শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রানা প্লাজা ধস হত্যা মামলার বিচার শুরু

প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কোর্ট রিপোর্টার : ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। একইসঙ্গে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল ঢাকার জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস.এম কুদ্দুস জামান এ আদেশ দেন। আদেশে পলাতক সাত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এর ফলে তিন বছর পর এ অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
এ বিষয়ে আদালতের পিপি খন্দকার আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের জানান, আসামিদের মধ্যে ৩৮ জনকে হত্যা এবং বাকিদের অন্যান্য ধারায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের আগে ভবন মালিক সোহেল রানাসহ কারাবন্দী সাত আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া জামিনে থাকা ২৭ আসামি আদালতে হাজির হয়। পরে উপস্থিত মোট ৩৪ আসামি বিচারকের প্রশ্নের জবাবে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে সুবিচার প্রার্থনা করেন।
এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাস স্ট্যন্ড সংলগ্ন আট তলা রানা প্লাজা ভেঙে পড়ে। ওই ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৩৫ জন, আহত হন আরো হাজার খানেক শ্রমিক। পরে ভবন ধসে প্রাণহানির ঘটনায় প্রথমে ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে একটি মামলা করেন সাভার থানার এসআই ওয়ালী আশরাফ। রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ ২১ জনকে এজাহারে আসামি করা হয়। তবে তদন্ত শেষে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে ৪১ জনকে আসামি করে তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত মৃত্যুর ঘটানোসহ দ-বিধির ৩০২, ৩২৬, ৩২৫, ৩৩৭, ৩৩৮, ৪২৭, ৪৬৫, ৪৭১, ২১২, ১১৪, ১০৯, ৩৪ ধারায় বিভিন্ন অভিযোগ আনেন। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর গতবছর ১ জুন ওই অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, রানা প্লাজায় ফাটল ধরার পর ঝুঁকি জেনেও শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। কাজ না করলে চাকরি চ্যুতির হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে প্রমাণ পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। এটা আসলে ‘ঠান্ডা মাথায় হত্যা’। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে পাঁচজন সরকারি কর্মকর্তার ক্ষেত্রে মঞ্জুরি আদেশ না থাকায় একাধিকবার শুনানি পেছানো হয়। পরে ওই অনুমোদন ছাড়াই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালত গত ২১ ডিসেম্বর পলাতক আসামিদের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
মামলার আসামিরা হলেন- ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক, মা মর্জিনা বেগম, রেফাত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলী খান, রফিকুল ইসলাম, রাকিবুল হাসান রাসেল, বজলুস সামাদ আদনান, মাহমুদুর রহমান তাপস, আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, মো, সারোয়ার কামাল, উত্তম কুমার রায়, অনিল দাস, শাহ আলম, আবুল হাসান, মোহাম্মদ আলী খান ও রাকিবুল হাসান।
এছাড়া সাভার পৌরসভার সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, পৌর নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সাবেক উপপ্রধান পরিদর্শক মো. আব্দুস সামাদ, উপপ্রধান পরিদর্শক (সাধারণ, ঢাকা বিভাগ) মো. জামশেদুর রহমান, উপপ্রধান পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগের পরিদর্শক (প্রকৌশল) মো. ইউসুফ আলী, ঢাকা বিভাগের পরিদর্শক (প্রকৌশল) মো. সহিদুল ইসলাম, রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মো. আওলাদ হোসেন, ইতার টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস, মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, মনোয়ার হোসেন বিপ্লব, মো. আতাউর রহমান, মো. আব্দুস সালাম, বিদ্যুৎ মিয়া, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনি, রেজাউল ইসলাম, নান্টু কন্ট্রাক্টর, মো. আব্দুল হামিদ, আব্দুল মজিদ, মো. আমিনুল ইসলাম, নয়ন মিয়া, মো. ইউসুফ আলী ও তসলিম এ মামলার আসামি। এদের মধ্যে আব্দুস সামাদ, জামশেদুর রহমান, বেলায়েত হোসেন, ইউসুফ আলী ও সহিদুল ইসলাম সরকারি কর্মকর্তা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন