সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে জঙ্গিরা তৎপরতা চালাচ্ছে

প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কিছু পথভ্রষ্ট শিক্ষক জড়িত : একটি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সতর্কতা শোনেনি : শিক্ষামন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার : জঙ্গিবাদের সাথে পথভ্রষ্ট কিছু শিক্ষক জড়িত বলে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, আমরা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেক আগেই সতর্ক করেছিলাম, কিন্তু তারা শোনেনি। ওখানকার এক শিক্ষক জড়িত। বর্তমানে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের সাথে একশ্রেণীর শিক্ষক জড়িত। সন্ত্রাসীরা বিদেশীদের মেরে বহির্বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেছে। মূলত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে তারা এ ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে। সন্ত্রাস-জঙ্গি তৎপরতা রোধে ও সমাজ স্থিতিশীল রাখতে আলেম-ওলামা, ঈমাম-মোয়াজ্জিনরা সমাজের নেতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কেবল আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সমাজের সর্বস্তরে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি। আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখগণ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ওয়াজ-নসিয়ত ও বক্তৃতার মাধ্যমে শান্তির ধর্ম ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে পারেন। গতকাল (বুধবার) কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ‘সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে আলেমদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ শিক্ষা পরিবারের। আমাদের এই পরিবার এখন সব থেকে বেশি বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। এই ক্ষেত্রে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে জঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব না। শিক্ষার্থীদের দেখে রাখার
দায়িত্ব অভিভাবকসহ সমাজের সবার। সবাই যদি সচেতন হয় তাহলে কারো সন্তানই আর বিপথগামী হবে না। তাই জঙ্গিবাদ বন্ধ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক তৈরি করতে হবে, যাতে কোনো বিপদ হলেই শিক্ষার্থী শিক্ষকের নিকটে ছুটে যেতে পারে।
যে সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কুপথে পরিচালিত করতে চায় তাদের চিহ্নিত করে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি বলেন, বারবার আপনাদের বলা হয়েছে। আপনারা শোনেননি। আজকে আপনাদের কারণেই আমাদের সন্তান বিপথগামী। অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকারের সময়ে মাদরাসা শিক্ষার নানা উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, সরকার মাদরাসা শিক্ষায় কোরআন-হাদীসসহ ধর্মীয় বিষয়সমূহের পাশাপাশি আধুনিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তির বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করেছে। এতে মাদরাসার ডিগ্রিধারীরাও ডাক্তার, প্রকৌশলী হওয়ার পাশাপাশি বিসিএস অফিসারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ পাচ্ছেন।
শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, বাংলাদেশে একটি অতিথিপরায়ণ দেশে। আমাদের শান্তির দেশে কোনো অশান্তি ছিল না। কিন্তু কিছু বিপথগামী মানুষ জঙ্গিবাদের মাধ্যমে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাকর ঘটনা। বিদেশীরাও এই জঙ্গিবাদ দমন করেতে পারছে না। কিন্তু আমরা সবাই একসাথে চেষ্টা করলে আামদের দেশে থেকে তাদের প্রতিহত করতে পারব। তিনি আরো বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা ও প্রতিবেশীরা কে কী করছে, তা যদি সন্দেহজনক হয় তাহলে প্রশাসনকে জানানো উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি করার পর আমাদের অনেক দায়িত্ব আছে। কারণ ২০-২৫ বছরের শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে বেশি জড়িত। এজন্য শিক্ষকদের ভালো লেকচার দিতে হবে। তাদের টিউটোরিয়াল করে খোঁজ-খবর নিতে হবে। যদি তারা ক্লাসে না আসে তাহলে অভিভাবকদের জানাতে হবে। তিনি আরো বলেন, এখন মানুষের মাদরাসা শিক্ষার প্রতি ধারনা পরিবর্তন হয়েছে। মাদরাসায় কোনো জঙ্গিবাদী কাজ হয় না, এ ধরনের ধারণা মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ মাদরাসা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর একেএম ছায়েফ উল্লা বলেন, শিক্ষা সমাজে জঙ্গিবাদে উৎসাহিত করেন না বরং নিরুৎসাহিত করে। জঙ্গিবাদ দমনে প্রতিরোধ ও প্রতিহতমূলক কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী বলেন, বাংলাদেশে যে জঙ্গিবাদ হচ্ছে তা আমরা প্রতিহত করব। মাদরাসা শিক্ষায় কোনো জঙ্গিবাদ নেই এটা প্রমাণিত। বাংলাদেশে আমরা যে আলেম ও ইমাম আছি, সবাই যদি সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করি তাহলে এই দেশে কোনো জঙ্গিবাদ থাকবে না। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে প্রতিটি থানায় একটি করে স্কুল-কলেজ জাতীয়করণ করছে সরকার। আমরা আমাদের অধিকার থেকে বলছি, মাদরাসাও জাতীয়করণ করতে হবে।
ইসলামী আরবি বিশ্বদ্যিালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল মান্নান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএস মাহমুদ, মো. হেলাল উদ্দিন, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.বিল্লাল হোসেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
আল আমিন ২৮ জুলাই, ২০১৬, ১১:৪৮ এএম says : 0
যারা জঙ্গিবাদের পক্ষে অবস্থান নিবে তারা দেশ, জাতি ও ইসলামের শত্রু।
Total Reply(0)
আনোয়ার হোসেন ২৮ জুলাই, ২০১৬, ১১:৫১ এএম says : 0
সন্ত্রাস-জঙ্গি তৎপরতা রোধে ও সমাজ স্থিতিশীল রাখতে আলেম-ওলামা, ঈমাম-মোয়াজ্জিনরা সর্বদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং করবে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন