শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

জঙ্গিদের জামিন ঠেকাতে সেল গঠনের কথা জানালেন এটর্নি জেনারেল

প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জঙ্গিদের জামিন ঠেকাতে এটর্নি জেনারেল অফিস ও পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসকে তথ্য দিতে কো-অর্ডিনেশন সেল গঠনের গুরুত্ব দিলেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, ‘যারা জঙ্গি, কম্পিউটারে তাদের নাম থাকা উচিত এবং সেই কম্পিউটার প্রত্যেক জেলায় যারা পিপি আছেন, তারা যাতে বোতাম টিপলেই সেসব নাম পান এরকম ব্যবস্থাও থাকা উচিত।’ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
এটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমার অফিসেও এটা থাকা উচিত, যাতে করে বোতাম টিপলেই আমি কোন জেলায় সন্ত্রাসী মামলায় কে কে আছে এবং তাদের জামিন কখন হয়েছে বা তাদের জামিন আবেদন কখন করা হয়েছে, এটা জানতে পারি।’ এ ধরনের সেল শুধু থাকলেই হবে না, তাদের সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কথাও বলেন এটর্নি জেনারেল।
তিনি বলেন, ‘একটা সেল থাকা দরকার। শুধুমাত্র তাদের (জঙ্গি) ব্যাপারে পর্যালোচনা করার জন্য। আর সেই সেলকে শুধু ঘরে বসে থাকলে হবে না, তাদের অনবরত যোগাযোগ করতে হবে পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসের সাথে, এটর্নি জেনারেলের অফিসের সাথে।’ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই জঙ্গিরা নানারকম চালাকির সুযোগ নিচ্ছে। দরখাস্তে লিখছে ১৭ নম্বর কোর্টে মুভ করবে। কিন্তু মুভ করছে ১৩ নম্বর কোর্টে। আমার ওই অফিস, ওই কোর্ট ওটা জানতে পারে না। যদি এটা ট্র্যাকিং করতে থাকে কোন কোর্টে কোন মামলা নিয়ে মুভ করল এবং সঙ্গে সঙ্গে যদি আমাকে জানানো হয়, আমরা অথবা আমার সহকর্মীরা তাতে প্রবলভাবে বাধা দিতে পারি।’
জঙ্গিদের জামিনের ক্ষেত্রে এজাহার ও চার্জশিটে দুর্বলতা যেন না থাকে সে কথাও বলেন এটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, ‘আর সবচেয়ে বড় কথা জঙ্গিদের ব্যাপারে যখন এজাহার করা হয়, সেটা যদি ঠিকমতো করা না হয়, তাদের কাছ থেকে কী কী আলামত পাচ্ছে সেটা যদি সঠিকভাবে না উল্লেখ করা হয়, অথবা চার্জশিট যদি ঠিকমতো না দেয়া হয়, তাহলে তার ফাঁকফোকরেই তারা জামিনের সুযোগ নিচ্ছে।’
সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশের কথা উল্লেখ করে এটর্নি জেনারেল বলেন, ‘চার্জশিট যাতে ঠিকমতো হয়, এফআইআর যাতে ঠিকমতো হয়, আলামত যাতে ঠিকমতো করা হয় এটা একটা জিনিস। দুই নম্বর একটি কো-অর্ডিনেটর সেল থাকা দরকার, যারা পিপি অফিস ও আমার অফিসের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো ইনফরমেশন টেকনোলজিকে এখানে এপ্লিকেবল করা, যাতে জঙ্গিদের নাম ও তারা কোন থানার আসামি; এগুলো যাতে কম্পিউটারের বোতাম টিপলেই পেতে পারি। চতুর্থত তারা কোন আদালতে কখন গিয়ে মুভ করছে সেটা নখদর্পণে রাখা, যাতে আমরা সেগুলো ঠিকমতো অপোজ করতে পারি।’ জঙ্গি মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। আইনের প্রক্রিয়া শেষ করে দ- কার্যকর করতে গিয়েই এমনটি হচ্ছে বলে জানালেন এটর্নি জেনারেল।
তিনি বলেন, ‘মূল আদালত যদি তাদের মৃত্যুদ- প্রদানও করেন তা কার্যকর হয় না, যদি হাইকোর্ট সেটাকে কনফার্ম না করে বা বহাল না রাখে। পঞ্চম সংশোধনীর প্রেক্ষিতে এখন মৃত্যুদ- বা যাবজ্জীবন কারাদ-ে দ-িত যে কোনো লোক আপিল করলে অটোমেটিক আপিল হিসেবে ট্রিট হয়, লিভ পিটিশন হিসেবে নয়। তাই প্রত্যেকটা মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি তিনটা কোর্টে বিচারের সুযোগ নিতে পারছে। এক. ট্রায়াল কোর্টে, হাইকোর্টে আপিলে এবং সুপ্রিম কোর্টে আপিল হিসেবে ট্রিট হচ্ছে। ফলে দুটি কোর্টে এটি আপিল হিসেবে থাকার পরিপ্রেক্ষিতে সময় বেশি লেগে যাচ্ছে।’
মাহবুবে আলম বলেন, ‘আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। বিচারপতিদেরও আইনের ফরমালিটিজ অবজার্ভ করেই বিচার করতে হয়। সুতরাং আইন মোতাবেকই চলতে হচ্ছে। আইন মোতাবেকই এগুলো নিষ্পত্তি হবে। সুপ্রিম কোর্ট এগুলো বহাল রাখলে এগুলো কার্যকর হবে। তাই সবাইকে ধৈর্য ধরে একটু অপেক্ষা করতে হবে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন