এক দিকে, করোনা মহামারিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার পার হয়েছে। অন্যদিকে, দিন-আনা দিন-খাওয়া মানুষগুলোর চরম অর্থকষ্ট। এই দুইয়ের টানাপোড়েনে পড়ে, শেষপর্যন্ত লকডাউন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
দিনের পর দিন পেটে ভাত না জুটলে এমনিই মানুষ মরবে। তাই ভাইরাসের ভয়ে লোকজনকে ঘরবন্দি না-করে, জনজীবন স্বাভাবিক রাখাই শ্রেয় বলে মনে করেছেন ইমরান। বৃহস্পতিবার পাক প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ‘অনেক হয়েছে। আজ থেকে আর লকডাউন নয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও নিরুপায় হয়ে আমরা লকডাউন তুলে নিচ্ছি।’
বৃহস্পতিবারই পাকিস্তানে রেকর্ড করোনা সংক্রমণ হয়েছে। একদিনে ১ হাজার ৫২৩ জনের পজিটিভ ধরা পড়ে। তার পরেও এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে ইমরান বলেন, ‘দেশের বড় সংখ্যক গরিব মানুষ, দিনমজুর এই লকডাউনে জীবন অতিবাহিত করতে পারছেন না। জীবিকা হারিয়ে তারা চরম অর্থকষ্টে রয়েছেন। তাই নিরুপায় হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’ তিনি জানান, প্রায় ৫ সপ্তাহ ধরে চলা লকডাউন শনিবার থেকে ধাপে ধাপে তুলে নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার দেশবাসীর উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই লকডাউন এখনই প্রত্যাহার করছি। আমরা জানি এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় নিতে হল, যখন সংক্রমণের গতি ঊর্ধ্বমুখী। আমরা যেমন প্রত্যাশা করেছিলাম, পরিস্থিতি আসলে তেমন হচ্ছে না। লকডাউনেও কোনও কাজ হচ্ছে না।
তবে, লকডাউন প্রত্যাহার করা হলেও স্কুল এখনই খুলছে না বলে তিনি জানিয়েছেন। গণপরিবহণ পরিষেবাও আপাতত স্থগিত। তিনি জানান, সরকারি নির্দেশ মেনে সুরক্ষার যাবতীয় ব্যবস্থা করে, শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলি পুনরায় খুলবে।
ইমরান সতর্ক করে বলেন, লকডাউন প্রত্যাহার মানে অবাধ বিচরণ নয়। সরকারি নির্দেশ মেনেই বাড়ির বাইরে বেরোতে হবে। শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলিকেও নির্দেশ মেনে চলতে হবে। এর পরেও যদি দেখা যায়, সংক্রমণ বাড়ছে, সেক্ষেত্রে পুনরায় লকডাউন কার্যকর করতে সরকার বাধ্য হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। পাকিস্তানের চিকিৎসকেরা সতর্ক করে বলেছেন, লকডাউন প্রত্যাহার বা শিথিল হলে করোনাভাইরাসের বিস্তার বাড়বে।
দক্ষিণ এশিয়ার এই মুসলিম দেশটিতে এখনও পর্যন্ত ২৫ হাজার ৮৩৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৫৯৪ জনের। সূত্র : রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন