ইনকিলাব ডেস্ক : দুই জোটসঙ্গী সরে দাঁড়ানোর জেরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি। বিদায়ী ভাষণে নেপালি কংগ্রেস ও মাওবাদীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুললেন প্রবীণ নেতা।
ভারত ও চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার কারণে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে জোট ছেড়েছে নেপালী কংগ্রেস ও সিপিএন মাওইস্ট সেন্টার। তাদের আনা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থন করেছে মাধেশি পিপলস রাইটস ফোরাম-ডেমোক্র্যাটিক এবং রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি। পরিস্থিতির জেরে পদত্যাগ ছাড়া পথ ছিল না প্রধানমন্ত্রী ওলির। গতকাল নেপাল পার্লামেন্টে পদত্যাগের ঘোষণা করার সময় এমনই অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
এদিন বছর চৌষট্টির সিপিএম-ইউএমএল নেতা জানিয়েছেন, ‘এই মুহূর্তে সরকার পাল্টানোর খেলা শুরু করার বিষয়টি রহস্যময়’। তার দাবি, ‘ভালো কাজ’ করার খেসারত দিতেই তাকে জোটসঙ্গীদের কোপে পড়তে হয়েছে।
এলির মতে, ২০১৫ সালে তিনি যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন, নেপাল-ভারত সম্পর্ক সেই সময় তদলানিতে ঠেকেছিল। তার চেষ্টাতেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তিনি জানান, গত সপ্তাহে কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত বিশিষ্টদের আলোচনায় নেপাল ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক কালে সাক্ষরিত চুক্তিগুলির পর্যালোচনা করা হয়। এমনকি ১৯৫০ সালেত গুরুত্বপূর্ণ নেপাল-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ চুক্তি নিয়েও কথা হয়েছিল। সম্প্রতি চীনের সঙ্গে নেপালের পরিবহন চুক্তির কথাও এদিন ওলির ভাষণে স্থান পেয়েছে। তার দাবি, দুই দেশের মধ্যে সীমান্তবর্তী বাণিজ্যের এতে প্রভূত সুবিধা হয়েছে।
অন্যদিকে, ওলির বিরুদ্ধে এর আগেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছিল নেপালী কংগ্রেস ও মাওবাদীরা।
সেপ্টেম্বরে নয়া সংবিধান চালু হওয়ার পর থেকেই একের পর এক সমস্যায় পড়েছে এই ছোট্ট প্রতিবেশী পাহাড়ি রাষ্ট্র। এখানকার প্রাচীন অধিবাসী মাধেশি জনগোষ্ঠী সংবিধান মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অভিযোগ করে, তাদের অধিকার খর্ব করে জমিজিরেত কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সরকারেও তাদের কোনও ভূমিকা নেই। সমস্যা মেটানোর দাবিতে ভারতের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্যপথ টানা ৪ মাস অবরোধ করে রাখে তারা। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৫০ জনেরও বেশি মৃত্যু হলে ও নেপালের লাইফলাইন পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে পড়লে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
ওলিকে সরিয়ে মাওবাদী নেতা প্রচ-ই সম্ভবত নেপালের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। তবে নেপালে প্রভাব বাড়াতে মরিয়া চীন চাচ্ছিল, যেনতেনপ্রকারে ওলিই ক্ষমতায় থাকুন। চীনের সঙ্গে সখ্য বাড়িয়ে ও ভারতের বিরোধিতা করে বেজিংয়ের গুডবুকে নাম লিখিয়েছিলেন ওলি। নেপালে ভারতবিরোধী মানসিকতা উসকে দেওয়াতেও তার ভূমিকা নেহাত কম নয়। সূত্র : এবিপি আনন্দ ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন