বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ডিবি পরিচয়ে থানার পরিদর্শকের অভিযানে লাশ হলেন সোলাইমান

প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : গাজীপুরের কালীগঞ্জে একটি জুয়ার আসরে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে অভিযান চালান কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: আব্দুল হক। এ সময় দুই জুয়ারী দৌড়ে পাশের নাওয়ানের বিলে ঝাঁপ দেয়। একজন সাঁতরে ডাঙ্গায় উঠলেও অন্য ব্যক্তির লাশ শনিবার দুপুরে উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তির নাম মো: সোলাইমান মোল্লা (৫২)। তিনি উপজেলার বক্তরপুর ইউনিয়নের গোয়ালীয়াবাড়ী রয়েন গ্রামের মৃত হাসিম উদ্দিন হাসুর ছেলে। জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে সাদা পোশাকে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: আব্দুল হক একটি সাদা মাইক্রো নিয়ে উপজেলার বক্তরপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিনের টেক সংলগ্ন ফালাইনা মিয়ার টেকের একটি জুয়ার আসরে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ ইউনিয়নের গোয়ালীয়াবাড়ী গ্রামের আফির উদ্দিনের ছেলে তালু (৫০), লাছু মিয়ার ছেলে লিটন (৪০), রয়েন গ্রামের আ: মোতালিবের ছেলে তাইজুল (৫৫) ও হাছুন্নার ছেলে সরোয়ার ওরফে সরল (৫০)-কে আটক করে। পুলিশের ধাওয়ায় গোয়ালীয়াবাড়ী গ্রামের সরোয়ার ও সোলাইমান নামের দুই জুয়াড়ি পাশের নাওয়ানের বিলে ঝাঁপ দেয়। এ সময় সরোয়ার সাঁতরে ডাঙ্গায় উঠলেও সোলাইমান নিখোঁজ হয়। পরে স্থানীয় ও পরিবারের লোকজন ওই দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করে সোলাইমানের সন্ধান পায়নি। পরে শনিবার দুপুরে ওই বিলে তার লাশ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: হাবিবুর রহমান তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। কোনো আঘাতে নয়, পানিতে পড়েই সোলাইমানের মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই এসআই।
আটক হওয়া তালু, লিটন ও তাইজুলের পরিবারের লোকজন জানায়, জুয়ার আসর থেকে তাদের তিনজনকে আটক করে গাড়িতে নিয়ে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরে উপজেলার জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের দেওতলা মোড়ে তাদের মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার আগেই ছেড়ে দেয়।
এদিকে নিহতের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের ধাওয়ায় সোলাইমানের মৃত্যু হলেও অপমৃত্যুর মামলা করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে পরিদর্শক (তদন্ত) মো: আব্দুল হক। তারা আরো জানান, কোনো প্রকার ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবারের লোকজন তা গ্রহণ না করলে পরে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
এ ব্যাপারে পরিদর্শক মো: আব্দুল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে প্রথমে বিষয়টি তিনি অস্বীকার করলেও পরে ঘটনার কথা স্বীকার করেন এবং বলেন, আমি গাজীপুরে আছি নিউজ করার দরকার নেই। অন্য সাংবাদিকদের নিউজ করা বন্ধ করেন। সন্ধ্যায় আমার অফিসে দেখা কইরেন।
কালীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো: সালেহ উদ্দিন আহমেদ জানান, বিষয়টি সম্পর্কে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আলম চাঁদ আমাকে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি পরিদর্শক আ: হককে জিজ্ঞেস করলে তার কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন বলেও তিনি জানান। তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন