বিশেষ সংবাদদাতা : জনবলের অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে লালমনিরহাট রেলওয়ে কন্ট্রোল অফিস। বাংলাদেশ রেলওয়ের চারটি বিভাগের মধ্যে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই বিভাগের বেশ কিছু সেকশন কন্ট্রোলের নিয়ন্ত্রণে বাইরে থাকায় দুর্ঘটনার আশংকাও রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের অধীনে ১২টি আন্তঃনগর, ২০টি মেইল, ১০টি লোকাল এবং বেশকিছু মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। জনবলের অভাবে প্রায় ২০টি ট্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে চলমান ৪২টি ট্রেনের ভবিষ্যৎ। রেলওয়ের এই বিভাগটি কাউনিয়া-সান্তাহার-বুড়িমারি-পার্বতীপুর-দিনাজপুর হয়ে পঞ্চগড় পর্যন্ত বিস্তৃত। এসব রুটের ট্রেনগুলোর নিয়ন্ত্রণের জন্য লালমনিরহাট রেলওয়ে কন্ট্রোল অফিসে দুটি বোর্ড আছে। এগুলো হলো, টিসি-১ (কাউনিয়া-সান্তাহার) এবং টিসি-২ (বুড়িমারি-পঞ্চগড়)। এসব বোর্ড থেকেই ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। জানা গেছে, লালমনিরহাট বিভাগীয় কন্ট্রোল অফিসে ট্রেন নিয়ন্ত্রণের জন্য ৮ জন টিএনএল (রেলযান নিয়ন্ত্রক) পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৩ জন। এর মধ্যে আবার একজন পদোন্নতি পেয়েছেন। ডিটিএনএল (বিভাগীয় রেলযান নিয়ন্ত্রক) পদে ৪ জনের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৩ জন। পিএনএল (পাওয়ার কন্ট্রোলার) পদে স্থায়ীভাবে কেউ নেই। সহকারী লোকো-মাস্টারদেরকে দিয়ে পিএনএলের কাজ করানো হয়।
রেলওয়ে সূত্রমতে, প্রতিদিন রাতে টিসি-২ বোর্ডে কোনো জনবল থাকে না। অথচ রাতেও ট্রেন চলাচল করে। সূত্র জানায়, লালমনিরহাট-বুড়িমারি, তিস্তা-রমনা, দিনাজপুর-পঞ্চগড় সেকশনে কন্ট্রোলের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ম্যানুয়াল সিস্টেমে এসব সেকশনে ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে করে যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। লালমনিরহাট বিভাগীর রেল অফিসের কর্মচারিরা জানান, টিএনএল ( রেলযান নিয়ন্ত্রক) পদে মাত্র একজন ডিউটি করেন। একজন মানুষ রাতদিন পরিশ্রম করলে যা হওয়ার তাই হয়। বিশ্রামের সুযোগ না পাওয়ায় তিনি সুস্থমনে কাজ করতে পারেন না।
এসব সমস্যার কথা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানার পরেও কেনো জনবল বাড়াচ্ছে না তা নিয়ে রেল কর্মচারীরা প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ঐতিহ্যবাহী এই বিভাগটি এভাবে অবহেলায় বন্ধ না করে জনবল বাড়ানোর মাধ্যমে একে আবারও চাঙ্গা করা উচিত। তা না হলে সম্ভাবনাময় রেলওয়ের রুটগুলো ক্রমে বিকল হয়ে পড়বে। তাতে যোগাযোগের অসুবিধার পাশাপাশি যাত্রীদের ভোগান্তি ক্রমে বাড়বে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন