অভ্যুত্থান ব্যর্থ করেও রাস্তা ছাড়েননি তুর্কিরা
ইনকিলাব ডেস্ক : ১৫ জুলাই রাত। নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয় সেনাবাহিনীর একাংশ। প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়িপ এরদোগান অভ্যুত্থান ঠেকাতে জনগণকে রাস্তায় নামার অনুরোধ জানান। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে অভ্যুত্থান চেষ্টাকারী সেনাদের ধরাশয়ী করে ফেলে সাহসী তুর্কিরা। রাস্তায় শুয়ে পড়ে ট্যাংক আটকে দেয়, সশস্ত্র সেনাদের অস্ত্র কেড়ে নেয় তারা। তবে অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়ার পর ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও রাস্তা ছাড়েননি তুর্কিরা। তাদের আশঙ্কা ফের অভ্যুত্থান চেষ্টা হতে পারে। তাই নির্বাচিত সরকার রক্ষায় তারা রাস্তা দখল করে রেখেছেন। কীভাবে এরদোগানকে সমর্থন জানাচ্ছেন তুর্কিরা, কী ভাবছেন তারা? তুর্কিরা প্রতি রাতে গাড়ি চালিয়ে আংকারার ‘ডেমোক্রেসি ওয়াচ’ র্যালিতে হাজির হন। র্যালিতে অনেকের মতো হাজির ছিলেন ২১ বছর বয়সী জয়নিপ। তিনি বলেন, এরদোগান যতদিন চাইবেন ততদিন আমি তার প্রতি সমর্থন জানানো অব্যাহত রাখব। তিনি আমাদের কমান্ডার ইন চিফ। ৩১ বছর বয়সী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাদিত বলেন, যদি দরকার হয় তাহলে কাজ থেকে ছুটি নিয়ে হলেও র্যালিতে থাকব। তার মতে, তুরস্কের মতো একটি উদীয়মান রাষ্ট্র শুধু এরদোগানের পক্ষেই চালানো সম্ভব। যখন জানতে চাওয়া হয় কেন তিনি এরদোয়ানের সমর্থক, তখন ২১ বছর বয়সী পাবলিক ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী কামেল কায়া জানান, এরদোগানের একেপি পার্টি তুরস্কের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিসেবার উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। তিনি বলেন, এরদোগান ক্ষমতায় আসার আগে হাসপাতালগুলোর খুব করুণ দশা ছিল। তিনি সেগুলোর সংস্কার এবং সামগ্রিক অবস্থা ভালো করেছেন। ২২ বছর বয়সী ইসমাইল জানান, তিনি এরদোগানকে সমর্থন দিচ্ছেন কেননা তিনি তুরস্কের সরকারকে দেশটির সমাজের ইসলামিক শেকড়ের কাছাকাছি নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে কোনো সংবিধান চাই না, তবে আমরা এমন একটি চাই যেখানে ইসলামের জন্য আরো জায়গা থাকবে। র্যালিতে আগতদের বিনামূল্যে খাবার, পানি এবং পরিবহন সেবা দেয়া হয়, জানান তুরস্কের কুর্দিপন্থি এইচডিপি পার্টির চেয়ার সেলাহাতিন দিমিত্রাস। তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এরদোগানের সমর্থকদের পানি এবং খাবার দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। আর দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সেনাবাহিনীর দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমার লোকেরা প্রতিবাদ করে তখন তাদের দিকে জলকামান ছোড়া হয়। তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার মানুষকে আটক, গ্রেফতার অথবা চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এখানকার মানুষ বিশ্বাস করে যে, তারা ন্যায়বিচার পাবে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনাকে অগ্রাহ্য করে ৩৪ বছর বয়সী শাহিন বলেন, ইউরোপ আমাদের সমাজ নিয়ে শঙ্কিত। কেননা তারা জানে, আমরা শিগগিরই বিশ্ব শক্তিতে পরিণত হব। আর এ জন্যই তারা আমাদের সমালোচনা করে। সূত্র : ডয়েচে ভেলে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন