ইনকিলাব ডেস্ক : অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই কাশ্মীর নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আলোচনার জন্ম দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া নওয়াজ শরিফ। আজাদ কাশ্মীরের মুজাফ্ফরাবাদে শরিফের মন্তব্য, ‘কাশ্মীর কবে পাকিস্তানের অংশ হবে, তারই অপেক্ষায় রয়েছি’। এক জনসভায় তিনি বলেন, ‘কাশ্মীরের ‘আজাদির লড়াই’ থামানো যাবে না, আর তা সফল হবেই’। এ নিয়ে ফের ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
উপত্যকার অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টায় গতকাল শনিবার কাশ্মীর গেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। দু’দিনের সফরে রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় নেতার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। পরিস্থিতি ঠিক থাকলে কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক বসার পরিকল্পনা রয়েছে রাজনাথের। এরই মধ্যে ভারতকে নতুন করে চ্যালেঞ্জ করেছেন একটি সংগঠনের নেতা সাঈদ। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, তরুণ স্বাধীনতাকামী নেতা বুরহানের মৃত্যুর প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার লাহৌরে ‘কাশ্মীর ক্যারাভান’ জনসভায় ওই বক্তব্য রাখেন তিনি।
একটি ভিডিওতে তার হুঁশিয়ারি, কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে ভারতীয় প্রশাসনকে হুররিয়াত নেতা সৈয়দ আলী শাহ গীলানির চার দফা শর্ত মেনে নিতে হবে। তা না হলে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান একেবারে মাঠে হবে। হাফিজের ওই বক্তব্য দেখে গোয়েন্দারা মনে করছেন, ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার হুমকি দিয়েছে ওই নেতা। এদিকে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ভোটে নওয়াজের দল সবচেয়ে বেশি আসনে জিতেছে। সেই প্রেক্ষাপটেই কাশ্মীর নিয়ে তার আবেগঘন ব্যাখ্যা। আজাদ কাশ্মীরের বাসিন্দারা যাতে অধিকৃত কাশ্মীরের ‘আজাদির লড়াই’-কে ভুলে না যান, সেই আর্জি জানান তিনি।
প্রায় দু’সপ্তাহ আগে হিজবুল মুজাহিদিন নেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে অশান্ত হয়ে ওঠে উপত্যকা। এ পর্যন্ত কাশ্মীরে সংঘর্ষে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের দশটি জেলায় এখনও জারি রাখা হয়েছে কার্ফ্যু।
শুরু থেকেই নয়াদিল্লি দাবি করে আসছে, কাশ্মীরে অশান্তির পিছনে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীর হাত রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাঈদের এই ভিডিও ভারতের সেই দাবিকেই প্রমাণ করছে। ভিডিওতে সাঈদকে বলতে শোনা গেছে, মৃত্যুর কয়েক দিন আগে বুরহান তাকে ফোন করেছিল। বুরহানের শেষ ইচ্ছা ছিল তার সঙ্গে একবার কথা বলা। সাঈদের দাবি, কথা বলার পর বুরহান জানায়, এবার সে মরতে প্রস্তুত। গোয়েন্দারা বলছেন, ভারত-বিরোধী জনমত তৈরি করা ও জঙ্গি কার্যকলাপে উৎসাহ দিতেই বুরহানের উদাহরণ তুলে ধরেছেন সাঈদ। একই সঙ্গে ফের কাশ্মীরের স্বশাসনের প্রশ্নটি সামনে আনতে চেয়েছেন জামাত উদ দাওয়া প্রধান।
কাশ্মীরের সমস্যা মেটাতে হুররিয়াত নেতা সৈয়দ আলী শাহ গীলানি ভারত ও পাকিস্তানের কাছে চার দফা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেগুলি হল, স্বশাসন, নিয়ন্ত্রণ রেখা খুলে দেওয়া, সেনা সরানো ও কাশ্মীরের স্বার্থের জন্য দু’দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথ কমিটি গঠন। গীলানির ওই প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়ে ভারত জানিয়ে দেয়, কাশ্মীর ভারতের অংশ। কোনওভাবেই সেখানে অন্য কোনও দেশের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না। সূত্র : ওয়েবসাইট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন