সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ডা. ফেরদৌসের দেশে ফেরা ও কোয়ারেন্টিন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড়

আবদুল মোমিন | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০২০, ৮:৪১ পিএম

দেশের মানুষকে করোনা চিকিৎসা সেবা দিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আসা ডা. ফেরদৌস খন্দকারকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তুমুল তর্ক-বিতর্ক চলছে। গতকাল রবিবার (৭ জুন) বিশেষ ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরা ১২৮ জনের মধ্যে তাকে ছাড়া সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তোলপাড় শুরু হয় ফেইসবুকে। কেউ তার দেশে আসাকে স্বাগত জানিয়েছেন। আবার অনেকেই তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সামনে এনে ও দেশে ফেরার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

দেশে ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসক ফেরদৌস খন্দকারকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি মহাখালীতে অবস্থিত ব্র্যাক ট্রেনিং সেন্টারে কোয়ারেন্টিনে আছেন বলে জানা গেছে।

ডা. ফেরদৌস খন্দকারের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বারে। তিনি বাংলাদেশে আসার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই তুমুল তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। তাকে নিয়ে ক্ষমতাসীনদের মধ্যেও বিভক্তি দেখা গেছে। কেউ কেউ তার সম্পর্কে ফেইসবুকে লিখছেন, তিনি নাকি বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদের ভাতিজা। তার এই পরিচয় নিয়েও ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

ফেইসবুকে মোহাম্মদ নুরুল আমিন লিখেছেন, ‘‘একটা প্রশ্ন, আমেরিকা কি করোনা শূন্য? তাহলে উনি আমেরিকা ছেড়ে দেশে এলেন কেন?জানি না, উনার আগমন রিয়েলি দেশ প্রেম না অন্য কিছু! যদি দেশ প্রেম হয়ে থাকে, স্যালুট।’’

মারাহিম লিখেছেন, ‘‘আরে ভাই আমেরিকার করোনার যুদ্ধা যারা তারা কি ১৬/১৮ ঘন্টার ডিউটি করে আবার ফেসবুকে বকবকানীর সময় পায় একবার ভাবুন তো! আর আমেরিকা কি এখন করোনা মুক্ত?’’

ফাহিম সরওয়ার অসীম লিখেছেন, ‘‘আপনি স্বদেশে পা রাখার জন্য আপনাকে স্যালুট জানাই।ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আপনি আবার নিজ কর্মস্থলে চলে যান সেখানে গিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশী যারা আছে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা করেন।’’

জাহির উদ্দিন লিখেছেন, ‘‘ডাক্তার ফেরদৌস সাহেব প্রতিদিন প্রায় ১ ঘন্টা লাইভে কথা বলেন প্রতিদিন উনাকে ফুরফুরে দেখা যায়। উনি যদি সারাদিন সেবা দিয়ে থাকেন উনি তো ক্লান্ত থাকার কথা। আর উনি নাকি বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দেন তাহলে হাসপাতালে চিকিৎসা কখন দেন?’’

বাহার লিখেছেন, ‘‘ওনি দেশে বা আমেরিকায় কি চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন বা দিবেন তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
কিন্ত এই কুতর্ক কেন, কার আত্মীয় কিংবা কোন দলের। এই মহামারীতেও আমরা মানুষ হলাম না!’’

মুরাদ আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘‘ডাক্তার ফেরদৌস এত তেল মারার প্রয়োজন কি? আমেরিকাতে বাংলাদেশের চাইতে অনেক বেশি লোক মারা যাচ্ছে আপনি সেখান থেকে বাংলাদেশে কিজন্য এসেছেন? আপনার আসল উদ্দেশ্যটা কি?’’

টিটু সরোয়ার লিখেছেন, ‘‘এ লজ্জা আমাদের পুরা জাতির জন্য সে জাতিকে সুরক্ষা দিতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন অথচ তার সাথে সরকার এমন ব্যবহার এটা খুবই বেদনাদায়ক। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে সকল আপদ বিপদ থেকে রক্ষা করেন, আমিন।’’

বিনা ফারজানা লিখেছেন, ‘‘দেশ যারা চালায় তাদেরকে কি বলব বুঝলাম না। এই দুরদিনে আমাদের দেশে অনেক অনেক ডাক্তার দরকার। একজন ডাক্তার কত ভালো মনের মানুষ হইলে জীবন বাজী রেখে নিজ দেশে লোকদেরকে সেবা দিতে আসে। তাকে এভাবে অপমান করা বা কাজ করার সুজুগই না দেয়া। আমাদের মতো অসভ্য জাতি আর কোন দেশে আছে বলে আমার জানা নাই।আমাদের দেশের প্রধানরা হিংসা আর দুর্নীতি ছাড়া কিছুই জানেনা। আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দান করুন আমিন।’’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammed Shah Alam Khan ৮ জুন, ২০২০, ১০:২১ পিএম says : 0
ডঃ ফেরদৌস খন্দকার তার এমবিবিএস ডিগ্রী কোথা থেকে নিয়েছেন মান বাংলাদেশ থেকে নাকি আমেরিকা থেকে এটা এই সংবাদে বুঝা যাচ্ছেনা। তবে ওনার ছবির পেছনে অনেক সনদপত্রের ছবি ঝুলছে এতে মেন হয় তিনি আমেরিকাতেও সার্টিফিকেট কোর্স কিংবা ডিগ্রী নিয়েছেন এমনটা দেখাতে চাইছেন। এখানে ওনার সম্পর্কে ভাল মন্দ লিখেছেন অনেকেই। তারমধ্যে একজন বলেছেন, ‘‘আরে ভাই আমেরিকার করোনার যুদ্ধা যারা তারা কি ১৬/১৮ ঘন্টার ডিউটি করে আবার ফেসবুকে বকবকানীর সময় পায় একবার ভাবুন তো! আর আমেরিকা কি এখন করোনা মুক্ত?’’ ওনার কথাটা খুবই সত্য এটা আমি একজন কানাডিয়ান প্রবাসী হয়ে বলছে। বিদেশে যারা স্থায়ীভাবে বসবাস করার সুযোগ পায় এবং পেশগত চাকুরী পায় তাদেরকে আমি কখনও অবসর নেয়ার আগে দেশে ফিরতে দেখিনি। তবে এখানে পেশাগত কাজে উন্নতী করার পর অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে উচ্চ বেতন এবং বড় পদবী এমনকি সরাসরি মন্ত্রী বানিয়ে দেশে নিয়ে যায় এটা দেখেছি। আমি নিজেই এর বড় প্রমাণ আমি দেশের হয়ে এই বিদেশে কাজ করেছি কিন্তু এখানকার আরাম আয়েশ ছেড়ে দেশে ফিরে গিয়ে দেশের সেবায় যোগদেইনি। আমি কানাডায় বিভিন্ন বাংলাদেশী সংগঠনের প্রধান ছিলাম এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কানাডা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে দেশের সেবা করেছি। দলের দায়িত্বে থাকার কারনে ১৯৯৬ সালে জাতীর জনকের হত্যাকারীদের দেশে ফেরত নেয়ার কাজ করেছিলাম কিন্তু সেইসময়ের হাইকমিশনারের গাফলতির কারনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামাদ সাহেব চিক্তি করতে এসেও শেষ মুহূর্তে চুক্তি করতে পারেনি। এরপর নেত্রী হাসিনা ২০০২ সালে যখন বিরোধী দলের নেত্রী তখন ওনার লবিষ্ট হিসাবে কানাডায় কাজ করেছি এবং বিএনপিকে সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল হিসাবে সেসময়ের কানাডিয়ান পারলিয়ামেন্টে (লিবারেল পার্টি ক্ষমতায়) পরিচিত করিয়েছিলাম এবং কানাডার সরকার সেই হিসাবে নেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে প্রাধান্য দিয়েছিল। আমার এইকথা বলার কারন হচ্ছে আমরা যখন প্রবাসে ভাল থাকি তখন আমরা প্রবাসেই যেসব বাংলাদেশী অসুবিধায় থাকে তাদের পাশে থেকে তাদের উপকার করে দেশের কাজ করছি প্রমাণ করে থাকি কিন্তু দেশে ফিরে যাইনা। আবার আমরা যারা এখানে ডিগ্রী নেয়ার পরও যদি এখানে সুবিধা করতে নাপারি তখন বিদেশী খেতাবকে পুঁজি করে দেশে দৌড়দেই আরাম আয়েশ করার জন্যে (সেখানে ভাল কাজ পেয়ে যাই তাই দেশেই আরাম আয়েশে থাকি তবে সন্তানরা প্রবাসেই থেকে যায়)। আমি বলতে চাই আমাদের সবারই একই উদ্দেশ্য সেটা আরাম আয়েশ এবং সন্তানদেরকে সুশিক্ষা দেয়া যানাকি আমেরিকা কানাডা মানে প্রবাসেই সম্ভব। সেজন্যেই বলতে হয় যদি আমি ফেরদৌস সাহেব সম্পর্কে কিছুই জানিনা তারপরও বলছি ওনার দেশে ফিরে যাওয়া এবং যাবার আগে নিজেকে প্রচার করা এটা অবশ্যই প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। তারপরও বলবো দেশের জন্যে যেটা মঙ্গল সেটাই যেন হয় এটাই আল্লাহ্‌র দরবারে প্রার্থনা। সাথে সাথে আল্লাহ্‌র কাছে আরো প্রার্থনা করছি তিনি যেন আমাকে সহ সবাইকে সত্য বলা এবং সততার সাথে চলার ক্ষমতা প্রদান করেন। আমিন
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন