কর্পোরেট ডেস্ক : বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি আরবান ল্যাব ও ডেইলি স্টার-এর যৌথ উদ্যোগে সম্প্রতি ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘শহরের নি¤œ আয়ের মানুষের টেকসই আবাসন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বক্তারা বলেন, নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য বিশেষ করে গার্মেন্ট শিল্পের উদ্যোক্তাদের এ খাতের শ্রমিকদের জন্য স্বল্প খরচে টেকসই আবাসনের ব্যবস্থা করা উচিত। এর মাধ্যমে শ্রমিকদের উৎপাদন যেমন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, তেমনি উদ্যোক্তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।
গোলটেবিল বৈঠক সঞ্চালন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। ‘শহরের নি¤œ আয়ের মানুষের টেকসই আবাসন’-এর ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, নগর ও পরিবেশবিদ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সদস্য স্থপতি ইকবাল হাবিব। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
সূচনা বক্তব্যে ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, শুধু গার্মেন্ট শিল্প নয়, সব খাতে শ্রমজীবী মানুষের উৎপাদনশীলতা যতই বাড়বে, সমাজ ও রাষ্ট্র ততই উন্নত হবে। গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে নি¤œœ আয়ের মানুষের জন্য সরকারের আবাসন ঋণ ভ‚মিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য যতগুলো প্রকল্প ইতোপূর্বে নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে ‘সুবর্ণ প্রাঙ্গণ’ প্রকল্পটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সূর চৌধুরী বলেন, ঢাকার সবচেয়ে বড় সমস্যা বস্তি। এসব বস্তিতে নি¤œ আয়ের মানুষ বিশেষ করে গার্মেন্ট শ্রমিকরা বসবাস করেন। স্বল্প আয়ের এসব মানুষের জন্য সরকারের গৃহঋণ সুবিধা এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে ইতোমধ্যে ঢাকার বস্তিগুলোকে শহরের অদূরে একটি নির্দিষ্ট স্থানে স্থানান্তরের চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে সব নাগরিক সুবিধা সেখানে বিদ্যমান থাকবে।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান জামিল আজহার বলেন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির আরবান ল্যাব ঢাকা শহরের মানুষের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, টেকসই উন্নয়ন, প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন গবেষণার কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ডিজিটাল ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে বেশ কিছু গবেষণার কাজ শেষ করা হয়েছে। কারণ ঢাকা শহর মোট জিডিপির ৩৫ শতাংশ জোগান দিয়ে আসছে। এ জন্য ঢাকা শহরকে গবেষণার প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
মোহাম্মদী গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বল্প সুদের ঋণ সুবিধা নিয়ে মোহাম্মদী গ্রæপ ঢাকার অদূরে গাজীপুরে ১ দশমিক ৭ একর জমির ওপর ‘সুবর্ণ প্রাঙ্গণ’ নামে একটি হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সেখানে নি¤œ আয়ের ১ হাজার ২০০ পরিবারের বাসস্থানের ব্যবস্থা হবে।
তিনি বলেন, এ প্রকল্পে একজন নি¤œ আয়ের মানুষ মাসিক সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা পরিশোধ করে ৮ থেকে ৯ বছর পর একটি ফ্ল্যাটের মালিক হতে পারবেন। এ আবাসনে সকল নাগরিক সুবিধা বিদ্যমান থাকবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্য বক্তারা বলেন, সরকার মানুষের অন্ন ও বস্ত্রের মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সবচেয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা বাসস্থান পূরণে কাজ করে যাচ্ছে। যার অন্যতম দৃষ্টান্ত হলো স্বল্প ঋণ সুদে গৃহঋণ প্রকল্প।
গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর, সিপিডির ড. বিনায়ক সেন, রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্র্স এর সাধারণ সম্পাদক আক্তার মাহমুদ, স্থপতি খালিদ আশরাফ, বিজিএমই এর প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান খান বাবু, শ্রমিক নেতা বাবুল আক্তার প্রমুখ।
এর আগে ‘শহরের নি¤œ আয়ের মানুষের টেকসই আবাসন’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন