চট্টগ্রাম ব্যুরো : শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে নগরীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১১ কোটি টাকা মূল্যের দুটি বিলাসবহুল গাড়ি আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের কর্মকর্তারা। গতকাল (সোমবার) নগরীর মেহেদিবাগ ও অলংকার মোড় থেকে গাড়ি দুটি আটক করা হয়। রেঞ্জরোভার ও পোরসে গাড়ি দুটো কারনেট সুবিধায় আনা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান সাংবাদিকদের জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নগরীর মেহেদিবাগ এলাকা থেকে রেঞ্জ রোভার গাড়িটি আটক করা হয়। গাড়িটির আনুমানিক মূল্য ৫ কোটি টাকা। ২০০২ মডেলের গাড়িটির ইঞ্জিন ৪৬০০ সিসি ক্ষমতাসম্পন্ন। অপরদিকে নগরীর অলংকার মোড়ের এশটি পেট্রোল পাম্প থেকে পোরসে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। ২০০৪ মডেলের গাড়িটির ইঞ্জিন ৪৫০০ সিসি ক্ষমতাসম্পন্ন। গাড়িটির আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি টাকা। গাড়ি দুটো আটকের সময় মালিক এবং প্রতিনিধি কেউই গাড়ির বৈধ রেজিস্ট্রেশন অথবা আমদানির কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। গাড়ি দুটির কোনো ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি। ফলে গাড়িগুলো কখন এসেছিল, কারা এনেছিল সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।
শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মঈনুল খান বলেন, বিদেশি পর্যটক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনা শুল্কে তার একটি গাড়ি এ দেশে আনতে পারেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা ফেরত না নিলে জরিমানাসহ শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। দীর্ঘ সময় পার হলেও শুল্ক না দেয়ায় অভিযান চালিয়ে গাড়ি দুটো আটক করা হয়। এ ঘটনায় পৃথক মামলা দায়ের করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রামে এর আগে আরও বেশ কয়েকটি গাড়ি জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা তদন্ত অধিদপ্তর ও এলিট বাহিনী র্যাব। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে পর্যটন সুবিধার আওতায় আনা কোটি কোটি টাকার বিলাসবহুল গাড়ি এখনও লাপাত্তা। শুল্ক গোয়েন্দার নজরদারিতে প্রায় চারশ’ কোটি টাকার গাড়ির সন্ধান মিলছে না। সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত সাতটি দামি বিলাসবহুল গাড়িসহ সারাদেশে ২২টি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।
১৯৫৪ সালের কাস্টমস কনভেনশনের আওতায় ‘কার্নেট দ্য প্যাসেজ’ নামে আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে ৪৮টি দেশের বাসিন্দারা এক দেশ থেকে অন্য দেশে বেড়াতে গেলে এক বছরের জন্য সাথে বিনা শুল্কে গাড়ি নিতে পারতেন। ১৯৯২ সালে এই আইনের ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন করার পর পর্যটকদের জন্য গাড়িসহ ভ্রমণের সুবিধা আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এতে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসীদের মাঝে এদেশে দামি দামি গাড়ি এনে অবৈধভাবে ব্যবসা ও ব্যবহার বেড়ে যায়।
গাড়ির মালিকরা নির্দিষ্ট সময়ের পর গাড়ি সে দেশে না নিয়ে অবৈধভাবে ভুয়া নম্বর প্লেট লাগিয়ে ব্যবহার করে থাকেন। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের হিসেবে ‘কার্নেট দ্য প্যাসেজ’ আইনের আওতায় এদেশে ৩শ’টি বিলাসবহুল গাড়ি প্রবেশ করে। যার মধ্যে ১৬৯টি গাড়ি অবৈধভাবে রয়ে গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন