একদিকে করোনা মহামারি অন্যদিকে পঙ্গপালের হানা। প্রতিদিনই বাড়ছে গৃহযুদ্ধ কবলিত আফ্রিকার মানুষের দুর্দশা। নিজেদের মধ্যে হানাহানি, দুর্নীতি আর গৃহযুদ্ধ যখন নিঃশেষ করে দিচ্ছে আফ্রিকাকে, তখন প্রকৃতিও ছাড় দিচ্ছে না এই অঞ্চলের দেশগুলোকে। করোনার ভয়ে যেমন মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না তেমনি বিঘিœত হচ্ছে ত্রাণ সহায়তাসহ সব ধরনের সেবাও। এই সময়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে মানুষের ঘরে জমানো খাদ্য। অন্যদিকে ফসলখেকো পঙ্গপালের হানায় বিলীন হচ্ছে হেক্টরের পর হেক্টর ফসলি জমি। তাই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে গোটা আফ্রিকা মহাদেশে। করোনা ভাইরাসের কারণে আফ্রিকা মহাদেশের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ মারাত্মক রকমের দুর্ভিক্ষে পড়তে পারে। আফ্রিকান উন্নয়ন ব্যাংক বা এএফডিবি মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকা মহাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক মানদন্ডের চেয়ে কম আয়ের মধ্যে রয়েছে এবং এ পরিস্থিতি আরো মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। অন্যদিকে, পঙ্গপালে সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে কেনিয়া, ইথিওপিয়া এবং সোমালিয়া। এছাড়াও রয়েছে জিবুতি, ইরিত্রিয়া, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা ও তাঞ্জানিয়া। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য বিষয়ক অধিদপ্তর বলেছে, জুনে পঙ্গপালের প্রকোপ অন্তত ৫০০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আফ্রিকার আড়াই কোটি মানুষ এরইমধ্যে পঙ্গপালের কারণে খাদ্য সংকটে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য অধিদপ্তর (এফএও)। মঙ্গলবার এএফপি জানিয়েছে, ওশেনিয়া অঞ্চলের পরেই আফ্রিকা মহাদেশ হচ্ছে করোনা ভাইরাসের মহামারিতে সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল। এ মহাদেশে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখ মানুষ সংক্রমিত হয়েছে এবং ১১ হাজার ৭০০ মানুষ মারা গেছে। তবে করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য যে লকডাউন দেয়া হয়েছে তাতে আফ্রিকা মহাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং মানুষের কর্মসংস্থান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব ধরনের মানুষের আয় রোজগার কমে গেছে এবং মহাদেশব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাÐ স্থবির হয়ে পড়েছে। বহু দেশের বার্ষিক জিডিপি কমে গেছে। গৃহযুদ্ধ, খরার কারণে এমনিতেই মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন দক্ষিণ সুদানের মানুষ। এবার তাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে পঙ্গপাল। এখানেই থেমে নেই প্রকৃতি। হানা দিয়েছে বিশ্বমহামারি করোনাও। বিশেষ সহায়তা দিতে জাতিসংঘ গেল মাসে বিমান থেকে জরুরি খাদ্যসামগ্রী ফেলে যায় অভুক্ত মানুষের জন্য। এএফপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন