শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ - অলস ৬০০ কোটি টাকা

প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থের অভাবে তামাকবিরোধী কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে না
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : তামাক খাত থেকে স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বাবদ আদায় হওয়া ৬০০ কোটি টাকা অলস পড়ে আছে। গত ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই টাকা আদায় হলেও এ সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় টাকার ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অথচ টাকার অভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ধীন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল তামাকবিরোধী কার্যক্রমই বাস্তবায়ন করতে পারছে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা গড়ে তুলতে তামাক ব্যবহার ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবহার করা দরকার। এ লক্ষ্যে তামাকজাত দ্রব্য হতে আদায় করা ১ ভাগ সারচার্জ ব্যবহারে প্রণীত নীতিমালাটি দ্রুত চূড়ান্ত করা জরুরি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রতিবছর ৩ দশমিক ৪ ভাগ মানুষ দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন করতে পারলে জিডিপিরও উন্নয়ন ঘটবে। বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য প্রতিরোধমূলক খাতে ব্যয় হচ্ছে মাত্র ১৩ ভাগ।
স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে জনস্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে অর্থায়ন জরুরি। স্বাস্থ্য খাতের অর্থায়নে তামাক ছাড়াও অন্য্যান্য অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের ওপরও অধিক কর আরোপ করা যেতে পারে। যা স্বাস্থ্য সেবায় ব্যবহার করা গেলে মানুষ দারিদ্র্যতা থেকে রক্ষা পাবে।
সূত্রমতে, তামাক কোম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে তামাকপণ্যের প্রচার-প্রচারণা চালায়। কিন্তু এর বিপরীতে তামাকবিরোধী কার্যক্রমে অর্থায়ন খুবই সীমিত এবং বিচ্ছিন্ন। তামাকের ভয়াবহতা রুখতে দরকার পর্যাপ্ত ও নিরবচ্ছিন্ন অর্থায়ন। এক্ষেত্রে সারচার্জ আরোপের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকা-ে ব্যয় করা বিশ্বব্যাপী একটি সুপরিচিত কৌশল। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ১১টি দেশে এধরনের সারচার্জ প্রথা চালু আছে। এসব দেশগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ডে ২ শতাংশ, নেপালে প্রতি সিগারেটে ১ পয়সা, ভারতে প্রতি ১০০০ শলাকা বিড়িতে ৫ রুপি, ভিয়েতনামে ১-২ শতাংশ, কাতারে ২ শতাংশ, আইসল্যান্ডে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ, এস্তনিয়ায় ৩.৫ শতাংশ, মঙ্গোলিয়ায় ২ শতাংশ এবং লাওসে প্যাকেট প্রতি ইউএসডি শূন্য দশমিক শূন্য ৩ হারে সারচার্জ আদায় করা হয়।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে তামাকপণ্যের ওপর ১ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করা হয়। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দক্ষিণ- এশীয় স্পীকার সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী সারচার্জের অর্থে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী গ্রহণেরও ঘোষণা দেন। সবশেষ সারচার্জ থেকে প্রাপ্ত অর্থ ব্যয়ের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্দ্যেগে একটি খসড়া নীতি প্রণয়ন করা হয়। খসড়াটির ওপর মতামত চেয়ে সংশ্লিষ্ট ৯টি মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র ৩টি অর্থাৎ কৃষি মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মতামত পাওয়া গেছে। বাকী মন্ত্রণালয়গুলোর মতামতের অভাবে খসড়াটি এখনো চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি ফলে একদিকে অর্থ জমা হলেও তা ব্যয় করা সম্ভব হচ্ছে না অন্যদিকে সারচার্জের অর্থ সঠিকভাবে আদায়ও হচ্ছে না। এ কারণে সরকারের নেয়া প্রশংসনীয় একটি উদ্দ্যোগের সুফল পাচ্ছে না জনগণ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন