শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মৌসুমেও ভেজাল গুড়

প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রাজশাহী ব্যুরো : শীত মৌসুম মানে পিঠা পায়েসের মৌসুম। নতুন ধানের চালের সাথে চিনি কিংবা গুড়ের মিশ্রনে তৈরি পায়েস দেখে রসনা সংযত করতে পারবেন এমন মানুষ খুব আছে। আর নবান্নতো শুরু হয় পিঠা পায়েস দিয়ে। এসময় যেমন আমন ধান ওঠে তেমনি আসে মাঠে মাঠে আখ হতে রস। যা দিয়ে চিনি আর গুড় হয়। আর এসময় মেলে খেজুর গাছ হতে কলস কলস ভরা রস। এ রস দিয়ে যেমন পায়েস বানানো যায় তেমনি গুড়ও তৈরী হয়।
আল্লাহর কি কুদরত লাঠি ভরা শরবত কিংবা শুকনো কাট কেটে হাড়ি ভরা রসনামে। বল দেখি এগুলোর নাম কি। এমন ধাঁ ধাঁ এখনো গ্রামাঞ্চলে ছেলে মেয়েরা একে অপরের প্রতি ছুঁড়ে দিয়ে মগজ যাচাই করে। যার সহজ উত্তর হলো আখ আর খেজুর গাছ। আর যা দিয়ে তৈরী হয় চিনি আর গুড়। আর দুটোই মেলে শীতকালে। প্রত্যেক মওসুমে আল্লাহর পাকের পক্ষ থেকে নেয়ামত হিসাবে ভিন্ন ভিন্ন ফল ফলারীর মওসুম আসে শীতকালে যেমন আখ খেজুর রসসহ শীতকালীন শাক-সবজি মানুষের প্রয়োজন মেটায়। তেমনি গ্রীস্মকালে প্রচ- খরতাপে ওষ্ঠাগত প্রাণে স্বস্তি প্রশান্তি আনতে আসে রসালো শাসালো ফল আম লিচু তাল বেল তরমুজ জামসহ নানান ফল। যেন প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে মানুষের প্রয়োজনে আসে এসব নেয়ামত। এক শ্রেণির অসৎ মানুষ অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী এসব নেয়ামতকে বিষ করে তুলছে। এখন চারিদিকে চলছে গুড় তৈরির মওসুম। আখ মাড়াই আর খেজুরের রস জাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে গুড়। হাটে বাজারে বিক্রিও হচ্ছে। কিন্তু এই গুড় কতটা মানবদেহের জন্য নিরাপদ। অতিমুনাফার জন্য কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল গুড় তৈরি করছে। চিনি আর গুড়ের মধ্যে কেজি প্রতি পঁচিশ ত্রিশ টাকার ফারাক কাজে লাগাচ্ছে। আর ঝক ঝক আকর্ষণীয় গুড় দেখানোর জন্য ব্যবহার হচ্ছে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। বিক্রেতাদের মন্তব্য সবাই সুন্দর চায়। কিন্তু সব সুন্দর যে সুন্দর নয় সেটা বোঝে ক’জন।
রাজশাহী অঞ্চলের বেশ ক’জন গুড় উৎপাদক জানান আমরা ইচ্ছে না থাকা সত্বেও প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার জন্য ভেজাল গুড় বানাচ্ছি। বিভিন্ন উপাদান মেশাচ্ছি। কারো কারো মতে এগুলো খুব একটা বিষাক্ত নয়। দামের হেরফেরের কারনে আখ কিংবা খেজুর রসের সাথে সাথে চিনি মেশানো হচ্ছে। আর কালোকে ফর্সা করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে হাইড্রোজ, ফিটকারী, ইউরিয়াসহ বিভিন্ন পদার্থ। এতে করে গুড়ের কালো রং ঘিয়ে হয়ে যায়। তবে অনেকে মিলে চিনি তৈরীর পর মোলাসেস বা চিটা গুড় ব্যবহার করছে। যা পশুখাদ্য হিসাবে ব্যবহার হবার কথা।
মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে এসব মালামাল জব্দ আর জেল জরিমানা করলেও থেমে নেই এর উৎপাদন।
ক’জন গুড় উৎপাদককে প্রশ্ন করা হয় আপনি কি এসব গুড় খান। সরাসরি বলেন আমাদের জন্য আল্দাা ভাবে তৈরি করি। শহুরে অনেক পরিচিত জন আসল গুড়ের অর্ডার দিলে তাদের তা দেয়া হয়। চাইলে নিতে পারেন। তবে দাম একটু বেশি পড়বে। শহুরে বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় নতুন গুড়ে ভরা। বেচাকেনা মন্দ নয়। ভেজাল মুক্ত গুড়ও রয়েছে কারো কারো কাছে। বেশি দাম দিলে মেলে গোপনে। প্রতিদিন এ অঞ্চলে উৎপাদিত ট্রাক ট্রাক গুড় যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন হাত বদল হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। খাঁটি মানের গুড় তৈরিতে প্রয়োজন নজরদারী ও সচেতনতা বৃদ্ধির।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন