শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভারতের মাস্টার প্ল্যানেই আ’লীগ ক্ষমতায়-রিজভী

প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রামপাল বিদু্যুৎকেন্দ্রবিরোধী মিছিলে পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই নিন্দা জানান।
ভারতের সমর্থনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় বসেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সরকারকে যে অন্য একটি দেশের স্বার্থে মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ক্ষমতায় বসানো হয়েছে, রামপাল বিদু্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশের নির্মম হামলার ঘটনায় সেটি আরো স্পষ্ট হয়ে গেলো।
তিনি বলেন, এই পুলিশি হামলা বর্বরোচিত, পাশবিক, নিষ্ঠুর, মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরকারি বৈরীতার আরেকটি কলঙ্কজনক দৃষ্টান্ত। বিএনপি সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচিতে পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বিএনপি
গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহম্দে বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন ভারত সমর্থিত সরকার দেশপ্রেমের কথা বলেন, মানুষের কল্যাণের কথা বলেন, সেই কথাগুলো যে কত বড় প্রতারণা, তা তাদের আচরণেরই ধরা পড়ে। পৃথিবীর কোনো শাসকই ভিন্ন দেশের স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে নিজ দেশের ক্ষতি করে এমন নজির কেউ দেখাতে পারবে না।
বিএনপির রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদে কোনো কর্মসূচি দেবে কিনা জানতে চাইলে রিজভী বলেন, আমরা রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনেক কর্মসূচি করেছি, প্রতিবাদ করেছি। খুলনা অভিমুখে দলের চেয়ারপার্সন রোড মার্চ করেছেন। দেশবিরোধী যেকোনো কর্মকা-ের বিরুদ্ধে বিএনপি অগ্রদূতের ভুমিকা পালন করবে, ভ্যানগার্ডের ভুমিকা পালন করবে- এ ব্যাপারে আপনারা নিশ্চিত থাকবেন। আমরা জানি ভয়ঙ্কর নিপীড়নের মুখোমুখি হবো। কিন্তু দেশের মাটিতে অন্য শক্তির স্বার্থরক্ষা করার ব্যাপারে আমরা দৃঢ়ভাবে এর প্রতিবাদ করবো।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা পথে পরীবাগের সামনে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী মিছিলের ওপর পুলিশি লাঠিচার্জ, কাঁদুন গ্যাস নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে মিছিলকারীরা গুরুতর আহত হয়।
পুলিশি এই হামলার প্রতিবাদে আজ দেশজুড়ে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদু্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। রাজধানীর পল্টনের মুক্তিভবনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, রামপালে কয়লা পুঁড়িয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করলে আমাদের অতুলনীয় জাতীয় সম্পদ সুন্দরবনের চরম বিপর্যয় ঘটবে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারিয়ে ধুসর মরুভুমিতে পরিণত হবে বাংলাদেশ। এর বিরুদ্ধে দেশের জনগণ তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
এই প্রতিবাদে আর্শীবাদ প্রাপ্ত দেশের স্বার্থে বাঁধা পড়তে পারে, তাই ভোটারবিহীন সরকার রাগান্বিত ও ক্ষুব্ধ হয়ে তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ জাতীয় কমিটির প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশী হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, রামপালে বিদু্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে যারা প্রতিবাদ করতে গিয়ে সরকারি হামলায় নির্যাতিত হচ্ছেন, তারা প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও অকুতভয় বীর সেনানী। এই সরকারের আমলে একদিকে দেশবিরোধী চুক্তি করে দেশের জনগণের সর্বনাশ ডেকে আনা হচ্ছে অন্য দিকে চলছে শুধুই লাশ আর লাশের স্তুপ। এই সরকার কাদের সরকার? এরা হচ্ছে নতজানু সরকার, ভিন্ন একটি শক্তির শুধু পদলেহ করতে গিয়ে, তাদের স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে তারা দেশকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দিতে দ্বিধা করছে না।
জঙ্গিদের জীবিত ধরা হচ্ছে না কেনো প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, আপনাদের আচরণের কারণেই জঙ্গিবাদী অশুভশক্তির উত্থান হচ্ছে। জঙ্গিদের জীবিত ধরা হচ্ছে না কেনো- এটা এখন জাতির প্রশ্ন। কেনো জিজ্ঞাসাবাদ করে জড়িত অন্যদের পাঁকড়াও করা হচ্ছে না? গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন উঠেনি। কল্যানপুরের ঘটনা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে কেনো? আজ হয়ত ক্ষমতার দম্ভে তারা মনে করছে তাদের অপকর্ম কেউ দেখছে না, তাদের জবাবদিহি করতে হয় না। কিন্তু জনগণের কাছে একদিন এগুলোর সব জবাব দিতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ১৯৭৫ সালের পূর্ববর্তী কর্মকা-ের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, জঙ্গিবাদীরা যাকে অনুসরণ করতে পারে, সেই লোক আজকে সরকারের মুখপাত্র। সেই সন্ত্রাস, জঙ্গি এবং গণতন্ত্রের শত্রু হিসেবে তারা (হাসানুল হক ইনুরা) এক সময়ে কাজ করেছে। আজকে ইনুরা জঙ্গিবাদ দমনের নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বক্তব্য রাখেন। আজকে যদি কোনো দানব, আজকে যদি কোনো শৃগাল মুরগীর নিরাপত্তার জন্য আফসোস করে, এটা যেমন উপহাস যোগ্য হবে, আজকে হাসানুল হক ইনু জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, এটাও উপহাসযোগ্য।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় নেতা সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, বেলাল আহমেদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন