অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এমডিজির হাত ধরেই এসেছে এসডিজি। বাংলাদেশ এমডিজিও সবার আগে বেশ ভালোভাবে অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রত্যেক সক্ষম মানুষকে সামাজিক কর্মকা-ে না আনতে পারলে আমাদের জীবন বৃথা হয়ে যাবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে পারবো বলে আশা করছি। যাদের জন্য এ লক্ষ্যমাত্রা তাদের যদি অর্ন্তভুক্ত করতে না পারি তাহলে পিছিয়ে থাকবো।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১৬ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের দু’টি সমস্যা আছে। একটি অভ্যন্তরীণ, আরেকটি বৈশ্বিক। আমি মনে করি এটি সামগ্রিক বিষয় দ্রুতই বন্ধ হবে।
তিনি বলেন টিআর, কাবিখার ৫০ শতাংশ চলে যায় মূল কাজের বাইরে। এজন্য আমরা বলেছি একজন একটির বেশি প্রকল্প পরিচালক যাতে না হতে পারেন।
তিনি বলেন, এসডিজি হলো ভবিষ্যত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংক্রান্ত একগুচ্ছ লক্ষ্যমাত্রা। জাতিসংঘ লক্ষ্যগুলো প্রণয়ন করেছে এবং ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা’ হিসেবে সেগুলোকে প্রচার করেছে। এর মেয়াদ ২০১৫ থেকে ২০৩০ সাল। এতে মোট ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা ও ১৬৯টি সুনিদিষ্ট লক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যুব সমাজকে এ কর্মকা-ে অর্ন্তভুক্ত করতে হলে তাদের মন জয় করতে হবে। সবাইকে শিক্ষার আওতায় আনতে হবে। এক সময় মাত্র ৪০ শতাংশ ছেলেমেয়ে স্কুলে যেতো, এখন ৯০ শতাংশ যায়।
তিনি বলেন, শিক্ষার মান যথাযথ করতে ও স্বপ্ন দেখাতে হবে। আজকের শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে বড় হলে দেশ উপকৃত হবে। ভালো কিছু করতে পারবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এমডিজির ৮টি লক্ষ্যের সফল বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ৮টি পুরস্কার পেয়েছে। অনুরূপভাবে বাংলাদেশ এসডিজির ১৭টি লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ১৭টি পুরস্কার পাবে বলে মন্ত্রী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি অধিকতর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, গত ৭ বছর আগেও দেশে কারিগরি শিক্ষার হার ছিল শতকরা একভাগ। বর্তমানে তা ১১ ভাগে উন্নীত হয়েছে এবং ২০২১ সালের মধ্যে তা ২০ ভাগে উন্নীত হবে।
তিনি বলেন দেশে বর্তমানে ১০০টি ইজিজেড তৈরী হচ্ছে পাশাপাশি বর্ধিত বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে মাতারবাড়ী, রামপাল, পায়রা এবং রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ অনেকগুলো বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। গ্যাসের চাহিদা মেটাতে এলএনজি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, দেশে ২৯ মিলিয়ন (২ কোটি ৯০ লাখ) বেকার রয়েছে। এদের কাজের সুযোগ করতে মূল সমস্যা গ্যাস ও জ্বালানি। যুব সমাজকে উৎসাহ দিতে হবে। মোটিভেটেড করতে না পারলে যুব সমাজ বিপথে চলে যাবে। কর্মমুখী করার জন্য ভালোবাসা দিতে হবে। দেশের প্রতি মায়া, মমতা ও কর্তব্যবোধ সর্ম্পকে বোঝাতে পারলে যুব সমাজ সুপথে ফিরে আসবে।
তিনি বলেন নির্মাণাধীন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ চালু হওয়ার পর দেশে শিল্পায়ন বাড়বে, ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। পৃথিবীতে প্রত্যেক জাতির এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে। আমাদের এগিয়ে যাওয়াার সুযোগ এসেছে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা এগিয়ে যাবই ।
সভায় ইমেরিটাস প্রফেসর আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং সিপিডি’র সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, জাতীয় মহিলা পরিষদের নেত্রী ড. মালেকা বানু, সাংবাদিক সোহরাব হোসেন, শিক্ষাবীদ শারমীন মোর্শেদ, ওমেন চেম্বার এন্ড কমার্স সভাপতি সেলিমা আহমেদ প্রমুখ। সিপিডি গবেষণ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থান করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন