মশার ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) বিভিন্ন এলাকায়। গত প্রায় ছয় মাস ধরে মশা নিধনের ওষুধ শূন্য হয়ে পড়েছে ডিএসসিসি’র ভান্ডার বিভাগ। বিদেশ থেকে ম্যালাথিউন ওষুধ আমদানি করা হলেও সেটি ফরমুলেশন করতে না পারায় ব্যবহার উপযোগী কোনও ওষুধ নেই সংস্থাটির ভান্ডার বিভাগে। তবে ওষুধ ফরমুলেশনের জন্য দুই দফা টেন্ডার আহবান করলেও এখনও তা চূড়ান্ত করতে পারেনি সংস্থাটি।
জানা গেছে, গত বছর ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাবের পর বিদেশ থেকে সরাসরি ওষুধ আমদানি করার অনুমতি দেয়া হয় ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনকে। এরপর ভারত থেকে ম্যালাথিউন ৫% আমদানি করে ডিএসসিসি। কিন্তু আমদানিকৃত ওষুধটি সরাসরি ব্যবহার উপযোগী নয়। আর এই কাজটি সম্পন্ন করতে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ৬ লাখ ৪০ হাজার লিটার অ্যাডাল্টি সাইটিং ওষুধের জন্য টেন্ডার আহবান করে ডিএসসিসি। এতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ১২ কোটি ৪১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এতে সর্বনিম্ন দরদাতা হয় দ্য লিমিট অ্যাগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি লিটার ওষুধের ফরমুলেশন করতে দর দেয় ১৭২ টাকা। কিন্তু গত বছর মানহীন ওষুধ সরবরাহের অভিযোগ থাকায় প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল মেসার্স ফরওয়ার্ড ইন্টারন্যাশনাল (বিডি) লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি লিটারের জন্য দর দেয় ১৮৫ টাকা। আর তৃতীয় অবস্থানে ছিল জাহিন কনস্ট্রাকশন। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি লিটারের দর দেয় ১৯৫ টাকা। কিন্তু প্রথম অবস্থায় কোনও প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ না দিয়ে ফের টেন্ডার আহবান করে ডিএসসিসি।
পুনঃটেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা হয় মেসার্স ফরওয়ার্ড ইন্টারন্যাশনাল (বিডি) লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি সর্বনিম্ন দর দেয় ১৫৫ টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মেসার্স দ্য লিমিট অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট দর দিয়েছে ১৬৩ টাকা। তৃতীয় অবস্থান থাকা মেসার্স নোকন লিমিটেড দর দেয় ১৮৩ টাকা। আর মেসার্স মার্শাল এগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড চতুর্থ অবস্থান থেকে দর দেয় ১৮৯ টাকা।
সঙ্কট মেটাতে প্রথম ধাপে সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়া মেসার্স মার্শাল অ্যাগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে এক লাখ লিটার ওষুধ দেয়ার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করে ডিএসসিসি। প্রথম দফায় প্রতিষ্ঠানটি ডিএসসিসিকে ৬০ হাজার লিটার ওষুধ ফরমুলেশন করে দেয়। তবে এই ওষুধের গুণগত মান পরীক্ষা করার জন্য খামারবাড়ির কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের পাঠানো হলে তাতে মান উত্তীর্ণ হয়নি।
দক্ষিণ সিটির একাধিক মশক সুপারভাইজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফগিং করার জন্য ভান্ডার বিভাগ থেকে কোনও ওষুধ দেয়া হচ্ছে না। যেখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেখানে ডিজেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ওষুধ দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। ওই ওষুধ ব্যবহার উপযোগী নয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন