শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ইংল্যান্ডে শিথিল হচ্ছে লকডাউন, শুরু হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন

যুক্তরাজ্য সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০২০, ৯:৪৪ এএম | আপডেট : ১০:৩১ এএম, ৩১ মে, ২০২০

ইংল্যান্ডে শিথিল হচ্ছে লক ডাউন, শুরু হতে যাচ্ছে স্বাভাবিক জীবন, তবে সামাজিক দূরত্বের গুরুত্ব বেশী দেওয়া হচ্ছে।
করোনাভাইরস মহামারি বা কভিন১৯ মোকাবেলা করতে ব্রিটিশ সরকার সারা বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে মার্চের মাঝামাঝি থেকে ঘোষনা দেয় লকডাউনের। দীর্ঘ দিন পর সেই লকডাউন বা সরকারের স্টে হোম পলিসি। ধাপে ধাপে শিথিল হতে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিককায় পহেলা জুন থেকে প্রাইমারি স্কুলের দু তিনটি ক্লাস দিয়ে শুরু হবে স্কুল ওপেনিং তবে বাধ্যবাধকতা নেই । ইচ্ছে করলে মা বাবা সন্তান কে স্কুলে নাও পাঠাতে পারেন।

সন্তান তিন দুন স্কুলে না গেলে আগে জরিমানা গুনতে হতো এখন অবশ্য সেই জরিমানা গুনতে হবেনা, এটা জরিমানার আওতায় পরবেনা।

এ সময় জনসাধারণকে সতর্ক করে ব্রিটিশ প্রধান মন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না হলে , জরিমানা গুনতে হবে। সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
লকডাউন শিথিলের পর কী কী পরিবর্তন হচ্ছে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে। যদি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যায়, তাহলে ফের লকডাউন কঠোর করা হবে ।

১ জুন ২০২০ থেকে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারবেন জানিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি ঠিক থাকলে শুধু রিসিভশন, ইয়ার ওয়ান এবং ইয়ার সিক্স খোলা হবে।

এ ছাড়া রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে, দোকানপাটসহ অন্যান্য সেক্টর জুলাই মাসের প্রথম থেকে খোলা শুরু হতে পারে?
অবশ্য স্কুল খুলবে এর আগেই কিছুটা শিথিল করে বিভিন্ন বন্ধ পার্ক গুলি খুলে দিয়েছে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে।

লকডাউন পুরোপুরি প্রত্যাহার নিয়ে ব্রিটিশ সরকার ধাপে ধাপে লক ডাউন তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
প্রথমত: ছোট দোকান গুলো খুলে দেয়া হবে। সেই সাথে ক্যাফেগুলোও শুরু হবে যেখানে শুধু টেকওয়ে অফার থাকবে বা কয়েকজন কাস্টমার বসতে পারবেন।

দ্বিতীয়: সুপার মার্কেটগুলো আগের মতোই খোলা থাকবে তবে সেক্ষেত্রে সময় আরও বাড়ানো হবে।
৩/তৃতীয়ত: সামাজিক দূরত্ব মেনে বাইরে হাঁটা, দৌড়ানো, ব্যায়াম করার উদ্দেশে বের হওয়া যাবে।

চতুর্থ: শহরের পাশে গাড়ি চালানো যাবে এবং নিজ পরিবারের সাথেই পিকনিক করা যাবে। তবে অন্য গোষ্ঠীর সাথে কমপক্ষে দুই মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তবে এই সমাবেশগুলো বাড়ির ভিতরে করলে ভালো হয়।

পঞ্চম: দূরত্ব বজায় রেখে মানুষ কাজে ফিরতে পারবে। এক্ষেত্রে শ্রমিকরাও তাদের কাজ শুরু করতে পারবে।

ষষ্ঠ : গণপরিবহন গুলোতে কোনোভাবেই গাদাগাদি করে ওঠা যাবে না। এক্ষেত্রে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং সময়সূচিতেও পরিবর্তন আসবে।

সপ্তম: পিতামাতা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের করোনা বিষয়ের প্রতিদিনের আপডেট দিতে একটি দৈনিক নিউজলেটার চালু করা হয়েছে।

অষ্টম: নিকট আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধব মিলে ৬ জন একত্র হতে পারবেন। তবে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রাখতে হবে।
সবশেষ খেলাধুলার করার সুযোগ দেয়া হতে পারে ? ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস , রেগবি, সহ সব খেলা হবে তবে দর্শক বিহীন।মাঠে কোন দর্শকের প্রবেশ করার সুযোগ থাকবে না।
একদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে অন্যদিকে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সব ধরনের ব্যাবস্থা মাথায় রেখেই ব্রিটিশ সরকার এগুচ্ছে ।


এদিকে সর্বোচ্চ ৬ জনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মিটিং করার অনুমতি সবার মাঝে আশা জেগেছে।
কর্মস্থলে ফিরতে হলে সবাইকে সর্তক থাকতে হবে। বিশেষ করে গণপরিবহনে যাতায়াত না করাটাই উচিত হবে। আর আকাশ পথে ব্রিটেনের বাইর থেকে যারা আসবেন তাদের অবশ্যই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে ১৪ দিন। আইন অমান্য করলে। আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি ব্যাবস্থা করা হবে।

তবে ইংল্যান্ডের বাসিন্দারা এখন সবচেয়ে বেশি সময় কাটাচ্ছেন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে। ভিডিও কনফারেন্সিং, অ্যাপ জুম এবং ভিডিও চ্যাট অ্যাপ হাউজপার্টির ব্যবহার রাতারাতি অনেক বেড়ে গেছে।
ইন্টারনেটে প্রশিক্ষণ, নতুন কিছু শেখার মতো কাজে ইন্টারনেট ব্যবহারও অনেক বেড়ে গেছে।

ব্রিটেনের বাসিন্দাদের টেলিভিশন দেখার প্রবণতা সপ্তাহে অন্তত পাঁচ ঘণ্টা বেড়েছে। লকডাউন শুরু হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা একত্রে মিলে টেলিভিশন দেখার প্রবণতাও বেড়েছে।
এদিকে ব্রিটেনে বাঙালি পরিবারের পুরুষ ব্যক্তিরাও পরিবারের সঙ্গে এখন বেশি সময় কাটাচ্ছেন।
শুধুমাত্র পরিবারই নয়, অনেকের সঙ্গে তাদের প্রতিবেশীর হৃদ্যতাও বেড়েছে।বেড়েছে বাসা বাড়িতে বাগান করার সখ।সেই সাথে বেশি সময় ধরে পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারাটা যেমন অনেক মানুষকে এই লকডাউনে টিকে থাকতে সহায়তা করছে ।

ব্রিটিশ সরকার লক ডাউন ধাপে ধাপে তুলে নিলেও সামাজিক দূরুত্বের প্রতি বেশী গুরুত্ব আরোপ করছেন। কাজে অফিস আদালতে, যানবাহন বা মার্কেটে সব খানেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
মার্কেট, সুপার স্টোর, ব্যাংক কিম্বা টেকওয়ে খাবারের দোকান গুলিতে বাইরে লাইনে দূরত্ব বজায় চলছেন অনেকেই । এর ব্যত্যয় হলে সরকার আইন প্রয়োগ করছে।

সরকার বলছে,”যেখানে এর ব্যাতিত্রম হবে তাদের কে অর্থনৈতিক জরিমানা অথবা আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে”। ৬ জনের বেশী লোক এক সাথে মিটিং করতে পারবেন না তবে সেখানেও কড়া নির্দেশ সামাজিক দূরত্ব ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন