মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

স্বাভাবিক জীবনে ফিরলে ১০ লাখ টাকার প্রণোদনা : র‌্যাবের ডিজি

প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বগুড়ার দুর্গম চরে বিশাল যৌথ বাহিনীর অভিযান
মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩টি চাপাতি, ৩টি ছোরা, ১টি কালো ব্যাগ, ১ কয়েল ইলেক্ট্রিক তার ও ৬টি জেহাদী বই উদ্ধার এবং র‌্যাবের ডিজির প্রেস ব্রিফিং-এর মাধ্যমে বগুড়া ও জামালপুরের দুর্গম চরাঞ্চলে সমাপ্ত হলো প্রায় ৪শ’ র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত বিশাল যৌথ বাহিনীর অভিযান। অভিযানের সমাপনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ব্রিফিংকালে র‌্যাবের ডিজি বেনজীর আহম্মেদ জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ক্ষেত্রে ১০ লাখ টাকার আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
এর আগে রোববার দিবাগত মাঝরাত থেকে র‌্যাব-এর কমান্ডিং অফিসার অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (পুলিশ)-এর নেতৃত্বে সাড়ে ৪শ’ র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্য সারিয়াকান্দি ও জামালপুরের দুর্গম চরাঞ্চলে জেএমবি ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। অন্যদিকে র‌্যাব ১২-এর বগুড়া ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার মেজর মাহবুবের অনুরূপসংখ্যক র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের টার্গেটগুলোতে অভিযান আরম্ভ করে। দুটি অভিযানে যৌথবাহিনীর অন্তত শতাধিক যানবাহন ব্যবহৃত হয়। সোমবার সকাল থেকেই বিভিন্ন অনলাইন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় এই যৌথ অভিযানের খবর প্রচারিত হয়। বেলা ১০টায় বগুড়া র‌্যাব ক্যাম্পের বগুড়া থেকে সাংবাদিকদের নিয়ে যাওয়া হয় সারিয়াকান্দির চর কাজলার দক্ষিণ টেংরাপুরা আদর্শ গ্রাম স্কুল ময়দানে। সাংবাদিকদের জানানো হয় ঢাকা থেকে র‌্যাবের ডিজি এসে যৌথ অভিযান সম্পর্কে ব্রিফিং করবেন। ফলে মিডিয়া কর্মীদের মনে ধারণা জন্মে যে দুর্গম চরাঞ্চলে জঙ্গিদের ঘাঁটিতে বড় ধরনের অভিযানের সাফল্যের কোনো নিউজ স্টোরি তারা কাভার করার সুযোগ তারা পাবেন। তবে বিকেল ৪টায় ব্রিফিংকালে জানানো হয় রাতে অভিযানকালে চর ঘাগুয়া গ্রামে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩টি চাপাতি, ৩টি ছুরি, ১টি কালো ব্যাগ, ১ কয়েল ইলেক্ট্রিক তার ও ৬টি জেহাদী বই পাওয়া গেছে।
এই ব্রিফিং অনুষ্ঠানে র‌্যাবের ডিজি বেনজির আহম্মেদ বলেন, জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ আছে, যদি জঙ্গিদের কেউ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে এবং স্লিপার টিমের সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য দিতে পারে তাহলে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আইনত গত ১০ লাখ টাকার আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হবে। এছাড়াও কেউ যদি জঙ্গিদের তৎপরতা বা ঘাঁটি সম্পর্কে তথ্য জানায় তাহলে তাদেরকেও ৫ লাখ টাকা দেয়া হবে। এছাড়াও এসব ব্যাপারে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হবে।
এর আগে দুপুর সোয়া ১২টায় ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের সোনাহাটা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অভিযানকারী যৌথ বাহিনীর পক্ষে হ্যান্ড মাইকে সাধারণ মানুষের উদ্দেশে র‌্যাব-৫-এর সিও লে: কর্নেল মাহবুব আলমও র‌্যাব ডিজির বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি করেন। একই স্থানে দুপুর ২টায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অভিযান বিষয়ে ব্রিফিং দেন তিনি। ব্রিফিংকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, র‌্যাব-১২ মেজর মোসাদ্দেক, র‌্যাব-৫ মেজর মুঞ্জুর মোর্শেদ, র‌্যাব-১৩ মেজর মাহবুব, বগুড়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান।
আইন-শৃংখলা বাহিনীর একাধিক সূত্রে জানা যায়, মূলত গোয়েন্দা তথ্য এবং সম্প্রতি ধৃত একাধিক জঙ্গির দেয়া তথ্য অনুযায়ী এই অভিযানটি পরিচালিত হয়েছে। তবে দৃশ্যত এই অভিযানে কেউ গ্রেফতার না হলেও বা তেমন কোনো আর্মস অ্যামুনেশন উদ্ধার বা জঙ্গি ঘাঁটি শনাক্ত না হলেও দুর্গম চরে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের কাছে একটি পরিষ্কার মেসেজ গিয়েছে যে আইন-শৃংখলা বাহিনী যে কোনো সময় পূর্ণ শক্তি নিয়ে তাদের ‘দোর গোড়ায়’ পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে। পাশাপাশি জঙ্গি সন্ত্রাসীরাও বুঝতে পারবে দুর্গম এলাকাও এখন আর তাদের নির্ভয় পদচারণের অভয়ারণ্য হতে পারে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন