ক্যাসিনো কারবারি দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রুপন ভ‚ঁইয়ার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে করা চারটি মামলার তদন্ত শেষ করেছে সিআইডি। এক সপ্তাহের মধ্যেই আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে। গতকাল নিজ কার্যালয়ে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ এসব তথ্য জানান। তিনি আরো বলেন, গত ৫ বছরে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন দুই ভাই এনু ও রুপন ভ‚ঁইয়া। আগে থেকেই পারিবারিকভাবে জুয়া পরিচালনা করলেও ক্যাসিনোতে তারা জড়ান ২০১৪ সালে। এরপর তারা গত ৫/৬ বছরে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এসব সম্পদের মধ্যে রয়েছে- জমিসহ ২০টি বাড়ি, ১২০টি ফ্ল্যাট, জমি ২৫ কাঠা। ৯১ টি ব্যাংক একাউন্টে তাদের স্থিতিশীল টাকার পরিমাণ ১৯ কোটি টাকা হলেও লেনদেন করেছেন ২০০ কোটি টাকারও বেশি। এই ক্যাসিনো ভাইয়ের উত্থান মূলত ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সেক্রেটারি জয় গোপালের হাত ধরেই। জয় গোপালকে স¤প্রতি গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ২০০৭ সাল থেকে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ওয়ানটেন খেলা হতো। সেখানে সংক্ষিপ্ত পরিসরে খেলা হতো। এনু-রুপনের উত্থান পারিবারিকভাবে। তাদের বাবা জুয়াড়ি ছিলেন। রাজধানীর সদরঘাটেই ছিল তাদের জুয়ার আড্ডা।
জানা গেছে, এনু-রুপনের ব্যাংক হিসাবে জমা ১৯ কোটি ১১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৪ টাকা। আদালতের আদেশে এসব টাকা জব্দ রয়েছে। পুরান ঢাকার বংশাল, ইংলিশ রোড, নয়াবাজার, মতিঝিল, শান্তিনগর, গুলশান, ধোলাইখাল, নবাবপুর এলাকায় সাতটি বেসরকারি ব্যাংকে এসব টাকা জমা রাখেন ক্যাসিনো কারবারি এই দুই ভাই। ঢাকা ও এর আশাপাশে গড়েছেন জমিসহ ২০টি বাড়ি, ১২৮টি ফ্ল্যাট, জমি ২৫ কাঠা। ৯১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তাদের স্থিতিশীল টাকার পরিমাণ ১৯ কোটি টাকা হলেও লেনদেন করেছেন ২০০ কোটি টাকারও বেশি। তারা যতো সম্পদ গড়েছেন তা সবই ক্যাসিনো থেকে ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যেই।
ডিআইজি ইমতিয়াজ বলেন, ক্যাসিনোর সাথে সংশ্লিষ্টতার তথ্য আসার পর ৯ মাস আগেই আত্মগোপনে যান জয় গোপাল। স¤প্রতি তাকে গ্রেফতার করেছি। আশা করছি জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবো।
তিনি বলেন, গেন্ডারিয়া থানার মামলায় ১৬ জন, সূত্রাপুরের দুটি মামলায় ১৫ ও ১০ জন এবং ওয়ারির মামলায় ১১ জনের বিরুদ্ধে এক সপ্তাহের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দাখিল করবো। এখানে উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক এনু ও রুপন ভ‚ঁইয়াদের পুরান ঢাকার বানিয়ানগরের বাসায় এবং তাদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে সাত কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া থানায় তাদের নামে ছয়টি মামলা হয়। পরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এনু-রুপনের লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। ওই বাড়ি থেকে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়। আর ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজ এবং এক কেজি সোনা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় দুই ভাইয়ের নামে আরও দুটি মামলা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন