গোয়ালন্দ উপজেলা সংবাদদাতা : পদ্মা-যমুনায় স্রোতের তীব্রতায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলতে পারছে না চলাচলকারী বেশীর ভাগ ফেরি। যাত্রী ও যানবাহন বোঝাই করে ঘাট থেকে ছেড়ে গিয়ে বৃহস্পতিবার অন্তত ৬/৭টি ফেরি গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে। এতে করে দৌলতদিয়া ঘাটে নদী পাড়ের অপেক্ষায় আটকা পড়েছে সহস্রাধিক যানবাহন। দুপুর পর্যন্ত মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার জুড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। কোথাও কোথাও যানবাহনের ঘাটগামী গাড়ির চারটি লাইন হয়ে যানবাহন আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া টানা বৃষ্টিতে যাত্রী ও চালকরা চরম দুর্ভোগ পোহান। বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের ১৮টি ফেরির মধ্যে ১২ টি ফেরি তীব্র স্রোতের মধ্যেও সচল ছিল। স্রোতের তীব্রতায় চলতে না পেরে সারাদিন বাঁধা ছিল রো-রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, ইউটিলিটি ফেরি মাধবীলতা, হাসনাহেনা, বনলতা ও কেটাইপ ফেরি কাবেরী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআইডব্লিউটিসি’র এক কর্মকর্তা জানান, কয়েকটি ফেরি পূর্ণ লোড নিয়ে ছেড়ে এসেও গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে। চলমান ফেরিগুলোও নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে স্বাভাবিক ভাবে চলতে পারছে না। প্রতিটি ফেরির ২০/৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময় লাগছে নদী পাড়ি দিতে। এছাড়া পাটুরিয়া চ্যানেলের কাছাকাছি উজানে ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় সেখানে প্রায় ১কি.মি ঘুরে ফেরিগুলোকে ঘাটে ভিড়তে হচ্ছে। অপরদিকে দৌলতদিয়া ঘাটে চ্যানেলের উজানে থাকা বিশাল চরটি স্রোতের তোড়ে বিলীন হয়ে যাওয়ায় পদ্মার মূল স্রোত আঘাত হানছে ঘাটগুলোতে। এতে করে ঘাটের কাছাকাছি অস্বাভাবিক স্রোত সৃষ্টি হওয়ায় এলাকায় এসে ফেরিগুলো ছবির মতো স্থির হয়ে যাচ্ছে। সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ফেরিগুলোকে অতিকষ্টে দীর্ঘ সময় নিয়ে ঘাটে ভিড়তে হচ্ছে। এ সকল কারণে ঘাট এলাকায় নদী পার হতে এসে শত শত যানবাহন আটকা পড়ছে।
আটকে থাকা কাভার্ডভ্যান চালক মো. জাহিদ মিয়া অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘাটে যানজটের অজুহাতে পুলিশ তাকেসহ বহু পণ্যবাহী যানবাহনকে গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে দেয়। এর মধ্য হতে অনেক চালকের কাছ থেকে ৫/৬ শ’ নগদ টাকা নিয়ে বহু গাড়ী ছেড়ে দেয়। তারা রাতেই নদী পার হয়ে গেছে। আমার পরিবহনকে বুধবার বেলা ১২টার দিকে ছেড়ে দেয়। তারপরও ১শ’ টাকা দিতে হয়েছে।
আহলাদীপুর (গোয়ালন্দ মোড়) হাইওয়ে থানার ওসি ডিএম ইমাদাদুল হক জানান, ঘাটের উপর চাপ কমাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ এলাকায় পাকা মালবাহী যানবাহনগুলোকে আটকে রেখে পর্যায়ক্রমে ছাড়া হচ্ছে। তবে কাঁচাপণ্য ও জরুরী পণ্যবাহী যানবাহনগুলোকে না আটকিয়ে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। টাকা নিয়ে যানবাহন ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ সত্য নয়।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া অফিসের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানান, তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ঘাটে যানবাহন আটকে পড়ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন