নেপাল সরকার অভিযোগ করেছে, ভারত তার সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করেছে। তার সরকারের পতন ঘটাতে একের পর এক বৈঠক করছে দিল্লি। তার অভিযোগ, কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হোটেলেও বৈঠক হচ্ছে যেগুলো নেপালে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হচ্ছে।
রোববার স্বয়ং সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি অভিযোগ করেছেন, দেশের নতুন মানচিত্রে লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরা অন্তর্ভুক্ত করায় তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করছে ভারত। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
গতকাল রোববার কাঠমান্ডুতে প্রয়াত কমিউনিস্ট নেতা মদন ভাণ্ডারীর স্মরণসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওলি বলেন, দিল্লি থেকে খবর এসেছে এই ব্যাপারে। ভারতে যে বৈঠকগুলি হচ্ছে নেপালের পরিবর্তিত মানচিত্র নিয়ে সেগুলি আসলে আমাদের সরকার পতনের চক্রান্তের বৈঠক।
গত কয়েকদিন ধরেই নেপাল সরকারের পরিবর্তিত মানচিত্র নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। উত্তরাখন্ডের লিম্পিয়াধুরা-কালাপানি-লিপুলেখ অঞ্চলটি পরিবর্তিত মানচিত্রে নেপালের অংশ হয়ে গেছে, যেটি নিয়ে ক্ষোভ এবং নিন্দা জানিয়েছে দিল্লি। এটি নেপালের লোকসভায় পাশ হয়ে গেছে এবং এই মর্মে ওঠা বিল সই করেছেন নেপালের প্রেসিডেন্ট দেবী ভান্ডারি।
তবে হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় ওলি প্রশাসনের বিরুদ্ধে নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির অন্দরেই অসন্তোষ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। এ নিয়ে বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী ওলি ভারতের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে সংসদের অনুমোদন নেওয়ার পর থেকেই আমাকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে নয়াদিল্লিতে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দেখতে পাচ্ছি কাঠমান্ডুর হোটেলে দফায় দফায় বৈঠক চলেছে। আর এটা বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, কীভাবে এসব লোকজন আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তৎপরতা চালাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে কে কত তাড়াতাড়ি গদি থেকে সরাতে পারবেন, তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে। বলা হচ্ছে, এমন অপরাধ যে করে তাকে রাখা যায় না। মানচিত্র ছাপানোও এখন অপরাধ।’ তবে নেপালি প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যে সম্পর্কে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি ভারত।
তবে নেপালের দাবি করা নতুন মানচিত্রে ভারতের বেশ কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত করার কারণে কাঠমান্ডুর এই উদ্যোগ ‘সম্পত্তি বাড়ানোর কৃত্রিম প্রচেষ্টা’ বলে আগেই মন্তব্য করেছে নয়াদিল্লি।
তবে প্রধানমন্ত্রী অলি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, নিজের জমি ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়ে নেপাল কোনও ভুল করেনি।
২০১৬ সালে চীনের সাথে পরিবহন ও ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ‘এখন নতুন মানচিত্র পার্লামেন্ট পাস হওয়ার পর তারা একই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নেপালের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লোভ তার ছিল না। কিন্তু দেশের স্বার্থেই তিনি ফের এই দায়িত্বে এসেছেন। এখন তিনি যদি এই মুহূর্তে পদত্যাগ করেন তবে এটি একটি ভুল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে এবং নেপালের পক্ষে কথা বলার জন্য যে কোনও প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে বাধ্য হবেন।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন