রাজধানীর সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতারণার মূল নায়কই হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফয়সাল আল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। ফয়সাল শুধু হাসপাতালের মাধ্যমেই অপকর্ম করেনি, তার মালিকানাধীন হোটেল সুইট ড্রিমেও নানা অপর্কমে নেতৃত্ব দিতেন তিনি। বসাতেন মাদকের আসর। সেখানে চলানো হতো অসামাজিক কাজও। জিজ্ঞাসাবাদে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে এমন তথ্য জানিয়েছেন তিনি। এদিকে, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি গত বুধবার রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে গুলশান থানা পুলিশ। গতকাল গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমডি ফয়সাল আল ইসলাম, সহকারী পরিচালক ডা. আবুল হাসনাত ও স্টোরকিপার শাহরিজ কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এ সময় আবুল হাসনাত ও কবির ফয়সালকেই দায়ি করেছেন। তবে ফয়সাল উল্টো বলছেন, তাদের পরামর্শে প্রতারণা কাজে আগ্রহী হয়েছে তিনি। এভাবে পরস্পরকে দোষারোপ করছেন বলে জানিয়েছে ডিবি সূত্র।
ডিবি গুলশান বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান বলেন, মামলার নথিপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়ার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রিমান্ডে থাকা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল বারবার অসুস্থতার ভান করছেন। নিজেকে তিনি কখনো করোনা রোগী, আবার কখনো হাপানি রোগী বলে দাবি করছেন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ থেকে রক্ষা পেতেই তিনি এমন ভান করছেন। সূত্রমতে, গত রোববার সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আবুল হাসনাত ও স্টোরকিপার শাহরিজ কবিরকে আটক করা হয়। পরদিন সোমবার দিনভর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই দিন মধ্যরাতে হাসপাতালের এমডি ফয়সাল আল ইসলামকে বনানী থেকে আটক করা হয়। এ সময় তিনি নিজেকে করোনা রোগী দাবি করেন। পরে তার নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা করা হয়। পরে পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। এরপর তাকে গুলশান থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ফয়সাল হাসপাতালে রোগীদের সাথে ভয়ঙ্কর প্রতারণা করেছেন। তাই তিনি বারবার রোগী বলে ভান ধরছেন। তবে তার অপকর্মের ধরণ জানার জন্য তাকে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের বাইরেও ফয়সাল যেসব অপর্কম করেছে সেগুলোর ব্যাপারেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গুলশান থানার এসআই মশিউর রহমান। শুনানি শেষে হাসপাতালের এমডি ফয়সাল আল ইসলাম, সহকারী পরিচালক ডা. আবুল হাসনাত ও স্টোরকিপার শাহরিজ কবিরের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডের প্রথম দিন গুলশান থানা পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে ওই দিন রাতেই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে মামলাটি হস্তান্তর করা হয়। তাই গতকাল দিনভর গোয়েন্দা পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন