স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি আবাসিক ভবনের চারটি ফ্ল্যাটের গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, যেখানে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলের কর্মচারীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আবাসিক ভবনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালানোয় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান। তার নেতৃত্বে গতকাল রোববার ধানমন্ডিতে রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে।
গতকাল বেলা ২টার দিকে ধানমন্ডির ১৪ নম্বর সড়কে ১১ নম্বর বাড়ি ‘এভারগ্রিন শাফিক আশা’ নামের ১৪তলা ভবনে অভিযানে যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই ভবনের তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম ও ত্রয়োদশ তলায় একটি করে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে সেখানে কর্মচারী ও নিরাপত্তা প্রহরীদের থাকার জায়গা, ক্যান্টিন করেছিল ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষ। ওই চার ফ্ল্যাটের বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, প্রায় তিন মাস আগেও রাজউকের অভিযানে এজন্য ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা এবং ফ্ল্যাটগুলো সিলগালা করা হয়েছিল। কিন্তু এসে দেখি তা খুলে ফেলা হয়েছে। এখানে কর্মচারীরা থাকছে, তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। আদেশ অমান্য করায় ফ্ল্যাটের বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছি।
এর আগে অভিযানের শুরুতে ধানমন্ডির ১২/এ নম্বর সড়কের ৮৯/২ নম্বর বাড়িতে ‘ধাবা রেস্তোরাঁয়’ অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাড়ির সামনের অংশে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল রেস্তোরাঁটি। অভিযানে রেস্তোরাঁর সাইনবোর্ডসহ সামনের অংশ গুঁড়িয়ে দিয়ে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
ধানমন্ডির ১০/এ নম্বর সড়কের ৫৪ নম্বর বাড়ির সামনের অংশে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ‘সাদিয়া অ্যান্ড সামিয়া’ রেস্তোরাঁও গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এসময় ওই বাড়ির সামনের অংশে নির্মাণাধীন স্থাপনাও ভেঙে ফেলা হয়।
একই সড়কের ৫০ নম্বর বাড়ির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় চার্টার্ড ইউনিভার্সিটি কলেজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলছে। সেখান থেকে খুব দ্রুত কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। ২০০৭ সাল থেকে ভবনটিতে কাজ চালাচ্ছে তারা।
ওই কলেজের বিপণন ও জনতথ্য পরিচালক সোহেল রানা বলেন, লিখিত অঙ্গীকারনামাটি ভবন মালিক এবং কলেজের মালিকপক্ষের কাছে পৌঁছে দেবেন তারা। আমরা খুব দ্রুত সরে যাবÑ এ মর্মে অঙ্গীকারনামায় সই করেছি। এটা মালিকপক্ষকে পৌঁছে দেবো, যা ব্যবস্থা নেয়ার তারা নেবে।
ধানমন্ডির ১১ নম্বর সড়কের ২৮ নম্বর বাড়ির গ্যারেজে একটি মুদি দোকান এবং কর্মচারীদের থাকার জায়গায় প্রিমিয়ার সুইটসের বিক্রয়কেন্দ্র চলছিল। রাজউকের নোটিশ পেয়ে আগে থেকেই সেগুলো সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছিল।
এদিন অভিযানে অবশিষ্ট অংশও দ্রুত সরিয়ে দেয়ার অঙ্গীকার করেন ভবন মালিক। সেখানে কোনো ভাঙচুর না করলেও দোকান দু’টির গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বাড়ির মালিক আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে নিতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। দেশের পরিস্থিতি এখন আগের মতো নেই। একটি বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে নিতেই হবে, আমরাও মেনে নিয়েছি।
এছাড়া ১১ নম্বর সড়কের ৬৬৭/এ বাড়ির সামনের খালি অংশে বানানো একটি মুদি দোকান গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন