অনেক চেষ্টার পরে এই তিন শতাধিক বাংলাদেশী যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরছেন। এদের মধ্যে ব্যবসায়ী, ছাত্র, পর্যটকসহ নানা সমস্যায় পড়া বাংলাদেশী রয়েছেন। কাতার এয়ারওয়েজের একটি চার্টার বিমান ভাড়া করে দেশে ফিরছেন তারা। ১৫ মে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে রাত ১১টায় ওয়াাশিংটন ডালাস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট বিশেষ ফ্লাইট তাদের ফ্লাইট হওয়ার কথা।
২২০০ ডলার জনপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশে ফিরে আসার জন্য অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশীদের কোন ধরনের আর্থিক সাহায্যের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্কে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেছা। মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে আটকা পড়া, ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশীরা একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করে দেশে যাওয়ার আকুতি জানান। বিষয়টি নিউইয়র্কের গণমাধ্যমে গুরুত্ব পাচ্ছে কয়েক সপ্তাহ ধরে।
২০ মার্চ যুক্তরাস্ট্র এক ধরনের লকডাউন হয়ে গেলে বিপাকে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রে আটকে পড়া বাংলাদেশীরা। এখানে কেউ পরিবার নিয়ে কেউ একা আটকা পড়েছেন, আশ্রয় নিয়েছেন আত্নীয়ের বাসায় অথবা হোটেলে।
এদিকে নিউইয়র্ক এর কনসাল জেনারেল জানিয়েছেন দেশে যারা ফিরছেন তাদের ঢাকা পৌছার পর দুই সপ্তাহ কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন রাজ্য থেকে নিজ খরচে এয়ারেপোর্ট পৌছতে হবে, সাথে অবশ্যই করোনা শনাক্ত নয় এমন চিকিৎসা প্রত্যয়ন পত্র রাখতে হবে।
আমেরিকায় আটকে পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে যেতে প্রথমে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেন। দূতাবাসে তালিকাভুক্তির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর বাইরে নানা সামাজিক সূত্র ধরে আটকে পরা বাংলাদেশিরা একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন। আটকে পড়াদের মধ্যে আছেন ব্যবসায়ী, পর্যটক, নারী, শিশু, শিক্ষার্থীসহ সব বয়স ও পেশার লোকজন। সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁদের। একপর্যায়ে হতাশাও দেখা দেয় তাঁদের মধ্যে। আমেরিকা থেকে একাধিক কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গ ও সংগঠন দাবি জানাতে থাকে, যেন অবিলম্বে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
নিউইয়র্কে কর্মরত আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী মার্চের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে নেয়ার দাবি তুলেছিলেন। তখনো এ নিয়ে ওয়েলিংটনের দূতাবাস বা নিউইয়র্ক কনস্যুলেট অফিসে পর্যাপ্ত তথ্য ছিল না। এর মধ্যে দূতাবাস ও কনস্যুলেট অফিসে চার শতাধিক বাংলাদেশি যোগাযোগ করেছেন। এর বাইরে আরও দুই শতাধিক মানুষ নিজেরা একে অন্যের খোঁজ নিয়েছেন। সব শেষে ৫ মে তাঁরা দেশে ফিরে যাওয়া নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগের কথা জানতে পেরেছেন।
ওয়েলিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস ও নিউইয়র্ক কনস্যুলেট অফিস থেকে জানানো হয়েছে, আটকে পড়াদের প্রত্যাবর্তনের জন্য কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ভাড়া করা বিমানের (চার্টার্ড ফ্লাইট) ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফ্লাইটটি ১৫ মে আমেরিকা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা। ওয়েলিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস এবং নিউইয়র্ক ও লস অ্যাঞ্জেলসে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সঙ্গে সমন্বয়করে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নিউইয়র্ক কনস্যুলেট থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসি এবং নিউইয়র্ক ও লস অ্যাঞ্জেলসে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের ওয়েবসাইটে আমেরিকায় এসে কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আটকে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের অবস্থানসংক্রান্ত তথ্য চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক তাঁদের নিজ নিজ খরচে বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার প্রত্যাশায় দূতাবাস ও কনস্যুলেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেন। ন্যূনতমসংখ্যক যাত্রীর টিকিট ক্রয় সাপেক্ষে ওয়াাশিংটন ডালাস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট বিশেষ ফ্লাইট পরিচালিত হবে। অরিক্স এভিয়েশন লিমিটেড নামের একটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এই চার্টার ফ্লাইটে ভ্রমণে ইচ্ছুক আটকে পড়া যাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন ও টিকিট ইস্যুকরণসংক্রান্ত বিষয়ে কাতার এয়াওয়েজের সঙ্গে সমন্বয় করছে।
রেজিস্ট্রেশন ও টিকিট ক্রয় সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা ও সহযোগিতার জন্য সরাসরি অরিক্স এভিয়েশন লিমিটেডের হোয়াটসঅ্যাপ ফোন নম্বরে (+৮৮০১৭১৩০৯৪৬৬৪) যোগাযোগ করা যেতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন