রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

নতুন মহামারির আশঙ্কায় বিশ্ব

দ্য সান | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্বকে আরো এক নতুন মহামারির সম্ভাবনার দুঃসংবাদ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চীনে নতুন এক ধরনের সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের খোঁজ পেয়েছেন তারা। নতুন ভাইরাসটির মধ্যে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
জার্নালে বলা হয়েছে, চীনের গবেষকরা একটি নতুন ধরনের সোয়াইন ফ্লু আবিষ্কার করেছেন যা নতুন আরেকটি মহামারীর সূচনা করতে পারে। জি৪ ইএ এইচ১এন১ নামক নতুন এ ভাইরাস জিনগতভাবে এইচ১এন১ স্ট্রেনেরই বিবর্তিত রূপ। ২০০৯ সালে এই এইচ১এন১ ভাইরাস সোয়াইন ফ্লু নামে বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেসের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শূকর ভাইরাসের মূল মধ্যবর্তী বাহক বা সম্মিলক যা বন্যপ্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণের ছড়িয়ে দিতে পারে। চীনের শূকরগুলির মধ্যে যে নতুন ধরনের সোয়াইন ফ্লু পাওয়া গেছে, তা ভয়ঙ্কর মহামারির রূপ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১০টি প্রদেশের কসাইখানাগুলোয় এবং একটি পশুচিকিৎসার হাসপাতাল থেকে প্রায় ৩০ হাজার শূকরের লালারস সংগ্রহ করেন বিজ্ঞানীরা। এখান থেকে ১শ’ ৭৯টি সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের সন্ধান পান তারা - যার সিংহভাগই নতুন ধরনের। ২০১৬ সাল থেকে নতুন ধরনের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে শূকর। কিন্তু জি৪ এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। এটি মানুষের শরীরে মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করে এবং অত্যন্ত সংক্রামক। চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিজ্ঞানী এবং চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের তরফে একথা জানানো হয়েছে, মানুষকে সংক্রমিত করার জন্য ভাইরাসটি অভিযোজিত হতে পারে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত বৈশিষ্ট্য রয়েছে ভাইরাসটির। মানব কোষে প্রতিলিপি তৈরি করতে সক্ষম এটি এবং মানুষের শ্বাসযন্ত্রের মধ্যে বেড়ে উঠতে এবং বিস্তার ঘটাতে পারে।

গবেষকেরা প্রমাণ দেখতে পেয়েছেন যে, এ ভাইরাসটি সম্প্রতি সেইসব মানুষকে আক্রান্ত করা শুরু করেছে যারা চীনের শূকর পালন শিল্প এবং কসাইখানাগুলোর সাথে কাজ করছেন। বর্তমানের ফ্লু ভ্যাকসিন ব্যবহার করে নতুন ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। গবেষণা অনুসারে, চীনে শূকরের মাংস বিক্রেতাদের ১০.৪ শতাংশ ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এমনকি ৪.৪ শতাংশ সাধারণ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রমণ। তাই এই পরিস্থিতিতে গবেষকরা আশঙ্কা করছেন যে, এখনই যদি এই সংক্রমণের দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া যায় তাহলে এটিও ভবিষ্যতে বড় মহামারির আকার ধারণ করবে। তারা প্রতিবেদনে বলেছেন, ‘এসমস্ত প্রমাণ ইঙ্গিত দেয় যে, শূকরের খামারগুলোতে জি৪ ইএ এইচ১এন১ ভাইরাস ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ ঘটাাচ্ছে এবং তা অবশ্যম্ভাবীভাবে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়বে।’

ভাইরাসটি নিয়ে গবেষণা করা যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যপক কিন-চৌ চাং এবং তার সহকর্মীরা বলছেন, এর ওপর নজর রাখার প্রয়োজন রয়েছে। চ্যাং বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা করোনাভাইরাস নিয়ে ব্যস্ত এবং সেটাই ঠিক। তবে আমাদের অবশ্যই সম্ভাব্য বিপজ্জনক নতুন ভাইরাসগুলোর থেকে দৃষ্টি সরানো যাবে না।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Apu Roy ১ জুলাই, ২০২০, ১:৫৩ এএম says : 0
এই দেশটার নাম চীন না হয়ে ভাইরাস দেশ হওয়া দরকার ছিল কারন ভাইরাস দেশে সুধু ভাইরাস সৃষ্টি হয়।
Total Reply(0)
Sanjit Kumar Karmakar ১ জুলাই, ২০২০, ১:৫৩ এএম says : 0
চীনাদের অপ্রচলিত খাদ্যাভাস, তাদের কালচার এর জন্য বহুলাংশে দায়ী।
Total Reply(0)
Al Amin ১ জুলাই, ২০২০, ১:৫৪ এএম says : 0
সকল প্রাণীর মাংস তো আর মানব শরীরের জন্য উপকারী হবে না।গবেষনা করার সময় এসে গেছে ইসলামে যে সকল প্রাণীর মাংস হারাম করা হয়েছে অন্যান্য ধর্মের সম্প্রদায়ের উচিৎ সেগুলোর কি ধরণের শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে এবং সে অনুযায়ী জীবন ধারণ করতে হবে অন্যথায় আর রক্ষা নাই।
Total Reply(0)
Anamul Hoque ১ জুলাই, ২০২০, ১:৫৪ এএম says : 0
ভাইরাস, ভাইরাস আর ভাইরাস জীবনটা অতিষ্ঠ । এই সমস্ত বিজ্ঞানীদের অতিমাত্র উৎসাহ আর গভেষনার কারণে সুপ্ত ঘুমিয়ে থাকা ভাইরাস গুলো জেগে উঠেছে । সময় এমন এসেছে বর্তমান আধুনিক সভ্যতায় মানব কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণে বিজ্ঞান বেশি সফলতা দেখাচ্ছে
Total Reply(0)
Songeb Shil ১ জুলাই, ২০২০, ১:৫৫ এএম says : 0
সব ভাইরাস যদি চিন থেকে উৎপত্তি হয় তাহলে চিনকে সব দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হোক
Total Reply(0)
Md Anwar Taluckder ১ জুলাই, ২০২০, ১:৫৫ এএম says : 0
ভাইরাস গুলো চীনের তৈরী কিনা তা তদন্ত করে দেখা উচিৎ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন