সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগিতার প্রস্তাব পুতিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : আইএস জিহাদিদের ভয়াবহ হামলায় ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় আফগানিস্তানে গতকাল রোববার জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। গত শনিবার দেশটির রাজধানী কাবুলে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৮০ জন নিহত ও ২৩০ জন আহত হয়েছে। আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। বিবিসির খবরে জানা যায়, টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলেছেন, হামলাকারীদের কঠোর হস্তে দমন করতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ওদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন আফগানিস্তানের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তার দেশের প্রস্তুতি ঘোষণা করেছেন। রাজধানী কাবুলে ভয়াবহ বোমা হামলার পর এ ঘোষণা দিলেন পুতিন। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির কাছে পাঠানো শোকবার্তায় এ ঘোষণা দেন তিনি। বার্তায় কাবুলে হামলার কঠোর নিন্দা জানানোর পাশাপাশি আফগান সরকার ও জনগণের সঙ্গে সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধে সক্রিয় সহযোগিতা জন্য রাশিয়ার প্রস্তুতির বিষয় তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া বার্তায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারের প্রতি শোক এবং সমবেদনাও জানানো হয়। অন্যদিকে, দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘ দল এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলে চিহ্নিত করেছে। জাতিসংঘের সাহায্যকারী দলের প্রধান তাদামিচি ইয়ামামোতো বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে।
গত শনিবার সংখ্যালঘু শিয়া হাজারা সম্প্রদায়ের একটি বিক্ষোভ সমাবেশে আত্মঘাতী হামলায় কমপক্ষে ৮০ জন নিহত হয়। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলাটি চালিয়েছে বলে দাবি করে। আইএসের আমাক ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে, তাদের দুজন সদস্য সমাবেশে ঢুকে হামলাটি চালিয়েছে। আফগানিস্তানের তালিবান বাহিনীর পক্ষ থেকে এই হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। হাজারা গোষ্ঠীর লোকেরা একটি বিদ্যুৎ লাইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছিল। তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে যাবে এমন একটি বিদ্যুৎ লাইন আফগানিস্তানের শিয়া হাজারা অধ্যুষিত বামিয়ান প্রদেশের ওপর দিয়ে নেয়ার কথা। ২০১৩ সালে তৎকালীন আফগান সরকারের আমলে এই বিদ্যুৎ লাইন বামিয়ান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। বিদ্যুৎ লাইনের নকশা আবার বামিয়ানে ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে গতকাল কাবুলের দেহ্ মাজাং চত্বরে শিয়া হাজারা সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশে জড়ো হয়। বিকেলে হঠাৎ করেই সেখানে একাধিক আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়। আফগানিস্তানে সব মিলিয়ে ৩০ লাখ হাজারা শিয়ার বাস। ৯০ এর দশকে আল কায়েদা এবং পশতুন সুন্নিদের হামলায় বহু হাজারা নিহত হয়। হাজারা সম্প্রদায় মনে করে, দেশটিতে প্রায় সব সরকারই তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করে এসেছে। বিক্ষোভ মিছিলেও সেই ক্ষোভের প্রকাশ ঘটে। গত শনিবার হামলার আগে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে হামলার পর সেখানে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন