স্টাফ রিপোর্টার : জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের দাবিতে মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো। গতকাল শুক্রবার বিকালে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল, শ্লোগান ও সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।
শুক্রবার দুপুরের পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে একের পর এক মিছিল আর শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এলাকা। দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন থানা-ইউনিয়ন, ওয়ার্ড থেকে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে মিছিল নিয়ে আসে। এ মিছিলে যোগ দেয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। বিকাল ৪টায় খ- খ- মিছিল দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়সহ আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে। যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ওলামালীগ, শ্রমিকলীগ, মুক্তিযোদ্ধা লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনগুলো জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়। একই সঙ্গে মিছিল করতে করতে বিভিন্ন দিকে তারা ছড়িয়ে পড়ে।
জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতার লক্ষ্যে বিক্ষোভ মিছিল করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। এ সময় সংগঠনের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার বলেন, এদেশে জঙ্গিবাদের স্থান হবে না। এদেশের মানুষ ইসলামপ্রিয়, তবে ধর্মান্ধ নয়। তিনি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট বলেন, মুসলমান হয়ে মুসলমানকে হত্যা করছে মুসলিম নামধারী সন্ত্রাসীরা। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি দেশী-বিদেশী চক্রের মদদে জঙ্গিবাদী কার্যক্রম চালাচ্ছে। অবিলম্বে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। তখন বিদেশের মাটিতে বসে তারেক রহমান জঙ্গিবাদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে। মানিলন্ডারিং মামলায় তারেকের সাজা হয়েছে। তার মা খালেদা জিয়ারও বিচার করতে হবে। এই বিচারের হাত থেকে খালেদা-তারেক জঙ্গিবাদকে উস্কে দিতে পারে। এ জন্য ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীদের সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে। তারা নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করলেই গণধোলাই দিতে হবে।
গতকাল শুক্রবার বিকালে গুলিস্তান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর ছাত্রলীগ আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে রায় কার্যকর করার দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগ সভাপতি বায়োজিত আহমেদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার। আরো বক্তব্য রাখেন, উত্তরের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা প্রমুখ।
ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান মোল্লার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা জঙ্গিবাদবিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে আসে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে। যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না এবং কমিশনার আবুল কালাম অনুর নেতৃত্বে একটি মোটরসাইকেল বহর জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল বের করে।
এদিকে, অর্থপাচার মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শাস্তি দ্রুত কার্যকরের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
গতকাল শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে রায় দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানায় ছাত্রলীগ। সমাবেশে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, অর্থ পাচারের হাইকোর্টের রায়ে তারেক রহমানকে অতি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি দেয়া না হলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। সে কর্মসূচি হবে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের তীব্র সমালোচনা করে আবিদ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় তারেক রহমান। চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যার অন্যতম নির্দেশদাতা ছিলেন এই তারেক রহমান।
গোয়েন্দা সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, জঙ্গি হামলায় আরও সুষ্ঠু তদন্ত হলে তারেকের নাম আসবে। আপনারা সুষ্ঠু তদন্ত করে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে শাস্তি কার্যকরের ব্যবস্থা করুন।
জঙ্গিদের সতর্ক করে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিন্স বলেন, বাংলার আকাশ বাতাস কখনই জঙ্গিদের জন্য নয় এবং হবেও না। জঙ্গিরা তোমরা দেখ, মৃত্যুর পর মানুষ তোমাদের জানাযায়ও যাচ্ছে না। ভেবে দেখো মানুষ তোমাদের কতটা ঘৃণা করে।
মোতাহার হোসাইন প্রিন্সের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন