আছেন।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম- মুক্তিযুদ্ধ ৭১ এর সহসভাপতি লে. জেনারেল (অব.) হারুন অর রশিদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আনোয়ার হোসেন, প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব হারুন হাবীব প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন নূরুল আলম।
এছাড়াও গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাসদ আয়োজিত এক মানববন্ধনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বক্তব্য দেন।
মানববন্ধনে জাসদ সভাপতি বলেন, শোলাকিয়া ও গুলশানের হত্যাকা-ের ঘটনা প্রমাণ করে, জঙ্গিরা মানুষ নয়, দানব। নারী, শিশু, বৃদ্ধ, ধর্মীয় নেতাদের হত্যা করে তারা নিজেদের ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে। তারা হাজার বছরের ইসলামী রীতিনীতিকেও ধ্বংস করতে চায়।
হাসানুল হক ইনু বলেন, জঙ্গি নির্মূলে বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু আমরা জঙ্গি দমনে সক্ষমতা দেখাচ্ছি। মীর হোসেন আকতারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন শাহ জিকরুল আহমেদ, নাদের চৌধুরী, নাইমুল আহসান জুয়েল, ওবায়দুর রহমান চুন্নু প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন