করোনা মহামারী মোকাবিলায় ভারতজুড়ে লকডাউনের কারণে দেশটির স্বর্ণের বাজারেও মন্দা দেখা দিয়েছে। চলতি বছরে ভারতে স্বর্ণের বিক্রি গত বছরের তুলনায় অর্থেকে নেমে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বর্ণ বিশেষজ্ঞরা। দেশটিতে স্বর্ণের চাহিদা বিগত ৩ দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছাতে শুরু করেছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বর্ণ ক্রেতাদের চাহিদা কমে যাওয়ায় ধাতুটির বৈশ্বিক মূল্য বৃদ্ধির হিড়িকেও ভাটা পড়েছে। এ মাসের শুরুর দিকেও স্বর্ণের মূল্য বিগত ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। কিন্তু ভারতের ঐতিহ্যবাহী মূল উৎসবগুলিতে এবং বিবাহের মওসুমে দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে জনসমাগম নিষিদ্ধ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ায় এবং জুয়েলারি দোকানগুলো বন্ধ থাকায় স্বর্ণের বাজারে মন্দা শুরু হয়।
অল ইন্ডিয়া ডমেস্টিক জেম ও জুয়েলারি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এন অনন্ত পদ্মানাবন রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা কখনো এভাবে চাহিদা লোপ পেতে দেখিনি। লকডাউনে বিক্রি শূন্য।’ তিনি বলেন, ২০২০ সালে ভারতে স্বর্ণের ব্যবহার ৩৫০ টন থেকে ৪০০ টন পর্যন্ত কমে যেতে পারে, যা ১৯৯১ সালের পরে সর্বনিম্ন এবং ২০১৯ সালে ছিল ৬৯৪.৪ টনেরও কম। ভারতের ধীরগতির অর্থনীতি, চাকরিচ্যুতি ও বেতন কাটার মধ্যে চলাকালীন লকডাউন তুলে নেয়ার পরও চাহিদা দেশটির গহনা শিল্পে এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে যেতে পারে।
ইন্ডিয়া বুলিয়ন অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সুরেন্দ্র মেহতা জানান, ‘গ্রাহকরা বাড়তি আয় দিয়ে স্বর্ণ কেনাকাটা করেন, যা এই অসংগঠিত খাতে যুক্ত কয়েক মিলিয়ন লোকের জন্য হ্রাস পেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘লকডাউনের পর লোকে প্রথমে প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার চেষ্টা করবে এবং শেষে তারা স্বর্ণের মতো বিলাসবহুল পণ্য সম্পর্কে চিন্তা করবে।’
পশ্চিম মহারাষ্ট্রের জুয়েলার মঙ্গেশ দেবী বলেন, ‘স্বর্ণের দাম ২০১৯ সালে বিশ^ব্যাপী ২৫ শতাংশ বাড়ার পর ভারতের স্থানীয় স্বর্ণের দাম চলতি বছরে এ পর্যন্ত আরও ২০ শতাংশ বেড়ে লাখ লাখ গ্রামীণ ভারতীয়দের জন্য স্বর্ণকে দামি করে তুলেছে।’
এদিকে, স্বর্ণ কেনার চাহিদা কমে যাওয়ায় ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি সঙ্কুচিত হতে পারে এবং রুপির সরবরাহ ও দামে ভারসাম্য আসতে পারে বলে আশা করছেন অনেকে। তবে, করোনা মহামারীর কারণে এ বছর ভারতে বিগত ৪ দশকে মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে বলে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন