বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঝিনাইদহের আস্তানায় পরিচয় গোপন করে থাকা আরো এক জঙ্গির সন্ধান

প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহের আস্তানায় পরিচয় গোপন করে থাকা আরো এক জঙ্গির সন্ধান মিলেছে। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত আবির রহমানও গুলশান হামলায় নিহত নিবরাসের সঙ্গে সেখানে এক মাস ছিলেন। তিনি নিবরাস ইসলামের খালাতো ভাই পরিচয় দিয়ে থাকতেন। জঙ্গি আবিরের ছবি দেখে শনিবার ওই মেসের কাজের বুয়া ও এলাকার যুবকরা এ তথ্য জানান। সোনালীপাড়ার বাসিন্দারাও জানিয়েছেন আবির রহমানকে তারা নিবরাস ওরফে সাঈদের সাথে দেখেছেন। এই নিয়ে ঝিনাইদহ জঙ্গি আস্তানায় থাকা ৮ জনের মধ্যে দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেল। বাকী ৬ জন কারা তা এখনো রহস্যময়। পরিবারের দাবি অনুযায়ী, আবির রহমান (২২) চার মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তবে তাঁর নিখোঁজ থাকার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে রাজধানীর ভাটারা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয় ৬ জুলাই। এর পরদিন ফেসবুক ও গণমাধ্যমে ছবি দেখে স্বজনেরা জানতে পারেন, শোলাকিয়ায় নিহত হয়েছেন আবির। ঝিনাইদহ শহরে হামদহ এলাকার সোনালীপাড়ার ওই জঙ্গি আস্তানার পাশেই রয়েছে খেলার মাঠ। সোনালীপাড়ার তরুণদের সঙ্গে ফুটবল খেলায় অংশ নিতেন সাঈদ নামধারী নিবরাস ইসলাম। ওই মাঠে খেলতেন এমন কয়েকজন স্থানীয় তরুণকে আবিরের ছবি দেখালে তারা তাকে নিবরাস ইসলামের খালাতো ভাই বলে শনাক্ত করেন। ছবি দেখে তাদের ভাষ্য এটা তো ‘সাঈদ ভাইয়ের খালাতো ভাই’! জঙ্গিদের ভাড়া করা ওই বাড়িতে রান্নার কাজ করতেন যে নারী, তিনিও আবিরের ছবি দেখে শনাক্ত করেছেন। এর আগে বাড়ির মালিকের স্ত্রী বিলকিস নাহার, গৃহকর্মী ও ফুটবল খেলার সাথিরা ছবি দেখে নিবরাসকে শনাক্ত করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার তরুণরা জানান, এই ছবি সাঈদ ওরফে নিবরাসের খালাতো ভাই আবিরের। তিনি সবার সঙ্গে মিশতেন না, ফুটবলও খেলতেন না। মাঠের পাশে বসে সময় কাটাতেন। মাঝে-মধ্যে মাঠের পাশে ছোট জায়গায় বাচ্চাদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতেন। ওই দুই স্থানীয় তরুণ বলেন, ‘ওই ভাইয়ের নাম কী জিজ্ঞাসা করলে জবাব দেয়ার আগেই সাঈদ ভাই বলতেন, এটা আমার খালাতো ভাই।’ তাঁরা বলেন, আবিরের চলাফেরা কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ ছিল। কেমন যেন হেলেদুলে হাঁটতেন। আর সাঈদ (নিবরাস) ভাই সব সময় কালো মিশ্রিত জামা কাপড় পরতেন। আবিরদের মেসে তিন বেলা রান্না করা কাজের বুয়া জানান, ‘সাঈদ ভাই (নিবরাস) আর ছবির এই ভাই (আবির) একই রুমে থাকতেন। তাঁরা বেশির ভাগ সময় ঘরেই সময় কাটাতেন।’ তিনি বলেন, সাঈদ ওরফে নিবরাস মাঝে মাঝে মোটরসাইকেলে চেপে বাইরে যেতেন, তবে আবিরকে বাইরে যেতে তিনি দেখেননি। আবির কবে মেস ছেড়ে গেছেন, তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। সোনালীপাড়ার ওই বাড়ির মালিক সাবেক সেনাসদস্য কওছার আলী। কলেজপড়ুয়া দুই ছেলেসহ তাঁকে এবং পাশের মসজিদের ইমাম মো. রোকনুজ্জামান ও সহকারী ইমাম সাব্বির হোসেনকে ৬ জুলাই ভোর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। সেনা সদস্যের স্ত্রীর দাবী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ে গেছে। তবে পুলিশ ও র‌্যাব বরাবরই তাদের আটকের কথা অস্বীকার করে আসছে। অভিযোগ উঠেছে, সোনালী পাড়ার দারুস সালাম মসজিদের ইমাম ছিলেন রোকনুজ্জামান। তিনি নিবরাজসহ আটজনকে স্থানীয় কাউসার আলীর বাড়ির মেসে তোলেন। তিনি আগে থেকেই হয়তো নিবরাসদের পরিচয় জানতেন। রোকন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের নাইড়া গ্রামের মৃত আইনুদ্দিনের ছেলে। ঝিনাইদহে থেকে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন। তবে তিনি বাড়ির সাথে যোগাযোগ রাখতেন কম।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন