শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ব্যর্থ অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে তোপের মুখে তুরস্কের গোয়েন্দা প্রধান

প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : তুর্কি গোয়েন্দা বাহিনীর ব্যর্থতা গত সপ্তাহের ব্যর্থ অভ্যুত্থানে সাহায্য করেছে বলে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের মন্তব্যের পর তুরস্কের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এমআইটি) প্রধান ও অন্যতম ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হাকান ফিদান তোপের মুখে পড়েছেন। তার ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। খবর এএফপি।
তবে তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের ঘটনায় লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা গোয়েন্দা প্রধান হাকান নজিরবিহীন গণসমালোচনার সম্মুখীন হলেও তার পদে আসীন রয়েছেন, অন্তত এখনকার মতো হলেও।
শুক্রবার দিনের শেষভাগে এরদোগান প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ফিদানের সাথে দু’ঘণ্টা বৈঠক করেন। তবে বৈঠকের পর তুর্কি গোয়েন্দা প্রধানের বিদায় বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি। এদিকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল যে এতদিনের ক্লিনশেভ গোয়েন্দা প্রধানের মুখে গোঁফ দেখা যাচ্ছে যা প্রেসিডেন্টের প্রতি আনুগত্যের প্রকাশ বলে কেউ কেউ মনে করছেন। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের জন্য বিষয়টি এটা এক আমোদের উপাদান হয়েছে।
এদিকে ফ্রান্স২৪ টেলিভিশনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে এরদোগান গোয়েন্দা প্রধান সম্পর্কে বলেন, না, তিনি পদত্যাগপত্র দেননি। আমরা এ নিয়ে কথা বলিনি।
অভ্যুত্থানের আগেই এমআইটি ততার আভাস পেয়েছিল, কিন্তু এরদোগানকে সতর্ক করেনি বলে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এরেদোগান গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, গোয়েন্দা দফতরের দুর্বলতা একটি ব্যর্থতা। সেইসাথে তিনি উল্লেখ করেন যে যুক্তরাষ্ট্রে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলা এবং ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে সাম্প্রতিক কালের হামলার সময়ও এ ধরনের ব্যর্থতা দেখা গেছে। তিনি বলেন, হাকান ও অভ্যুত্থানের সময় ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে বন্দি সেনাপ্রধান হুলুসি আকার তাদের পদে রয়েছেন ঠিকই, তবে তারা পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
তিনি বলেন, তাদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে আমি প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমের সাথে আলোচনা করেই তা নেব। তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। আমাদের একটি প্রবাদ আছেÑরাস্তার মাঝখানে ঘোড়া পরিবর্তন করো না।
দৈনিক হুররিয়েতের খবর অনুযায়ী, অভ্যুত্থানের পর এরদোগান হাকানকে ক্রুদ্ধভাবে তিরস্কার করে বলেন, আপনি খুবই খারাপ করেছেন। হাকান তার জবাবে বলেন, আপনি যা বলবেন আমি তাই করতে প্রস্তুত। উল্লেখ্য, হাকান এরদোগানের নীতি উপদেষ্টা হিসেবে তিন বছর কাজ করার পর ২০১০ সালের মে মাসে এরদোগান তাকে এমআইটির প্রধান হিসেবে নিয়োগ করেন। তখন থেকে তিনি এরদোগানের অন্যতম অনুগত লোক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এরদোগান প্রকাশ্যেই তাকে ‘গোপন রক্ষক’ হিসেবে আখ্যায়িত করতেন। তবে এক অব্যাখ্যাত কারণে পার্লামেন্ট সদস্য হওয়ার উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে এমআইটি প্রধানের পদ থেকে হাকান পদত্যাগ করেন।
এদিকে ইলদিরিম বলেন, অভ্যুত্থান শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট পরও আসন্ন হুমকি সম্পর্কে তিনি কিছু জানতে পারেননি।
উপ প্রধানমন্ত্রী নুরুদ্দিন কানিকলি বলেন, যেকোনোভাবেই দেখা হোক না কেন, গোয়েন্দা দুর্বলতার বিষয়টি চোখে পড়ে। দেখুন, অভ্যুত্থানের খবর ছড়িয়ে পড়লেও প্রেসিডেন্ট প্রধান গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষব্যক্তির কাছ থেকে কিছু জানতে পারেননি।
অন্যদিকে সামরিক বাহিনী প্রধানের অফিস থেকে বলা হয়, স্থানীয় সময় বিকেল ৪ টায় অভ্যুত্থানের ব্যাপারে তাদের আভাস দিয়েছিল এমআইটি। তারা প্রশ্ন করে, কেন রাজনৈতিক নেতৃত্বকে তৎক্ষণাৎ এ খবর দেয়া হল না?
হুররিয়েতের কলামিস্ট আহমেদ হাকান বলেন, প্রিয় হাকান ফিদান, আপনি যখন অভ্যুত্থানের গোপন খবর পেলেন কেন তা একজন রাজনৈতিক নেতাকেও জানালেন না?
সিএনএন তুর্ক চ্যানেলের খবর অনুযায়ী এমআইটির দ্রুত সতর্কবার্তার প্রেক্ষিতে ১৫ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় ফিদান ও তুরস্কের শীর্ষ জেনারেলদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তারা যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা ষড়যন্ত্রকারীদের অভ্যুত্থানের সময় এগিয়ে আনতে বাধ্য করে। তারা সেদিন ভোর তিনটায় অভ্যুত্থান ও ভোর ৬টায় সামরিক আইন জারির পরিকল্পনা করেছিল।
কিন্তু এতে কেন রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সংশ্লিষ্ট করা হয়নি তা এক রহস্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন