তুরস্কে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদের ছুটিতে প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী লকডাউন জারি করা হচ্ছে। সোমবার এই ঘোষণা দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান। পাশাপাশি, জুন থেকে দেশি-বিদেশি ভ্রমণ পিয়াসুদের জন্য খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক। এদিকে, মুসলমানদেরকে ঘরে ঈদের নামাজ আদায়ের আহ্বান জানিয়েছেন সউদী আরবের গ্র্যান্ড মুফতি ও দেশটির বৈজ্ঞানিক গবেষণা কাউন্সিলের প্রধান শেখ আবদুল আজিজ আল শেখ।
গত ১১ মার্চ তুরস্কে প্রথম করোনা রোগি শনাক্ত হলেও তুরস্কে এর আগে কখনোই দেশব্যপি লকডাউন জারি করা হয়নি। এই প্রথম ঈদের ছুটতে ৮১ টি প্রদেশেই একসাথে লকডাউন ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। চার দিনব্যাপী লকডাউন শুরু হবে আগামী শনিবার থেকে। তিনি জানিয়েছেন, ২৯ মে জুমার নামাজের সময় থেকে মসজিদগুলোও ধীরে ধীরে খুলে দেয়া হবে। গত ১৬ মার্চ থেকে মসজিদগুলোতে জামাতে নামাজ আদায় স্থগিত করা হয়। তুরস্কের অর্থনৈতিক কেন্দ্র ইস্তাম্বুল ও জাতীয় রাজধানী আঙ্কারাসহ ১৫ টি প্রদেশ ও শহরে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা আরও ১৫ দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে স্কুলগুলো আবার খুলে দেয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর টেলিভিশনে জাতিন উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে এরদোগান বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, মহান আল্লাহুর ইচ্ছায়, ঈদের পরে আমরা এমন একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হব যেখানে, আমাদের এ ধরণের বিধিনিষেধের দরকার হবে না।’ তবে কেউ নিয়ম না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন।
এদিকে, রোববার তুরস্কের পর্যটনমন্ত্রী মেহমেত নুরী এরসয় বলেছেন, ‘২৮ মে থেকে দেশের ভেতরে পর্যটন খাত খুলে দেয়া হবে, আর বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে মধ্যজুন থেকে।’ তার দুইদিন আগে চিকিৎসা সেবা খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। এক টিভি সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘শুরুতে এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হবে। কারণ চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়ার দেশগুলো করোনা থেকে দ্রুত সেরে উঠছে। ইউরোপের দেশগুলোতেও আস্তে আস্তে পুনরুদ্ধার ঘটছে। বেশিরভাগ দেশের সঙ্গেই মধ্যজুন থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হবে।’
এদিকে, ব্যতিক্রমী ও জরুরি পরিস্থিতিতে ঈদের নামাজ বাড়িতে পড়া জায়েজ উল্লেখ করে সউদী আরবের গ্র্যান্ড মুফতি বলেন, অন্যান্য নামাজ যেমন একাই ঘরে আদায় সম্ভব, ঈদের নামাজও তেমনি আদায় করা যাবে। তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর জন্য মারাত্মক এক সঙ্কটের সময় চলছে। কঠিন পরিস্থিতিতে ঘরেই ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা উত্তম হবে। পাশাপাশি যতটা সম্ভব পরিবারের পাশে থাকা উচিত। কারণ অন্য সময় ব্যস্ততার কারণে আমরা তাদের হক নষ্ট করে থাকি।’
এদিকে ঈদের আগের দিন থেকে ৫ দিন পুরো সউদী আরব জুড়ে ২৪ ঘণ্টা কারফিউ ঘোষণা করেছে সউদী সরকার। অন্যদিকে মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া কাউন্সিলও বিশ্বের সব মুসলমানকে ঘরেই ঈদের নামাজ আদায় করার আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসলামি শরীয়তের মূল উদ্দেশ্যে হচ্ছে মানুষের জীবন রক্ষা করা। তাই এবার ঈদের নামাজ ঘরেই আদায় করা উচিত। সূত্র : ডিপিএ ইন্টারন্যাশনাল, সউদী গেজেট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন