শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

গুলশানে জঙ্গি হামলা হাসনাত করিমকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনায় আটক হওয়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক প্রকৌশলী হাসনাত করিমকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানা উচ্ছেদে পরিচালিত অভিযান সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হাসনাত করিমকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কোনো কিছুই নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিশ্চিত হলে সবকিছু জানানো হবে।
গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলাকারীদের সঙ্গে কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গিদের সম্পর্ক আছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিদের পোশাক দেখে মনে হয়েছে গুলশানের হামলার সঙ্গে তাদের নিহত জঙ্গিদের সম্পর্ক থাকতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, হলি আর্টিজান, শোলাকিয়া ও কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গিরা মাদকাসক্ত হয়ে থাকতে পারে। তবে পরীক্ষার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, ১ জুলাই রাতে গুলশান-২-এর ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে ২ পুলিশ সদস্য, ১৭ বিদেশি নাগরিক ও তিন বাংলাদেশি নিহত হন। পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে ছয় জঙ্গিও নিহত হয় বলে পরে সেনা সদরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। অভিযানে জীবিত উদ্ধার করা হয় তিন বিদেশি নাগরিকসহ ১৩ জিম্মিকে। আটক করা হয় এক সন্দেহভাজন জঙ্গিকে। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে হাসনাত সপরিবারে ওই রেস্টুরেন্টে ছিলেন। গুলশানের হলি আর্টিজানে ১ জুলাইয়ের জঙ্গি হামলায় ৫ জঙ্গি, ২ পুলিশ, এক সন্দেহভাজন ও বিদেশি নাগরিকসহ ২৮ জন নিহত হন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শনিবার (২ জুলাই) সকালে যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ তাকে হলি আর্টিজান থেকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানের আগে-পরে রেস্টুরেন্ট ও আশপাশের এলাকা থেকে হাসনাত করিমসহ যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তাদের প্রায় সবাইকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অনেককে ছেড়ে দেয়া হলেও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক প্রকৌশলী হাসনাত করিমকে গোয়েন্দা হেফাজতে রাখা হয়। এরপর হাসনাত করিমের বাসায় তল্লাশি চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। ৩ জুলাই মধ্যরাতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তার বনানীর বাসায় তল্লাশি চালায়। সেখান থেকে তার ব্যবহৃত ল্যাপটপটি জব্দ করে বলে জানায় গোয়েন্দা সূত্র। তবে গত ৭ জুলাই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হাসনাত তাদের হেফাজতে নেই। তবে হাসনাত ও অপর একজনের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা বাড়ি ফেরেননি। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে হাসনাত করিম কোথায়, কীভাবে আছেন তা জানানোর আহ্বান জানায়।
নর্থ সাউথের শিক্ষকসহ ৩ জন কারাগারে
এদিকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গিয়াস উদ্দীন আহসান, তার ফ্ল্যাটের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে আলম চৌধুরীকে রিমান্ড শেষে গতকাল মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকার মহানগর হাকিম নূর নাহার ইয়াসমিন এ আদেশ দেন। গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার সঙ্গে জড়িত জঙ্গিদের বাসা ভাড়া দেয়ার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল বিকেলে এ তিনজনকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নতুন করে রিমান্ড আবেদন করেননি। বলেন, রিমান্ডে আসামিদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তাই তাদের এখন কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন। তবে এ সময় আসামিদের জামিনের আবেদন করা হলেও আদালত তা বাতিল করে দেন। একই অভিযোগে শেওড়াপাড়া থেকে গ্রেফতার হন সাবেক শিক্ষক নুরুল ইসলাম। রিমান্ডের চতুর্থ দিনে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে আগেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগের তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে দুই বাড়িওয়ালাই জেনেশুনে জঙ্গিদের বাসা ভাড়া দেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন