স্টাফ রিপোর্টার : সরকার গঠিত ৯ সদস্যবিশিষ্ট ’হজ ২০১৬ ব্যবস্থাপনা তদারকি ও সমন্বয় কমিটি’র আহ্বায়ক, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি’র চেয়ারম্যান ও সউদী-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি আলহাজ বজলুল হক হারুণ এমপি বলেছেন, একটি কুচক্রী মহল হজ কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন পত্রিকার মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এরা একটি রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত। হজযাত্রীদের হয়রানি করা, অর্থ আত্মসাৎ, প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করা এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করাই এদের মূল উদ্দেশ্যে। বজলুল হক হারুণ এমপি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং দেশের সুনাম নষ্ট করার জন্য ঐ মহলটি অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের উপস্থিতিতে তার দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বজলুল হক হারুণ এমপি একথা বলেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি’র সদস্য এ কে এম এ আব্দুল আউয়াল (সাইদুর রহমান) এমপি, হাব সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার, সহ-সভাপতি ফরিদ আহমদ মজুমদার, মহাসচিব শেখ আব্দুল্লাহ, ধর্মমন্ত্রীর এপিএস শফিকুল ইসলাম শফিক। প্রেস ব্রিফিংয়ে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, হজ নিয়ে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে এবার মৌখিক নয়, এদের বিরুদ্ধে কাগজে-কলমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ ধর্মমন্ত্রী বলেন, কোনো অনিয়মের মাধ্যমে নয়, সম্মিলিতভাবেই অব্যাহত সরকারি কোটা বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর মাঝে বন্টন করা হবে।
এমপি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটি মাহরামজনিত সমস্যা, পারিবারিক সম্পর্ক, হজ গাইড ও অনিবাসী হজযাত্রীদের সমস্যা এবং মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে সুষ্ঠুভাবে বেসরকারি কোটার ৯১ হাজার ৭শ’ ৫৮ জন হজযাত্রীর তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সরকারি অব্যবহৃত ৪৮০০ কোটার আইডি পরিবর্তনের জন্য সউদী রাজকীয় হজ মন্ত্রণালয়ে অনুমতির লক্ষ্যে প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী ২/১ দিনের মধ্যে অনুমোদন পেলে আবেদনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সে কোটা বন্টনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আরো ১০ হাজার অতিরিক্ত হজযাত্রীর কোটার প্রস্তাব এখনো সউদী আরব থেকে অনুমোদন পাওয়া যায়নি। অথচ ২/১টি পত্রিকা ১৭ হাজার কোটা বন্টনের কাল্পনিক ও বিভ্রান্তকর সংবাদ পরিবেশন করেছে। বজলুল হক হারুণ এমপি বলেন, সউদী সরকার চলতি বছর হাজীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আশকোনাস্থ হাজী ক্যাম্পে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। হজ যাত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদের এবার হাজী ক্যাম্পে ঢুকতে দেয়া হবে না। হজ এজেন্সি’র মালিকরা পাস নিয়ে হাজী ক্যাম্পে যাতায়াত করবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ই-হজ সিস্টেমে সউদীতে হজের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। হজ করতে সউদী আরবে গিয়ে পালিয়ে অন্য দেশে গিয়ে জঙ্গি হবার কোনো সুযোগ নেই।
হজ ভিসা লজমেন্টের কার্যক্রম শুরু
আগামী ৪ আগস্ট বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট ও ৫ আগস্ট সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের প্রথম হজ ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে। এ লক্ষ্যে হজ যাত্রীদের ভিসা দ্রুত সময়ে ও সহজীকরণে ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস সকল প্রস্তুুতিমূলক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। সউদী রাষ্ট্রদূতের নির্দেশে দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হজ ভিসা ইস্যুর জন্য যাবতীয় কাজ ইতিমধ্যেই শেষ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আশকোনাস্থ হাজী ক্যাম্পে বেসরকারি হজযাত্রীদের ভিসা ইস্যুর জন্য ভিসা লজমেন্টের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। হাজী ক্যাম্পে নিয়োজিত আইটি ফার্ম বিজনেস অটোমেশন লিমিটেডের প্রধান সমন্বয়কারী কবির আল মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত এয়ার কিং ট্রাভেলস (৩৬৩) ২শ’ হজযাত্রী, আমিন ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস ১৮৫ হজযাত্রী, আল মদিনা ট্রাভেলসের ২১৫ হজযাত্রী, এইচ এম ট্রাভেলস ২৮৬ হজযাত্রী ও এম কে ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস ২৩৫ হজযাত্রীর ভিসা লজমেন্টের কাজ শেষ করেছে। অতিসম্প্রতি ঈদ-উল-ফিতরের আগে শুরু হয়ে গতকাল পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনার ৪ হাজার ৫শ’ ৪৩ জন হজযাত্রীর ভিসা লজমেন্টের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এসব সরকারি হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যুর জন্য আগামী রোববার ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন