স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শহিদুল ইসলাম খান। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ইসরায়েলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোম্যাসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির প্রধান মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর বৈঠকের খবর ৯ মে প্রকাশিত হয় ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম। এরপর বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমেও মেন্দির সঙ্গে মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর বৈঠক-সংক্রান্ত বেশ কিছু ছবি ও সংবাদ প্রকাশিত হয়। খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সরকার সমর্থিত রাজনীতিতে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গত ১৫ মে আসলাম চৌধুরীকে আটক করা হয়। পরে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়। পরদিন ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয় পুলিশ। গুলশান থানায় করা ওই মামলায় আসলাম চৌধুরী নিন্ম আদালতে জামিনের আবেদন জানালে ২৩ জুন তা নাকচ হয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে আসলাম চৌধুরী হাইকোর্টে আসেন। গতকাল শুনানির জন্য আসলে আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন আদালত।
তিন দিনের রিমান্ডে
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ‘সরকার উৎখাতের’ ষড়যন্ত্রের মামলায় গ্রেফতার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে চট্টগ্রামের একটি নাশকতার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
গতকাল (সোমবার) মহানগর হাকিম হারুন অর রশিদ এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী বলেন, কোতোয়ালি থানার এ নাশকতার মামলায় পুলিশ সাত দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করেছিল। বিচারক শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এর আগে গত ১১ জুলাই আসলাম চৌধুরীকে একই মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডের অনুমতি চাইলে মহানগর হাকিম জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর নগরীর কোতোয়ালি থানার সিনেমা প্যালেস এলাকায় যানবাহন লক্ষ করে পেট্রোল বোমা ও ককটেল ছুড়ে মারে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এতে এক রিকশাচালক আহত হন। এ ঘটনায় আসলাম চৌধুরীসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলাটি করা হয়। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নাশকতার ইন্ধন ও অর্থদাতাদের মধ্যে আসলাম চৌধুরী অন্যতম বলে দাবি পুলিশের। ওই সব ঘটনায় দায়েরকৃত প্রায় সব মামলাতেই তিনি আসামি।
চলতি বছর ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে একটি ছবি গণমাধ্যমে আসার পর তা নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত ১৫ মে ঢাকায় গ্রেফতার হন তিনি। তার বিরুদ্ধে মোসাদের সাথে গোপন ষড়যন্ত্র করে সরকার উৎখাত প্রচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়। এরপর সোয়া তিনশ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি মামলাসহ অন্তত ১৫টি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন