সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সরকারের পাওনা শোধে অপারগতা - বন্ধ হচ্ছে সিটিসেল

প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের পাওনা পরিশোধ করতে না পারায় বন্ধ হতে চলছে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল। এই কোম্পানিটির কার্যক্রম যে কোনো সময় বন্ধ করতে পারেন বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ। সেক্ষেত্রে আগামী ১৬ আগস্টের মধ্যে এই অপারেটরের গ্রাহকদের বিকল্প সেবা বা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দেবে বিটিআরসি। ক্রমাগত গ্রাহক কমতে থাকায় বড় ধরনের সঙ্কটে পড়া বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সিডিএমএ মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের কাছে সরকারের পাওনা রয়েছে ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বিটিআরসির হিসেবে, গত জুন মাস শেষ নাগাদ এই অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা মাত্র ৭ লাখ, যা বাংলাদেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক শতাংশেরও কম। বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ গতকাল বলেন, সিটিসেলের কাছে আমাদের পাওনা রয়েছে প্রায় ৪৭৭ কোটি টাকা। বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও তারা এ পাওনা মেটানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
আইন অনুযায়ী পাওনা না দেওয়ায় যে কোনো সময় আমরা সিটিসেল বন্ধ করে দিতে পারি। বিটিআরসি যে কোনো সময় এর তরঙ্গ বাতিল এবং অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সিটিসেলের যে গ্রাহক রয়েছে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে আগামী ১৬ অগাস্টের মধ্যে বিকল্প সেবা বা ব্যবস্থা নিতে। খুব শিগগিরই এ অপারেটরটির কার্যক্রম বন্ধ করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আইন অনুযায়ী যে কোনো সময় আমরা এটি বন্ধ করতে পারি, তবে গ্রাহকদের জন্য তো সময় দিতে হবে। এ বিষয়ে কথা বলতে সিটিসেলের হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স তাসলিম আহমেদের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি, এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি। সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহবুব চৌধুরীও ফোন ধরেননি। বিটিআরসির এক কর্মকর্তা জানান, ২০১২ সালে ৮ দশমিক ৮২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নবায়ন করলেও লাইসেন্স শর্ত অনুযায়ী তরঙ্গ নবায়ন ফির দ্বিতীয় এবং তৃতীয় কিস্তি এখনও পরিশোধ করেনি সিটিসেল। এ খাতে ২২৯ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বিটিআরসির, বার্ষিক লাইসেন্স ফি বাবদ পাওনা ১০ কোটি টাকা। এছাড়া বার্ষিক তরঙ্গ ফি ২৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা, রেভিনিউ শেয়ারিং ২৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল ৮ কোটি ৯২ কোটি টাকা এবং প্রযোজ্য ভ্যাট বাবদ ৩৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা ও বিলম্ব ফি ১৩৫ কোটি টাকা মিলে সর্বমোট ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা পাওনা বিটিআরসির। বিটিআরসি কর্মকর্তা বলেন, বকেয়া রাজস্ব জমা না দেওয়ায় কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার কারণ দর্শানোর নোটিসও দেওয়া হয়েছিল এই অপারেটরকে। গত ৫ বছরে সিটিসেল ১০ লাখের বেশি গ্রাহক হারিয়েছে। ২০১০ সালের শেষের দিকে সিটিসেলের গ্রাহক সংখ্যা ছিল প্রায় ২৩ লাখ। কমতে কমতে তা গত জুন মাসে ৭ লাখে দাঁড়ায়। বিটিআরসির হিসাবে জুন শেষ নাগাদ গ্রাহকের হাতে থাকা মোট মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৩ কোটি ১৩ লাখের বেশি। ১৯৮৯ সালে বিটিআরসি থেকে টেলিযোগাযোগ সেবার লাইসেন্স পায় সিটিসেল বা প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড। বর্তমানে এই কোম্পানির ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক বিএনপি নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান মালিকানাধীন প্যাসিফিক মোটরস। সিটিসেলের সবেচেয়ে বেশি ৪৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক সিংটেল এশিয়া প্যাসেফিক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের হাতে। এছাড়া ফার ইস্ট টেলিকম লিমিটেড ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন